ফুটপাতে দাঁড়িয়েও বাস চাপায় প্রাণ হারালেন কৃষ্ণা

নিজস্ব বার্তা প্রতিবেদক : রাজধানীর বাংলামোটর মোড়ে ফুটপাতে বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলেন কৃষ্ণা রায় (৫২)। এ সময় হঠাৎ ট্রাস্ট পরিবহণের একটি বাস ফুটপাতে ধেয়ে আসে এবং চালক বাসটি তার বাম পায়ে তুলে দিয়ে পিষে দেয়। এতে ঘটনাস্থলে গুরুতর আহত হন ওই নারী। পরে পথচারী উদ্ধার করে ওই নারীকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ভর্তির পর পঙ্গু হাসপাতালে পাঠান চিকিৎসকরা।

কৃষ্ণা বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) সহকারী ব্যবস্থাপক বলে জানা গেছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে বাংলামোটর মোড়ের পূর্ব পাশে ওভারব্রিজের নিচে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

অন্যদিকে, ওয়ারী থানা এলাকায় গাড়ির ধাক্কায় তাতালু (২৩) নামের এক নারী পরিচ্ছন্ন কর্মী মারা গেছেন। সোমবার রাত ১১ টার দিকে সালাউদ্দিন হাসপাতালের সামনে তার মৃত্যু হয়। বাংলামোটর মোড়ে বাসের চাপায় পা হারানো কৃষ্ণার সহকর্মীরা জানান, মঙ্গলবার দুপুরে তিনি বাংলামোটর মোড়ে পাশে ফেয়ারলী হাউসে বিআইডব্লিটিসি’র প্রধান কার্যালয় থেকে অফিসের কাজে পুরান ঢাকায় যাওয়ার জন্য বের হন। তিনি ওভারব্রিজের নিচে ফুটপাতে দাঁড়িয়ে বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। কিন্তু হঠাৎ ট্রাস্ট পরিবহনের একটি বাস দুপুর ২টার দিকে তার দিকে ধেয়ে আসে এবং তার ওপরে বাসটি তুলে দেন চালক। এতে কৃষ্ণার বাম পায়ের হাঁটু থেকে পুরো অংশটুকু পিষে যায়। পায়ের হাঁটুর নিচ থেকে অনেকটাই বিচ্ছিন্ন হয়ে শুধু চামড়ার সঙ্গে ঝুলে ছিল। পরে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল পরে সেখান থেকে পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ভর্তির চিকিৎসকরা তার পায়ের অপারেশন করেন। কৃষ্ণা এক মেয়ে ও এক ছেলে ও স্বামী রাধে সেনকে নিয়ে রাজধানীর টিকাটুলী এলাকায় বসবাস করেন।

বিআইডব্লিউটিসির চিকিৎসক খন্দকার মাসুম হাসান বলেন, কৃষ্ণাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে তবে তার অবস্থা ভাল না। ঘটনার পরপর বাসটি দ্রুত বেগে শাহবাগের দিকে চলে যায়। পরে পুলিশ শাহবাগ থেকে বাসটি আটক করে। বিকালে কৃষ্ণা রায়কে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে জাতীয় অর্থপেডিক্স ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসকরা তার পায়ে অস্ত্রোপচার শুরু করেন। অস্ত্রোপচার শেষে তার পায়ের অবস্থা সম্পর্কে জানা যাবে। তবে কৃষ্ণা রায়ের অবস্থা গুরুতর।

ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগের (দক্ষিণ) অতিরিক্ত উপকমিশনার মেহেদী হাসান বলেন, ট্রাস্ট পরিবহণের বাসটি ক্যান্টনমেন্ট-শাহবাগ রুটে চলাচল করত। দুর্ঘটনার পরপরই এর চালক ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে গেছেন। তবে বাসটি জব্দ করা হয়েছে।

অন্যদিকে, অজ্ঞাত গাড়ির চাপায় নিহত পরিচ্ছন্ন কর্মী তাতালু যাত্রাবাড়ীর ধলপুরের তেলেগু কলোনির বাসিন্দা। তার বাবার নাম রমনা বলে জানা গেছে। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ বাচ্চু মিয়া বলেন, সালাউদ্দিন হাসপাতালের সামনের রাস্তা দিয়ে বাইসাইকেল চালিয়ে যাওয়ার সময় অজ্ঞাত একটি যানবাহনের ধাক্কায় তিনি গুরুতর আহত হন। পরে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে প্রথমে সালাউদ্দিন হাসপাতাল ও পড়ে রাত দেড়টার দিকে ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ঢামেক হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।

Share