বাংলাদেশে টিকার ট্রায়াল দিতে চায় চীনের সাইনোভ্যাক

নিজস্ব বার্তা প্রতিবেদক : চীনের সাইনোভ্যাক কোম্পানি বাংলাদেশে তাদের আবিষ্কৃত ভ্যাকসিনের ৩য় পর্যায়ের ট্রায়ালের জন্য আবেদন করেছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. আবদুল মান্নান। তিনি বলেছেন, প্রাথমিকভাবে কোম্পানিটি দেশের কভিড ডেডিকেটেড সাতটি হাসপাতালের ৪ হাজার ২০০ স্বাস্থ্যকর্মীর মাঝে এই ট্রায়াল সম্পন্ন করার কথা জানিয়েছে। তবে সরকার এটির পাশাপাশি যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্বিবদ্যালয়সহ অন্যান্য দেশের ভ্যাকসিনের ব্যাপারেও সজাগ রয়েছে।

দুপুরে সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে করোনা ভ্যাকসিন সংক্রান্ত এক সভায় সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

ভ্যাকসিন পেতে বাংলাদেশ সুবিধা পাবে উল্লেখ করে সচিব আরো বলেন, বিল গেইটসের গ্যাভী ফাউন্ডেশন বাংলাদেশকে তালিকাভুক্ত করে রেখেছে। সেপ্টেম্বরে তাদের পরবর্তী বৈঠকে বাংলাদেশের প্রতিনিধির উপস্থিতি চেয়েছে। সুতরাং ভ্যাকসিন আবিষ্কারের পর গ্যাভীর মাধ্যমেও কিছু ভ্যাকসিন দেশে আগেভাগেই আসবে।

চীনের তৈরি করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন পরীক্ষায় সন্তোষজনক ফল দিলে তা বাংলাদেশে প্রয়োগের অনুমোদন দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব আবদুল মান্নান।

স্বাস্থ্য সচিব বলেন, চীনের একটি ওষুধ কোম্পানি তাদের তৈরি করা ভ্যাকসিন তৃতীয় পর্যায়ের পরীক্ষার জন্য বাংলাদেশে আইসিডিডিআর,বির কাছে আবেদন করে। আবেদনপত্রটি আইসিডিডিআর,বির মাধ্যমে স্বাস্থ্য অধিদফতর হয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে এসেছে। আমরা এখন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছি। আমাদের পরীক্ষা-নিরীক্ষায় সন্তোষজনক ফল পাওয়া গেলে দেশের স্বাস্থ্যকর্মীদের ওপর প্রয়োগের জন্য এ ভ্যাকসিনের অনুমোদন দেওয়া হবে।

স্বাস্থ্য সচিব জানান, খোঁজ নিয়ে যানা গেছে চীনের সিনোফার্ম কোম্পানিটি একটি বেসরকারি কোম্পানি। এর সঙ্গে চীনা সরকারের সংশ্লিষ্টতা নেই। এই প্রতিষ্ঠানটির তৈরি ভ্যাকসিন ইতোপূর্বে চীনে প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপের ট্রায়ালে সফল হয়েছে।

উল্লেখ্য, বর্তমান বিশ্বের ৬টি কোম্পানি ট্রায়ালের ৩য় ধাপে রয়েছে। দেশে সময়মতো ট্রায়াল দেওয়া হলে চীনের সাইনোভ্যাক কোম্পানি ভ্যাকসিন দেশের সাধারণ মানুষের দেহে প্রয়োগ করতে অন্তত ৬ মাসের মতো লাগতে পারে বলে সভায় বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তারা জানান। এই ভ্যাকসিন ১৮-৫৯ বছর বয়সের স্বাস্থ্যকর্মীদের মাঝেই প্রথমে দেওয়া হবে। ৩য় ধাপের পর সবার জন্য উন্মুক্ত করা যেতে পারে বলেও বক্তারা অভিমত জানান।

স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. আবদুল মান্নানের সভাপতিত্বে সভায় আরো বক্তব্য রাখেন-ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (বিশ্বস্বাস্থ্য অনুবিভাগ) কাজী জেবুন্নেছা বেগম, অতিরিক্ত সচিব (জনস্বাস্থ্য অনুবিভাগ) মো. মোস্তফা কামাল, রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদি সেব্রিনা ফ্লোরা, আইসিডিডিআরবির প্রতিনিধি ৪ জন সিনিয়র বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের লাইন ডাইরেক্টর ডা. মো. শামসুল হকসহ অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

Share