রাজনৈতিক-সামাজিক প্রভাবে ভূমিহীনদের খাসজমি হাতছাড়া

নিজস্ব বার্তা প্রতিবেদক : দেশে প্রতিবছর গড়ে ২৩ হাজার ৪৩৫টি খানাকে ১৪ হাজার ৭১১ একর খাসজমি প্রদান করা হয়। এই গতিতে চললে শুধু কৃষি খাসজমি বিতরণ করতেই লেগে যাবে ১৪০ বছরের বেশি সময়। ২০১৯ সালের কৃষিশুমারি প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশে মোট ভূমিহীনের সংখ্যা প্রায় ৪০ লাখ ২৫ হাজার। তাদের ৬২ শতক করে খাসজমি বা জলা দেওয়া হলে মোট দরকার হয় ২৪ লাখ ৯৫ হাজার ৫০০ একর। কিন্তু দেশে বর্তমানে এর প্রায় দ্বিগুণ ৪৬ লাখ ৮৪ হাজার একর খাসজমি বা জলা রয়েছে। অথচ প্রায়শই দাবি করা হয়, ভূমিহীনদের বিতরণ করার মতো খাসজমি নেই।

এ অবস্থায় একটি কঠোর ও কার্যকর ‘খাসজমি উদ্ধার ও বণ্টন আইন’ প্রণয়ন করাসহ ন্যায়সঙ্গত অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে জবরদখলকারীর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো এবং সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় তহসিল অফিস, সহকারী কমিশনার (ভূমি), উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং সর্বোপরি আদালত থেকে ন্যায্য অধিকার আদায়ের জন্য কৃষকদের সংগঠিত করা জরুরি। কভিড-১৯ সৃষ্ট জাতীয় দারিদ্র্র্যের ঊর্ধ্বগতি রোধে খাসজমির বিতরণ, খাদ্য নিরাপত্তা, দারিদ্র্য হ্রাস এবং টেকসই কৃষি উন্নয়নের লক্ষ্যে সকল খাসজমি ও জলা অবিলম্বে দেশের দরিদ্র-ভূমিহীন-প্রান্তিক জনসাধারণের মাঝে বণ্টন করতে হবে।

গতকাল মঙ্গলবার “সমকাল-এএলআরডি আয়োজিত ‘কৃষি খাসজমির অবস্থা, খাসজমি বিতরণ নীতিমালা এবং তার বাস্তবায়ন ও প্রভাব” শীর্ষক ভার্চুয়াল সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন।

সমকালের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মুস্তাফিজ শফি সেমিনার সঞ্চালনা করেন। সভাপতিত্ব করেন অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (এএলআরডি) সমন্বয়কারী ও নিজেরা করির চেয়ারপারসন খুশী কবির। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগ ও জাপানিজ স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক এবং হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট রিসার্চ সেন্টার (এইচডিআরসি) অবৈতনিক উপদেষ্টা ড. আবুল বারকাত।

বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অর্থনীতি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. শফিক উজ জামান, অধ্যাপক ড. এম এম আকাশ, রিসার্চ

ইনিশিয়েটিভস বাংলাদেশের (রিইব) নির্বাহী পরিচালক ড. মেঘনা গুহঠাকুরতা, এএলআরডির নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা, দিনাজপুরের কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট সেন্টারের (সিডিএ) নির্বাহী পরিচালক শাহ-ই-মবিন জিন্নাহ, পটুয়াখালী বাউফলের চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য ভূমিহীন নেত্রী আফরোজা খানম, নোয়াখালীর দ্বীপ উন্নয়ন সংস্থার নির্বাহী পরিচালক রফিকুল আলম এবং সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা নারী উন্নয়ন ফোরামের চেয়ারপারসন নিগার সুলতানা কেয়া। স্বাগত বক্তব্য দেন এএলআরডি উপ-নির্বাহী পরিচালক রওশন জাহান মনি।

