২৪ ঘণ্টায় সর্বাধিক করোনাক্রান্ত সনাক্ত ১৭৭৩, মৃত্যুও সর্বাধিক ২২ জন

নিজস্ব বার্তা প্রতিবেদক : কোভিড-১৯ মহামারীতে আক্রান্ত ও প্রাণহানি দিন দিন বাড়ছে।দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ২২ জনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে করোনাভাইরাস, যা এখন পর্যন্ত একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড। শুধু তাই নয় একদিনে সর্বোচ্চ সংক্রমণের রেকর্ড হয়েছে।গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ১৭৭৩ জনের দেহে করোনা সংক্রমণ ধরা পড়েছে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনাভাইরাস বিষয়ক নিয়মিত হেলথ বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়। বুলেটিন উপস্থাপন করেন অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (মহাপরিচালকের দায়িত্বপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা।

তিনি জানান, বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ২২ জন মারা গেছেন করোনায়। ফলে ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে মোট ৪০৮ জন মারা গেলেন। একই সময়ে করোনায় আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন আরও ১ হাজার ৭৭৩ জন, এটিও একদিনে সর্বোচ্চ শনাক্তের রেকর্ড। এতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ২৮ হাজার ৫১১ জনে।

ব্রিফিংয়ে অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা আরও বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় ১০ হাজার ২৬২টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। আর নমুনা সংগ্রহ করা হয় ১০ হাজার ১৭৪টি। এখন পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ২ লাখ ১৪ হাজার ১১৪ টি। ৪৪ টি ল্যাবে নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে নতুন সংক্রমণ ধরা পড়েছে ১৭৭৩ জনের দেহে।

তিনি জানান, মারা যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন- ঢাকা বিভাগে ৫ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে পাঁচ জন, সিলেট বিভাগে একজন এবং রংপুরে তিনজন। বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, তাদের মধ্যে ৮১ থেকে ৯০ বছরের মধ্যে দুজন,৭১ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে দুজন, ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে তিনজন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ১০জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে দুইজন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে একজন এবং ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে এক জন। মৃতদের মধ্যে পুরুষ ১৯ জন, নারী ৩ জন।

ঢাকা বিভাগের মারা গেছেন ১০ জন, চট্টগ্রামে ৮ জন, সিলেটে ৩ জন, ময়মনসিংহের একজন।

তিনি বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৩৯৫ জন কোভিড-১৯ রোগী সুস্থ হয়েছেন। এ নিয়ে মোট সুস্থ হয়েছেন ৫ হাজার ৬০২ জন।

দেশে করোনা ভাইরাস আক্রান্ত রোগী ধরা পড়ার পর থেকে এ পর্যন্ত একদিন ব্যবধানে যে সংখ্যক রোগী শনাক্ত এবং মৃত্যু হয়েছে, তার মধ্যে বৃহস্পতিবারই সর্বোচ্চ। অর্থাৎ দুটোতেই রেকর্ড। এর আগে বুধবার ১ হাজার ৬১৭ রোগী শনাক্ত হয়েছিলেন। এরও আগে গত ১৮ মে সব রেকর্ড ভেঙে এক হাজার ৬০২ জন শনাক্ত হয়েছিলেন।

করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে সবাইকে স্বাস্থ্য অধিদফতর ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ-নির্দেশনা মেনে চলার অনুরোধ জানানো হয় বুলেটিনে।

দেশে করোনাভাইরাসে সংক্রমিত প্রথম রোগী শনাক্ত হয় গত ৮ মার্চ। তার ১০ দিন পর ১৮ মার্চ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রথম একজনের মৃত্যু হয়।

তারপর দিন গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। লম্বা হচ্ছে মৃত্যুর মিছিলও।

চীনের উহান শহর থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস এখন গোটা বিশ্বেই দাপট দেখাচ্ছে। বিশ্বের ২১৩ টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে কোভিড-১৯।বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বিশ্বে মৃতের সংখ্যা আজ বৃহস্পতিবার পর‌্যন্ত বেড়ে দাঁড়িয়েছে তিন লাখ ২৯ হাজার ৯২৫ জনে।

বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের সর্বশেষ পরিসংখ্যান জানার অন্যতম ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্য অনুযায়ী, করোনাভাইরাসে এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছে বিশ্বের ৫০ লাখ ৯০ হাজারের বেশি মানুষ। তাদের মধ্যে বর্তমানে ২৭ লাখ তিন হাজার ৪২৪ জন চিকিৎসাধীন এবং ৪৫ হাজার ৪৩১ জন (২ শতাংশ) আশঙ্কাজনক অবস্থায় রয়েছে। এ পর্যন্ত করোনাভাইরাস আক্রান্তদের মধ্যে ১৯ লাখ ৭০ হাজার ৬৮৬ জন সুস্থ হয়ে উঠেছে।

Share