চীনের বিরুদ্ধে নজিরবিহীন প্রতিশোধের ঘোষণা ট্রাম্পের

নিজস্ব ডেস্ক প্রতিবেদক : চীনকে বিভিন্ন বাক্যবাণে জর্জরিত করে রেখেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এবার এমন এক প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা দিলেন তিনি, যা চীন-মার্কিন সম্পর্ককে আরো গভীর সংকটে ফেলবে।

শুক্রবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। যেখানে চীনের বিরুদ্ধে নেওয়া মার্কিন পদক্ষেপকে নজিরবিহীন প্রতিশোধ বলে উল্লেখ করা হয়।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট বেইজিংকে আক্রমণ করে বলেন, ‘চীন যুক্তরাষ্ট্রকে ছিন্ন করে ফেলেছে, যা আগে কখনও কেউ করেনি’।

তিনি আরো বলেন, ‘বেইজিং আমাদের কারখানাগুলোতে অভিযান চালিয়েছে। আমেরিকান শিল্পকে ছিন্নভিন্ন করেছে।’

প্রতিবেদনে বলা হয়, এক সপ্তাহ পর এমন এক সময় (শুক্রবার) হোয়াইট হাউজের রোজ গার্ডেনে হাজির হন ডোনাল্ড ট্রাম্প, যখন যুক্তরাষ্ট্রে করোনা মহামারিতে এক লাখ মানুষের মৃত্যু হয়েছে।

শুধু তাই নয়, মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যে এক কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তিকে পুলিশি হেফাজতে হত্যা করা হয়। এর প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে উঠে মিনেসোটা। কিন্তু এসব ঘটনার কোনোটিই উল্লেখ করেননি প্রেসিডেন্ট। বরং তিনি বেইজিংকে নিয়ে এমন কথা বলেন, যা ভূ-রাজনীতির জন্য হুমকি।

হংকংয়ের স্বায়ত্তশাসনকে মৌলিকভাবে ক্ষুণ্ণ করে এমন একটি জাতীয় সুরক্ষা আইন পাস করার জন্য চীনের নিন্দা জানান ডোনাল্ড ট্রাম্প।

ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, এত দিন ধরে হংকংকে যে সব সুবিধা যুক্তরাষ্ট্র দিয়ে আসছিল তা প্রত্যাহার করা হবে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাণিজ্য, প্রযুক্তি, শুল্কের ক্ষেত্রে বিশেষ সুবিধা পায় হংকং। আর এই সুবিধাগুলো পরোক্ষভাবে ভোগ করে চীন।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘চীন থেকে কিছু বিদেশি নাগরিক যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ নিষেধ, এছাড়া চীন ও হংকংয়ের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

হংকংকে দেওয়া কী কী ধরনের সুবিধা খারিজ করা হচ্ছে সে বিষয়ে ট্রাম্প জানান, প্রত্যর্পণ চুক্তি, প্রযুক্তি সহায়তা, রফতানি ইত্যাদি নানা ক্ষেত্রে হংকংকে যে সব সুবিধা দেওয়া হতো তা প্রত্যাহার করা হচ্ছে।

হংকং ছাড়াও, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়া চীনা শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রেও বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। চীনের সেনাবাহিনীর সঙ্গে যুক্ত শিক্ষার্থীদের মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি প্রাপ্তির ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।

চীনের নেতাদের মতামতের প্রতিফলন হিসেবে বিবেচিত গ্লোবাল টাইমস পত্রিকা জানায়, হংকংয়ের বিশেষ মর্যাদা বাতিলে যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপ ‘বেপরোয়া স্বেচ্ছাচারিতা’র প্রকাশ।

হংকংয়ের বিচার বিভাগের সচিব শুক্রবার বিবিসিকে জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার যে কোনও হুমকি গ্রহণযোগ্য নয়।

এদিকে করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের শুরু থেকেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে তোপের মুখে রেখেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। বেইজিংয়ের সঙ্গে সংস্থাটির যোগসাজশের অভিযোগ করেন তিনি। সবশেষ ডব্লিউএইচও-এর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্নের ঘোষণা দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

Share