‘ক্রসফায়ারের’ ভয় দেখানোর মামলা প্রত্যাহার চান বাদী

নিজস্ব জেলা প্রতিবেদক : চট্টগ্রামে ‘ক্রসফায়ারের’ ভয় দেখিয়ে এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ২৩ লাখ টাকা আদায়ের অভিযোগে ওসিসহ সাত পুলিশের বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহারের আবেদন করেছেন বাদী। বলছেন, ‘ভুল বোঝাবুঝির’ কারণে মামলাটি করেছিলেন।

আসামিরা হলেন বায়েজিদ বোস্তামী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রিটন সরকার, চান্দগাঁও থানার ওসি খন্দকার আতাউর রহমান (বায়েজিদ থানার সাবেক ওসি), বায়েজিদ থানার উপপরিদর্শক মো. আফতাব, সহকারী উপপরিদর্শক মো. ইব্রাহীম, মিঠুন নাথ, কনস্টেবল মো. রহমান ও সাইফুল।

আজ মঙ্গলবার অতিরিক্ত চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মহিউদ্দিন মুরাদের আদালতে আবেদন করেন বাদী ব্যবসায়ী মো. ইয়াছিন। নগরের পলিটেকনিক এলাকায় তাঁর রড, সিমেন্টের দোকান রয়েছে। আদালত বাদীর আবেদনটি গ্রহণ করে আগামী ২ এপ্রিল আদেশের জন্য রেখেছেন।

গত ১৯ ফেব্রুয়ারি আদালতে মামলাটি করা হয়েছিল। আদালত নগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনারকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন।

জানতে চাইলে মামলার বাদী মো. ইয়াছিন সাংবাদিকদের বলেন, ভুল বোঝাবুঝির কারণে মামলাটি করেছেন। এখন তিনি প্রত্যাহার চান। পুলিশের চাপে পড়ে কিংবা ভয়ে প্রত্যাহারের আবেদন করেননি।

অভিযোগ উঠেছে, বায়েজীদ থানা ওসির চাপে বাদী মামলাটি প্রত্যাহারের আবেদন করেন। এক পুলিশ কর্মকর্তা বিষয়টি মধ্যস্থতা করেন। তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বায়েজীদ বোস্তামী থানার ওসি প্রিটন সরকার আজ বিকেলে প্রথম আলোকে বলেন, প্রত্যাহারের বিষয়টি তিনি জানেনই না। ভয় কিংবা চাপ দেওয়া দূরের কথা।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, কোনো মামলা কিংবা অভিযোগ না থাকলেও গত বছরের ২০ সেপ্টেম্বর ব্যবসায়ী ইয়াছিনকে পলিটেকনিক এলাকা থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় তুলে নিয়ে যায় বায়েজিদ বোস্তামী থানা-পুলিশ। তাঁকে থানায় আটকে রেখে ক্রসফায়ারের হুমকি দেওয়া হয়। দাবি করা হয় ২০ লাখ টাকা। পরে ব্যবসায়ীর পরিবার পরিচিতজনদের কাছ থেকে ধার নিয়ে বায়েজিদ বোস্তামী থানা-পুলিশের হাতে ১১ লাখ টাকা তুলে দেন। এরপর তাঁকে থানা থেকে ছাড়া হয়। এই ঘটনা কাউকে বললে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়। সাদা কাগজে নেওয়া হয় সই। পরিবারের সদস্যদের অনুরোধে প্রাণে বাঁচতে এই ঘটনা কাউকে জানানো হয়নি।

সর্বশেষ ৪ ফেব্রুয়ারি নগরের শেরশাহ এলাকা থেকে বায়েজিদ বোস্তামী থানা-পুলিশ তাঁকে আবার ধরে নিয়ে যায়। এবার থানার ভেতর না ঢুকিয়ে একটি মাইক্রোবাসে করে নগরের অনন্যা আবাসিক এলাকাসহ নির্জন কয়েকটি স্থানে ঘুরায়। সেখানে ক্রসফায়ারের ভয় দেখানো হয়। দাবি করা হয় ৫০ লাখ টাকা। বাধ্য হয়ে আত্মীয়স্বজনদের কাছ থেকে ধার নিয়ে ১২ লাখ টাকা তুলে দেওয়া হয়। টাকা পাওয়ার পর নগরের আতুরার ডিপো এলাকায় মাইক্রোবাস থেকে ইয়াছিনকে নামিয়ে দেয় বায়েজিদ থানার পুলিশ।

Share