৩০ ব্যাংককে বাংলাদেশ ব্যাংকের শোকজ

নিজস্ব বার্তা প্রতিবেদক : যেসব ব্যাংকের খেলাপি ঋণের হার নিরাপদ সীমা অতিক্রম করেছে এমন ৩০টি ব্যাংককে শোকজ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। উচ্চ খেলাপির কারণ, আদায় পরিস্থিতি ও পরবর্তী পদক্ষেপ সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়েছে। গত সপ্তাহে পাঠানো ঐ চিঠিতে পরবর্তী সাত কার্যদিবসের মধ্যে উত্তর পাঠানোর নির্দেশনাও দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

জানা গেছে, যেসব ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ১০ শতাংশের বেশি তাদের উদ্বেগজনক তালিকায় রাখা হয়। মনিটরিং করা হয় নিয়মিত। বর্তমানে ১০ শতাংশের ওপরে ঋণখেলাপি এমন ব্যাংকের সংখ্যা ১৫টি। এদিকে ৫ শতাংশের ওপরে ও ১০ শতাংশের নিচে খেলাপি রয়েছে ১৩টি ব্যাংকের। এছাড়াও দুর্বলতা বিবেচনায় আরো দুটি ব্যাংককে চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

১০ শতাংশের ওপরে খেলাপিকৃত ব্যাংকগুলোর মধ্যে রয়েছে অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড। ডিসেম্বর শেষে ব্যাংকটির খেলাপি ঋণের পরিমাণ মোট বিতরণের ১৪ দশমিক ৫৬ শতাংশ। এছাড়াও বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক লিমিটেডের ৫০ শতাংশ, বেসিক ব্যাংকের ৫৩ শতাংশ, জনতা ব্যাংকের ২৯ শতাংশ, রূপালী ব্যাংকের ১৫ শতাংশ এবং সোনালী ব্যাংকের প্রায় ২২ শতাংশ।

বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মধ্যে ১০ শতাংশের ওপরে থাকা ব্যাংকগুলোর তালিকায় রয়েছে এবি ব্যাংকের খেলাপি। ব্যাংকটির খেলাপির পরিমাণ মোট বিতরণের ১৩ দশমিক ২৪ শতাংশ। এছাড়াও বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের ৪৭ শতাংশ, আইসিবি ইসলামী ব্যাংকের ৮৪ এবং পদ্মা ব্যাংকের ৭২ শতাংশ। বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক, প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক এবং রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের খেলাপি ঋণের পরিমাণ যথাক্রমে ১৫ শতাংশ, ১৬ শতাংশ এবং ১৭ শতাংশ।

বিদেশি ব্যাংকগুলোর মধ্যে উদ্বেগজনক অবস্থা বা ১০ শতাংশের ওপরে রয়েছে হাবিব ব্যাংক লিমিটেড। যার খেলাপি ঋণের পরিমাণ মোট বিতরণের ১১ শতাংশ এবং ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান এর খেলাপি ঋণ বিতরণের ৯৮ শতাংশ।

৫ শতাংশের ওপরে খেলাপিকৃত ব্যাংকগুলোর মধ্যে বেসরকারি খাতের আইএফআইসি ব্যাংকের ৫ দশমিক ৪৬ শতাংশ, মেঘনা ব্যাংকের ৭ দশমিক ২৮ শতাংশ, মার্কেন্টাইল ব্যাংকের ৫ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ, ন্যাশনাল ব্যাংকের ৭ দশমিক ৮৩ শতাংশ, ওয়ান ব্যাংকের ৯ দশমিক ২৮ শতাংশ, প্রাইম ব্যাংকের ৫ দশমিক ৮৩ শতাংশ, শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংকের ৫ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ, সাউথইস্ট ব্যাংকের ৫ দশমিক ২১ শতাংশ, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের ৫ দশমিক ৩২ শতাংশ, সিটি ব্যাংকের ৬ দশমিক ৪৭ শতাংশ, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের ৫ দশমিক ৫৮ শতাংশ এবং উত্তরা ব্যাংক লিমিটেডের ৭ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২০১৯ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্যাংকগুলোর বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ ১০ লাখ ১১ হাজার ৮২৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৯৪ হাজার ৩৩১ কোটি টাকাই খেলাপি হয়ে গেছে। মোট ঋণের মধ্যে খেলাপি ঋণের হার ৯ দশমিক ৩২ শতাংশ।

Share