খুশী কবির বলেন, সরকারের কাছে অধিকাংশ খাসজমির তথ্য নেই। অথচ আমরা মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হচ্ছি। বিভিন্ন ক্ষেত্রে উৎপাদন বাড়াতে চাচ্ছি। এ জন্য প্রথমেই গুরুত্ব দিতে হবে খাসজমির ওপর। ভূমিহীনদের মধ্যে খাসজমি বিতরণ করতে হবে। তিনি আরও বলেন, বণ্টনের সুষ্ঠুতার অভাবে জমিগুলো অনুৎপাদিত খাতে চলে যাচ্ছে। এটা ভূমি বিষয়ক নীতিমালার পরিপন্থি।

সঞ্চালকের সূচনা বক্তব্যে মুস্তাফিজ শফি বলেন, খাসজমি নিয়ে সমস্যা দীর্ঘদিনের। নানারকম রাজনৈতিক-সামাজিক প্রভাব বলয়ের কারণে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ভূমিহীনরা এর বরাদ্দ পাননি। ফলে দারিদ্র্য বিমোচনে খাসজমি কোনো প্রভাব ফেলতে পারেনি। দেশে খাসজমির হালনাগাদ কোনো তথ্যও নেই। আমরা এ ব্যাপারে হালনাগাদ তথ্য চাই। চাই খাসজমি বণ্টনে সুস্পষ্ট নীতিমালা এবং প্রভাব বলয়ের ঊর্ধ্বে উঠে জবাবদিহিতা। তিনি বলেন, আজকের এই ওয়েবিনার একটি ফলোআপ আলোচনা। যতদিন পর্যন্ত না সমাধান আসছে, ততদিন এ আলোচনা চলবে। আমাদের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন সামাজিক শক্তিকে উজ্জীবিত করা।

‘কৃষি খাসজমির অবস্থা, খাসজমি বিতরণ নীতিমালা এবং তার বাস্তবায়ন ও প্রভাব বিষয়ক ফলোআপ গবেষণা সমীক্ষা’ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে আবুল বারকাত বলেন, জমি-জলা গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর সক্ষমতা বাড়ানোর অন্যতম প্রধান উৎস। কৃষিপ্রধান গ্রামবাংলায় জমি এখনও প্রধান সম্পদ এবং চালিকাশক্তি। দেশের মোট আয়তনের প্রায় ১৩ ভাগ খাসজমি ও জলা। সমতা ও ন্যায্যতার যে কোনো মাপকাঠিতে এই জমি ও জলার দাবিদার দেশের দরিদ্র, ভূমিহীন ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠী। দরিদ্র মানুষের মধ্যে খাসজমি ও জলার সুষ্ঠু বণ্টন প্রয়োজন। বর্তমানে কভিড-১৯ সৃষ্ট ক্রমবর্ধমান দারিদ্র্য পরিস্থিতির কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন ঘটাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

তিনি বলেন, চিহ্নিত খাসজমির মধ্যে এ যাবৎ একটি ক্ষুদ্র অংশ দরিদ্রদের মাঝে বণ্টিত হয়েছে, যারা জমি পাওয়া এবং দখলে রাখা সম্পর্কিত বহুমুখী সমস্যায় আক্রান্ত। বেশিরভাগ খাসজমি (চিহ্নিত বা অচিহ্নিত) সমাজের ধনী ও প্রভাবশালীদের অবৈধ দখলে, যারা ক্ষমতা-কাঠামোর অবিচ্ছেদ্য অংশ।

