নোবেলের ভূয়সী প্রশংসায় সৌরভ গাঙ্গুলী

নিজস্ব ডেস্ক প্রতিবেদক :‘তুমি এঁদের সবাইকে চেনো?’ প্রশ্নটা ভারতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক ও বর্তমানে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) সভাপতি সৌরভ গাঙ্গুলীর।

‘অবশ্যই। উনাদের কে না চেনে?’ জবাব দিলেন বাংলাদেশের সংগীতশিল্পী মাইনুল আহসান নোবেল। বললেন, ‘যখন দাদা (সৌরভ গাঙ্গুলী) ক্যাপ্টেন ছিলেন, তখন আমার বয়স তিন বছর। তখন থেকেই আপনাকে চিনি, খেলা দেখি।’

আলো ঝলমলে মঞ্চে কথোপকথনে নোবেলের প্রশংসা করে সৌরভ গাঙ্গুলী বলেন, ‘তুমি শুধু বাংলায় নয়, সারা পৃথিবীতে জনপ্রিয়।’ ক্রিকেটারদের সঙ্গে নোবেলকে পরিচয় করিয়ে দিয়ে সৌরভ গাঙ্গুলী আরও বললেন, ‘নোবেল সত্যিকার রকস্টার।’

গতকাল রোববার রাতে ভারতীয় বাংলা টেলিভিশন চ্যানেল জি বাংলায় প্রচারিত হয় অনুষ্ঠানটি। যেখানে দেখা গেছে, জি বাংলার অনুষ্ঠান ‘দাদাগিরি’র মঞ্চ মাতিয়েছেন বাংলাদেশের তরুণ শিল্পী নোবেল।

গত বছর জি বাংলার সংগীতবিষয়ক জনপ্রিয় রিয়্যালিটি শো ‘সারেগামাপা’য় অংশ নেন বাংলাদেশের মাইনুল আহসান নোবেল। চূড়ান্ত বিজয়ী না হতে পারলেও সাড়া জাগিয়েছিলেন তিনি।

‘সারেগামাপা’ মঞ্চে বারবার আলোচনায় এসেছিলেন নোবেল। গতকাল রোববার তাঁকে দেখা গেল জি বাংলার আরেক জনপ্রিয় অনুষ্ঠান ‘দাদাগিরি’তে। অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেন ভারতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক ও বর্তমানে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি সৌরভ গাঙ্গুলী।

এই পর্বে অংশ নেন ভারতের ক্রিকেট দলের সাবেক সদস্য বীরেন্দর শেবাগ, হরভজন সিং, ভিভিএস লক্ষ্মণ, মোহাম্মদ কাইফ, জহির খান ও বর্তমান সদস্য রবিচন্দ্রন অশ্বিন। তাঁদের নানা পর্বের খেলা ও কথোপকথনের ফাঁকে গান শুনিয়েছেন নোবেল।

নোবেল শুরু করেন জেমসের গাওয়া ‘চাল চালে আপনি ঘর’ গানটি দিয়ে। এরপর তিনি শোনান একই শিল্পীর ‘আলবিদা আলবিদা’ গানটি। শেষে এ আর রাহমানের সংগীত পরিচালনায় রকস্টার ছবির ‘নাদান পারিন্দে ঘার আজা’ গানটি শোনান তিনি। মূল কথা ও সুর ঠিক রেখে নিজের ঢঙে গান দুটি পরিবেশন করেন তিনি।

এ ছাড়া এই অনুষ্ঠানে গান করেন উষা উত্থুপ ও দালের মেহেদি। দালের মেহেদির ‘বাল্লে বাল্লে’ ও ‘দো পাল তো আয়ে’ গান দুটির সঙ্গে ক্রিকেটারদের সঙ্গে নেচে আনন্দ ভাগাভাগি করেন সৌরভ গাঙ্গুলী।

আজ সোমবার দুপুরে যোগাযোগ করা হলে নোবেল জানান, সম্প্রতি এই অনুষ্ঠানের রেকর্ডিং ও স্টেজ শোতে অংশ নিতে কলকাতায় গিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমার জন্য দাদাগিরির এই আয়োজনটা ছিল ভিন্ন রকমের অভিজ্ঞতা। আগে কখনো সৌরভ গাঙ্গুলীকে দেখিনি। তাই মঞ্চে গিয়ে প্রথম যখন দেখি, তখন বিশ্বাসই হচ্ছিল না। মনে হচ্ছিল বড় একটি টিভি পর্দায় তাঁকে দেখছি।’

নোবেল জানালেন, ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি পর্যন্ত সেখানেই থাকবেন। নিজের ব্যান্ডদল নিয়ে কলকাতা, হাওড়া, আসানসোল ও ত্রিপুরার বিভিন্ন স্থানে স্টেজে গান করবেন।

গোপালগঞ্জের ছেলে মাঈনুল আহসান নোবেলের শৈশব-কৈশোর কেটেছে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। লেখাপড়া করেছেন বাংলাদেশ ও ভারতে। মাথায় গানের পোকা ঢোকে কলকাতায়। মাত্র ৬০০ টাকায় পুরোনো সিগনেচার ব্যান্ডের গিটার কিনে তা দিয়েই শুরু করেন সংগীতচর্চা। কলকাতায় মাধ্যমিক পর্যায়ের প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনা শেষ করে ২০১৪ সালে ঢাকায় ফেরেন নোবেল। এভাবে ঢাকা-কলকাতা-ঢাকা করতে করতে নোবেলের সঙ্গে গানের প্রেম পোক্ত হয়ে যায়।

‘সারেগামাপা’ প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে ভারতের কলকাতা আর বাংলাদেশে ব্যাপক পরিচিতি পান নোবেল। সেখানে তিনি প্রিন্স মাহমুদের লেখা ও সুর করা পাঁচটি গান করেন। প্রতিযোগিতার শুরুর দিকে ‘বাবা’র মতো জনপ্রিয় গানের কারণে দ্রুত পরিচিতি পান নোবেল। এরপর প্রিন্স মাহমুদের কথা ও সুরে ‘মা’ গানটি তাঁকে আরও বেশি আলোচনায় নিয়ে আসে।

Share