লিবিয়ায় ২৬ বাংলাদেশি হত্যা: মানব পাচারকারী চক্রের হোতা হাজী কামাল গ্রেফতার

নিজস্ব বার্তা প্রতিবেদক : লিবিয়ায় ২৬ বাংলাদেশিকে হত্যার ঘটনায় মানব পাচারকারী চক্রের অন্যতম হোতা কামাল হোসেন ওরফে হাজী কামাল (৫৫) কে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব। সোমবার ভোর ৫টার দিকে রাজধানীর গুলশানের শাহজাদপুর এলাকার একটি বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

র‍্যাব-৩ এর সিনিয়র এএসপি আবু জাফর মো: রহমত উল্লাহ বলেন, ধৃত মানবপাচারকারী চক্রের অন্যতম হোতা কামাল হোসেন ওরফে হাজী কামালের পিতার নাম মো: জামাত আলী। কুষ্টিয়ার সদর থানা এলাকায় তার গ্রামের বাড়ি। তার কাছে থেকে পাচারকারী চক্র সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উদঘাটন ও পাসপোর্ট জব্দ করা হয়েছে।

এনিয়ে এখন পর্যন্ত পুলিশ ও র‍্যাবের হাতে দুই মানব পাচারকারী আটক হয়েছে। অপর জনের নাম মো. বাহারুল আলম ওরফে বাচ্চু মিলিটারি। তাকে ভৈরব থানা পুলিশ গ্রেফতার করেছে। এ ঘটনায় দুইটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

এদিকে, কিশোরগঞ্জের ভৈরব থানার ওসি মো. শাহিন মিয়া আজ গণমাধ্যমকে জানান, লিবিয়ার ঘটনায় থানায় মানবপাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে একটি মামলা হয়েছে। পুলিশ সদর দপ্তরের সরাসরি তত্ত্বাবধানে সিআইডি, ডিবিসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা মামলাটি তদন্তে সহায়তা করছে। লিবিয়ার মিজদা শহরে এই হত্যার ঘটনায় কিশোরগঞ্জের ভৈরব থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। নিহত সাদ্দাম হোসেন আকাশের বড় ভাই মোবারক হোসেন বাদী হয়ে সাতজনকে আসামি করে এই হত্যা মামলাটি দায়ের করেন।

ওই মামলায় ভৈরবের মানবপাচারকারী চক্রের সদস্য তানজিরুলকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। এছাড়াও অজ্ঞাত পরিচয় আরও ৭-৮ জনকে আসামি করা হয়েছে।

এদিকে, ঢাকার সিআইডির অর্গানাইজ ক্রাইম টিম ভৈরবে এসে মামলার তদন্ত কাজ শুরু করেছে। মামলাটি তদন্ত করবে সিআইডি। সিআইডির পুলিশ পরিদর্শক মো. মিজানুর রহমানকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। ভৈরব থানা পুলিশ জানান, মামলা দায়েরের পর ভৈরবের শ্রীনগর গ্রামের মানবপাচারকারী তানজিরুলের বড় ভাই মো. বাহারুল আলম ওরফে বাচ্চু মিলিটারিকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

লিবিয়ায় মারা যাওয়া নিহতের স্বজনরা গণমাধ্যমকে জানান, স্থানীয় দালাল তানজিরুল, জাফরসহ অন্যান্য দালালের মাধ্যমে নিহতরা লিবিয়া হয়ে ইতালি যাওয়ার চেষ্টা করছিল। সংসারের সচ্ছলতা আনতে জমি-জমা বিক্রিসহ ধারদেনা করে ৪-৫ লাখ টাকা দালালদের হাতে তুলে দিয়েছিলেন। ভৈরব এলাকার নিহতরা হলেন, রাজন, সাকিল, সাকিব মিয়া, আকাশ, মো. আলী, মাহবুব ও মামুন।

উল্লেখ্য, গত ২৮ মে লিবিয়ায় অপহরণকারীদের গুলিতে ২৬ বাংলাদেশি নিহত ও বেশ কয়েকজন আহত হন। এদের মধ্যে ভৈরবের সাতজন নিহত ও তিনজন আহত হন।

Share