প্রবন্ধে বলা হয়, দেশে অপদখলকৃত খাসজমির পরিমাণ নিয়ে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে যেমন বিতর্ক রয়েছে, তেমনি সরকারি ভিন্ন ভিন্ন উৎসে ভিন্ন ভিন্ন পরিমাণের কথা বলা হয়েছে। সরকারি হিসাবে বলা হচ্ছে, চিহ্নিত ১২ লাখ একর খাস কৃষি জমির ৪৪ শতাংশ গরিব, ভূমিহীন ও দুস্থ জনগণের মধ্যে বণ্টন করা হয়েছে। স্বাধীন গবেষণায় এ তথ্য ভুল প্রমাণিত হয়েছে। আসলে খাস কৃষি জমির ৮৮ শতাংশ ধনী এবং প্রভাবশালীরা অবৈধভাবে দখল করে আছে। অর্থাৎ যাদের জন্য খাসজমি সেই গরিব ও ভূমিহীন জনগণের সত্যিকার অধিকারে আছে মাত্র ১২ শতাংশ। আর বণ্টনকৃত খাস কৃষি জমির সরাসরি সুবিধাভোগীদের কমপক্ষে ২০ শতাংশ আগে থেকেই ভূমি মালিক। ভূমিবিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটি ২০১৬ সালে যেখানে ১৩ লাখ একর খাসজমি অপদখলের উল্লেখ করেছে, সেখানে ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে জাতীয় সংসদে ভূমিমন্ত্রী দাবি করেছেন দেশে অপদখলকৃত খাসজমির পরিমাণ মাত্র ৬২ হাজার একর।

তিনি জানান, ১৯৯৭ সালের খাসজমি বিতরণ নীতিমালায় ব্যাপক প্রচারাভিযানের মাধ্যমে ভূমিহীন জনগোষ্ঠীর কাছে খাসজমির বণ্টনের কার্যক্রম সংক্রান্ত তথ্যাবলি পৌঁছে দেওয়ার কথা থাকলেও বেশিরভাগ ভূমিহীন অভিযোগ করেন, তারা ‘সময়মতো’ এ সংক্রান্ত ‘পর্যাপ্ত’ তথ্যাবলি পাননি। খানা জরিপের উপাত্ত থেকেও দেখা যাচ্ছে, ভূমিহীনদের বেশিরভাগই অনানুষ্ঠানিক সূত্র থেকেই এ সংক্রান্ত তথ্যাবলি পেয়েছেন। স্বাভাবিকভাবেই সে তথ্যাবলি ছিল অসম্পূর্ণ।

এ সময় তিনি খাসজমির ব্যবস্থাপনা এবং বিতরণ, খাসজমি ধরে রাখার ক্ষমতা-অক্ষমতা, খাসজমি গ্রাস এবং উদ্ধার ও বিতরণ সম্ভাবনা, খাসজমির বণ্টনের সঙ্গে সংশ্নিষ্ট খরচাদি, খাসজমির ওপর অধিকার প্রতিষ্ঠায় দরিদ্র মানুষের সংঘবদ্ধ সংগ্রাম, খাসজমির বিতরণ, খাদ্য নিরাপত্তা, দারিদ্র্য হ্রাস এবং টেকসই কৃষি উন্নয়ন, খাসজমির নীতিমালা, পরিবর্তন, সরকারি অগ্রাধিকার এবং বাস্তবায়ন সমস্যা নিয়ে ৩৭ দফা সুপারিশ জানান। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- ভূমিবিষয়ক সংসদীয় কমিটি (২০১১ সালে) যে ৫০ লাখ একর খাসজমির তথ্য দিয়েছিল তা অবিলম্বে চিহ্নিত করে জনগণকে অবহিত করতে হবে। খাসজমি চিহ্নিতকরণের সমস্যা সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্যাদি প্রচারমাধ্যমগুলোয় (রেডিও, টিভি ও বাংলা দৈনিকসহ) প্রকাশ ও প্রচার করা এবং তা তৃণমূল পর্যায়ে ছড়িয়ে দেওয়া। গ্রাম ও ইউনিয়ন উভয় পর্যায়ে খাসজমি চিহ্নিতকরণ কমিটি কার্যকর রাখতে হবে, যেখানে কৃষক সংগঠন, ক্ষেতমজুর, নারী সংগঠন, রাজনৈতিক দল, বেসরকারি সংস্থা, সামাজিক সংগঠনগুলোর প্রতিনিধিদের অন্তর্ভুক্ত করা জরুরি। এসব কমিটিতে স্থানীয় প্রভাবশালীদের প্রভাব হ্রাস ও সরকারি কর্মকর্তাদের দুর্নীতি বন্ধ করার জন্য যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে।

