ব্যাংক লুটকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না কেন

নিজস্ব বার্তা প্রতিবেদক : দেশে খেলাপি ঋণ আদায় না হওয়ায় অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট। আদালত বলেছেন, দেশে বড় বড় রাঘববোয়াল আছেন, যারা ব্যাংকের অর্থ লুট করেছেন, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।

আমরা দেখছি ব্যবস্থা না নিয়ে আরও বেশি করে ঋণ দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। এটা কেন? ঋণখেলাপিদের তালিকা দাখিল না করা এবং খেলাপিমুক্ত থাকার সময়সীমা বৃদ্ধি সংক্রান্ত এক মামলার শুনানিকালে গতকাল মঙ্গলবার বিচারপতি এফআরএম নাজমুল আহসান ও বিচারপতি কেএম কামরুল কাদেরের বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের আইনজীবীর উদ্দেশে আদালত বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে বারবার সুদের হার সিঙ্গেল ডিজিটে নামানোর জন্য নির্দেশ দেওয়া হলেও বেসরকারি ব্যাংকগুলো তা কার্যকর করছে না। ব্যাংকিং খাতে অনিয়ম, দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনা রোধে কমিশন গঠন এবং অর্থপাচারকারী ও ঋণখেলাপিদের তালিকা এক মাসের মধ্যে আদালতে দাখিলের জন্য ১৩ ফেব্রুয়ারি অর্থ সচিব, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরসহ ছয় বিবাদীকে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।

কিন্তু ওই তালিকা দাখিল ও কমিশন গঠন না করে খেলাপিমুক্ত থাকার সময় তিন মাসের পরিবর্তে তা বাড়িয়ে ছয় মাস করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সিদ্ধান্ত নিয়েছে- উল্লেখ করে হাইকোর্টে আবেদন করেন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষে আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। তিনি বলেন, এ ধরনের সময়সীমা বাড়ানোর ফলে ঋণখেলাপিরা পার পেয়ে যাচ্ছেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের আইনজীবী মো. মনিরুজ্জামানের উদ্দেশে এ সময় আদালত বলেন, সিআইবি রিপোর্টে যখন নাম আসছে না তখন ঋণখেলাপিদের অন্য ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার সুযোগ পেয়ে যাচ্ছেন।

ঋণখেলাপিদের তালিকা চেয়েছি সেটা যেন দাখিল করতে না হয়, সে জন্য কি এই সময়সীমা বাড়ানো? মনজিল মোরসেদ বলেন, ঋণখেলাপিদের তালিকা যেন ছোট থাকে সে জন্যই এই পদক্ষেপ। ব্যাংকের আইনজীবী বলেন, এটা সত্য নয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংক সব ব্যাংকের কাছে ঋণখেলাপিদের তালিকা চেয়েছেন।

আদালত বলেন, ৩০ দিনের মধ্যে আমরা কমিশন গঠন করতে বলেছিলাম। সেটার কী অবস্থা? আইনজীবী বলেন, এ আদেশ এখনো পাইনি। আদালত বলেন, এভাবে উচ্চ আদালতের আদেশ লঙ্ঘন করবেন? আমরা যদি কাউকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে রাখি সেটা কি শোভনীয় হবে? আপনি তো আদালতের আদেশ ঠিকভাবে পড়েননি। তা হলে কীভাবে ক্লায়েন্ট ডিফেন্ড করবেন।

এর পরই কমিশন গঠনের বিষয়ে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে ১৫ দিনের মধ্যে এ ব্যাপারে অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ব্যাংকের আইনজীবীকে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। এ সময় রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার এবিএম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার উপস্থিত ছিলেন।

Share