মিরপুরে করোনায় মৃত ব্যক্তির বাড়ি ‘লকডাউন’

নিজস্ব বার্তা প্রতিবেদক : রাজধানীর মিরপুরের টোলারবাগে একটি বাড়ি ঘিরে রেখেছে পুলিশ। রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) নির্দেশনায় পুলিশ ওই বাড়ির সকলকে বাধ্যতামূলক হোম কোয়ারেন্টাইন (এক ঘরে) করেছে।

করোনায় আক্রান্ত ৭৩ বছর বয়সের মৃত ব্যক্তি নিজে কিংবা তার পরিবারের কেউ বিদেশ ফেরত ছিলেন না। তিনি একটি সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক ছিলেন। শনিবার তার মৃত্যুর পর ওই বাড়ির প্রায় ৪০ জন বাসিন্দাকে কোয়ারেন্টাইন করা হয়েছে। পুলিশ বলছে, বাড়িটি ‘লকডাউন’ করা হয়েছে। ওই ভবন ও তার আশপাশে চলাচলও সীমিত করা হয়েছে।

গত মঙ্গলবার কল্যাণপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গিয়েছিলেন ওই ব্যক্তি। তার হৃদযন্ত্রের বিভিন্ন পরীক্ষানিরীক্ষার পরও রোগ ধরা পড়েনি। সেখানে অবস্থার কোনো উন্নতি না হওয়ায় গত ১৭ মার্চ ৫টার দিকে ইবনে সিনা থেকে তাকে ডেল্টা হসপিটালে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। সেখানে তার শ্বাসপ্রশ্বাস নিতে অসুবিধা হওয়ায় তাকে একজন বক্ষব্যাধি চিকিৎসক পরীক্ষা নিরীক্ষা করেন।

ডেল্টা হসপিটালের একজন চিকিৎসক বলেন, এ বিষয়ে আইইডিসিআরের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও তারা নমুনা সংগ্রহ করতে অস্বীকৃতি জানায়। বলা হয়, ওই ব্যক্তি বিদেশ ফেরত নন, তিনি বিদেশ ফেরত কারও সংস্পর্শেও আসেননি। কিটের স্বল্পতা আছে। ওই চিকিৎসক আরও বলেন, রোগী হাসপাতালে ভর্তির পর তার ব্যাপারে সরকারের উচ্চপদস্থ লোকজন খোঁজখবর করেন। তাদের তদবিরেই পরে পরীক্ষা করা হয়। পরে ডেল্টা হসপিটাল নিশ্চিত হয় রোগী করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন।

মৃতের পরিবারের অভিযোগ, তারা ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে রোগী নিয়ে চিকিৎসার জন্য গিয়েছিলেন। কিন্তু সবাই ফেরত দিয়েছেন। করোনা শনাক্ত না করেই সন্দেহ থেকে তারা রোগীর কোনো চিকিৎসা সেবা দেননি।

সংশ্লিষ্টরা বলছে, করোনা শনাক্ত করতে কিট সংকটের কারণে হয়রানির শিকার হচ্ছেন সন্দেহভাজন রোগীরা। আবার কেউ সর্দি ও জ্বর নিয়ে হাসপাতালে গেলে, কোনো হাসপাতাল তাকে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করাচ্ছেন না। বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে এমন রোগী গেলে তাদেরকে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল বা উত্তরা সরকারি কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। এ নিয়ে করোনা রোগী নয়, এমন রোগীরা হয়রানির শিকার হচ্ছেন।

এদিকে, করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন কি না-এমন সন্দেহ থেকে ইটালি ফেরত এক প্রবাসী স্বেচ্ছায় মহাখালীতে আইইডিসিআরে যান। সেখানে তিনি রক্ত পরীক্ষার জন্য নমুনা দেন। আইইডিসিআর তাকে উত্তরা সরকারি কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে পাঠিয়ে দিয়ে কোয়ারেন্টাইনে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়। সন্ধ্যা পর্যন্ত তাকে পরীক্ষার রিপোর্ট জানানো হয়নি।

Share