রওশন জাহান মনি বলেন, বাংলাদেশের ৫০ ভাগেরও বেশি মানুষ উৎপাদক। সে ক্ষেত্রে খাসজমি একমাত্র উৎস। এই খাসজমিতে মানুষের প্রবেশাধিকার রয়েছে। শুধু বিতরণে সুষ্ঠুতা প্রয়োজন।

খুশী কবির বলেন, সরকারের কাছে অধিকাংশ খাসজমির তথ্য নেই। অথচ আমরা মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হচ্ছি। বিভিন্ন ক্ষেত্রে উৎপাদন বাড়াতে চাচ্ছি। এ জন্য প্রথমেই গুরুত্ব দিতে হবে খাসজমির ওপর। ভূমিহীনদের মধ্যে খাসজমি বিতরণ করতে হবে। তিনি আরও বলেন, বণ্টনের সুষ্ঠুতার অভাবে জমিগুলো অনুৎপাদিত খাতে চলে যাচ্ছে। যেমন- ক্যান্টনমেন্ট, হাউজিংয়ের ক্ষেত্রে যাচ্ছে, যা ভূমিবিষয়ক নীতিমালার পরিপন্থি।

প্যানেল আলোচনায় অংশ নিয়ে ড. শফিক উজ জামান বলেন, মুক্তিযুদ্ধে আমাদের কৃষকদের অনেক ভূমিকা ছিল। এখনও কৃষি আমাদের অর্থনীতির প্রাণ। শুধু জিডিপি দেখলে কৃষির প্রকৃত অর্থ বোঝা যাবে না। আমাদের অর্থনীতি এখনও কৃষিভিত্তিক। আমাদের ভবিষ্যৎও কৃষিতে নির্ভর করছে। সে অনুযায়ী কৃষিকে আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি না। কৃষিভিত্তিক শিল্পায়নকে অবহেলা করার সুযোগ নেই। ভূমিহীনদের খাসজমি দেওয়া হলেও অনেক জমি থেকে যাবে। সেগুলোকে কৃষির কাজে লাগাতে হবে।

ড. এম এম আকাশ বলেন, খাসজমি বণ্টনের ক্ষেত্রে কিছু প্রক্রিয়া অনুসরণ করা যেতে পারে। বিশেষ করে আবেদনকারীদের যোগ্যতা ও নিয়মানুযায়ী তালিকা করা। তারপর এই জমি ওই আবেদনকারী কীভাবে ব্যবহার করতে চান, সেটি আগে থেকেই নিশ্চিত করতে হবে। ভূমি মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে যে জমির কথা বলা হয়েছে, সেগুলো ম্যাপ আকারে প্রকাশ করা হোক। বর্তমানে এসব জমি কী অবস্থায় কাদের দখলে আছে, সেগুলো উঠে আসুক। খাসজমির ধরনও আলাদা করে তুলে ধরতে হবে।

ড. মেঘনা গুহঠাকুরতা বলেন, ক্যাডোস্ট্রাল সার্ভে ছাড়া খাসজমি সরকারি জমি হতে পারে না। খাসজমি সুবণ্টনের পরিপ্রেক্ষিতে কোন সিস্টেমের দিকে যাব, এটি নিয়ে নানা প্রশ্ন আছে। তৃণমূল পর্যায়ে আন্দোলনের দিকে যেতে হবে কিনা, সেটিও বড় প্রশ্ন।

