কর ফাঁকি উদঘাটনে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরকে এনবিআরের চিঠি

নিজস্ব প্রতিবেদক : করফাঁকি উদ্ঘাটন করতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) দেশের ব্যাংকগুলোর কাছ থেকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা পাচ্ছে না। কর ফাঁকি অনুসন্ধানে করদাতাদের তথ্য চাওয়া হলে কোনও কোনও ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান এনবিআরকে অসম্পূর্ণ ও আংশিক তথ্য দিচ্ছে। এতে কর ফাঁকি উদ্ঘাটন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। বিষয়টি তুলে ধরে গত ১০ ডিসেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবিরের কাছে চিঠি দিয়েছে এনবিআর। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
মিথ্যা কিংবা আংশিক তথ্য দেওয়া শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে। ওই চিঠিতে বলা হয়, রাজস্ব আয় বাড়ানোর স্বার্থে যথাযথ তথ্য দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ করা হয়। একই সঙ্গে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দিতে গভর্নরের হস্তক্ষেপ চেয়েছে এনবিআর।
এ প্রসঙ্গে এনবিআরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, আয়কর অধ্যাদেশ-১৯৮৪-এর ১১৩ ধারা অনুযায়ী, কর ফাঁকি উদ্ঘাটনে করদাতাদের ব্যাংক হিসাবের তথ্য চাওয়া হলে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান অসম্পূর্ণ ও আংশিক তথ্য দিচ্ছে। এতে কর ফাঁকি উদ্ঘাটন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এ কারণে এনবিআরের আয়কর নীতি শাখা থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। নাম প্রকাশ না করে এই কর্মকর্তা বলেন, ‘আইন অনুযায়ী করদাতাদের ব্যাংক হিসাবের তথ্য এনবিআরকে দিতে ব্যাংকগুলো বাধ্য।’
ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহী ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের (এমডি) সংগঠন এবিবির চেয়ারম্যান ও ঢাকা ব্যাংকের এমডি সৈয়দ মাহবুবুর রহমানও মনে করেন, এনবিআর যে কোনও ধরনের তথ্য চাইলে তা দিতে ব্যাংকগুলো বাধ্য। তাদের (এনবিআরের) চাহিদা মতো তথ্য ব্যাংকগুলোর সরবরাহের কথা। তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘তথ্য গোপন করার কোনও ধরনের সুযোগও নেই ব্যাংকগুলোর। তবে কিছু প্রতিষ্ঠান হয়তো সময়মতো তথ্য দিচ্ছে না। এ কারণে বিষয়টি খতিয়ে দেখা দরকার।’
ফজলে কবিরকে লেখা এনবিআরের চিঠিতে বলা হয়েছে, ব্যাংক, লিজিং কোম্পানি ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে করদাতার লেনদেন সংক্রান্ত তথ্য সঠিক আয় নিরূপণ ও কর আরোপের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু এনবিআর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছে, কোনও কোনও ব্যাংক, লিজিং কোম্পানি ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান করদাতার ব্যাংক হিসাব ও লেনদেন সম্পর্কে ভুল তথ্য দিচ্ছে। চিঠিতে ভুল তথ্য দেওয়ার জন্য আয়কর অধ্যাদেশের ১৬৬ এ ধারা অনুযায়ী শাস্তির কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
চিঠিতে এনবিআর আরও উল্লেখ করে, আয়কর অধ্যাদেশ-১৯৮৪-এর ১১৩ ধারা অনুযায়ী, আয়কর কর্তৃপক্ষ করদাতার ব্যাংক হিসাব সংক্রান্ত তথ্য প্রদানের জন্য ব্যাংক, ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানে চিঠি দেওয়া হয়। এসব প্রতিষ্ঠান থেকে প্রাপ্ত লেনদেন সংক্রান্ত তথ্য সঠিক আয় নিরূপণ ও করারোপের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

Share