শামসুল হুদা বলেন, রাঙামাটি, বান্দরবান এবং খাগড়াছড়িতে কোনো খাসজমি থাকতে পারে না। খাসজমির যে সাতটি উৎস রয়েছে, এর কোনোটিই তিন পার্বত্য জেলার জন্য প্রযোজ্য নয়। পার্বত্য চুক্তিতেও খাসজমি নিয়ে কোনো কথা বলা হয়নি। উপকূলীয় এলাকাগুলোতে প্রচুর খাসজমি রয়েছে। কিন্তু সেখানকার হিসাবে অনেক গরমিল রয়েছে। এগুলোর স্পষ্ট জরিপ হয়নি। এটা হলে সরকারের হিসাবের থেকে খাসজমির পরিমাণ আরও অনেক বেড়ে যেত।

আঞ্চলিক পর্যায়ের আলোচনায় শাহ-ই-মবিন জিন্নাহ বলেন, এসব জমি নিয়ে মামলা-মোকদ্দমাসহ নানা অপরাধ কর্মকাণ্ড ঘটে চলছে। পুরো উত্তরাঞ্চলে এ ধরনের অবস্থা বিরাজমান। নিপীড়নের এই স্বরূপ সারাদেশে একই। নীতিমালা কাজ করে না। ঘুষের প্রভাব বেশি। প্রভাবশালীদের দখলে চলে যায় অনেক কিছু। উত্তরাধিকার সূত্রে অনেকে জমিগুলো দখলে রেখে দিয়েছেন। এ বিষয়ে তৃণমূল পর্যায়ে জনসচেতনতা গড়ে তুলতে হবে। আইনি প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।

আফরোজা খানম বলেন, বিভিন্ন সভায় ভূমিহীনদের তালিকা করা হয়; কিন্তু বাস্তবে এর প্রতিফলন দেখা যায় না। মাঝেমধ্যে সরকার উদ্যোগ নিলে তৃণমূল পর্যায়ের প্রকৃত ভূমিহীনদের প্রয়োজনীয় তথ্য সরবরাহ করা হয় ঠিকই; শেষ পর্যন্ত দালালদের দৌরাত্ম্যে প্রকৃত ভূমিহীনরা বঞ্চিত থেকে যায়। বেশিরভাগ সময় ঘুষের কারবারে তারা পেরে ওঠে না।

রফিকুল আলম বলেন, নোয়াখালী জেলায় ২০ বছরে খাসজমি চারগুণ বেড়েছে। ফলে প্রতিদিনই খুনোখুনি, হামলা-মামলা লেগে আছে। এসব সমস্যা সমাধানে স্থানীয় সরকারকে অংশগ্রহণ করতে হবে। তাদের অংশগ্রহণ জোরদার করে বাস্তবভিত্তিক উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। সঠিক নীতিমালা মাঠপর্যায়ে বাস্তবায়ন করতে হবে। বিভিন্ন বাহিনীকে জমি দেওয়া হচ্ছে। রোহিঙ্গারা আসছে। এতে স্থানীয় মানুষ খুবই দুশ্চিন্তায় রয়েছেন।

নিগার সুলতানা কেয়া বলেন, জনপ্রতিনিধি হিসেবে আমরা মাঠে কাজ করি। দেখা যায়, বেশিরভাগ খাসজমিতে চাষাবাদ হয় না। কৃষি বিভাগ থেকে খাসজমি বন্দোবস্ত দেওয়ার সময় কৃষিকাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত লোকজনকেই দেওয়া উচিত। অন্যথায় বন্দোবস্তি নিয়ে জমিগুলো ফেলে রাখা হয়। এতে প্রকৃত কৃষকরাই ক্ষতিগ্রস্ত হন। যাকে-তাকে খাসজমি বন্দোবস্ত দেওয়া বন্ধ করতে হবে।

Share