নিজস্ব বার্তা প্রতিবেদক : টেকনাফে চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খানের মা নাসিমা আক্তার বলেছেন, ‘কথায় নয়, কাজে বিশ্বাসী ছিল আমার ছেলে। ও দেশ এবং পরবর্তী প্রজন্মের কথা ভাবতো। ছেলে আমাকে বলতো, আম্মি আমরা যদি দেশে ভালো কিছু রেখে যাই তাহলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম সেটা অনুসরণ করবে।’সোমবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।
নাসিমা আক্তার বলেন, সিনহা সবসময় ক্রিয়েটিভ কাজ করতে চাইত। সবসময় কাজের মাধ্যমে সারপ্রাইজ দিতে চাইত। ও বলতো, আমি আমার মনের খোরাকের জন্য কাজ করি; যাতে মানুষ উপকৃত হয়। একটা ডকুমেন্টারি করছি এখনো বলার মতো কিছু হয়নি, যখন হবে তখন বলব। সিনহা বলতো, ভালো কাজ দিয়ে যদি মানুষকে আকৃষ্ট করতে পারি, এর চেয়ে বড় আর কী হতে পারে! আমি বলতাম, বাবা তুমি যে আর্মি থেকে চলে আসছো, সেখানে এতগুলো কোর্স তাহলে কেন করলে? এখন তোমার কত প্রমোশন হতো, ভালো অবস্থান হতো তোমার। সে বলতো মাম্মি, পাওয়ার! পাওয়ার কী? পাওয়ার আজ আছে কাল নেই, মানুষে হৃদয়ের মধ্যে থাকব, কাজ করব। আর কাজের কথা মুখে বলার মতো কিছু নয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘কাজের কথা মুখে বলতো না সে। আমি বুঝতাম সে কথায় বিশ্বাসী ছিল না, কাজে বিশ্বাসী ছিল। যেমন বিশ্বভ্রমণ করা নিয়ে সে বলতো, এটা তো স্বাভাবিক ঘটনা। এইটা নিয়ে কোনো পূর্বপরিকল্পনা নিয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খ সে জানাতে চাইতো না। সারপ্রাইজ দেবে। কিছু উপহার দেবে দেশকে।’ এ সময় ছেলের নানা স্মৃতি মনে করে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন নাসিমা আক্তার।
এ সময় সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়ার বলেন, ‘আর যেন বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড না ঘটে। একইসঙ্গে দ্রুততম সময়ের মধ্যে যেন সিনহা হত্যার বিচার হয়, সেই দাবি জানাই।’
অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তাদের সংগঠন- রাওয়া’র সভাপতি অবসরপ্রাপ্ত মেজর খন্দকার নুরুল আফসার সাংবাদিকদের বলেন, ‘ওসি প্রদীপ শুধু সিনহার নয়, অন্য যে বিচার বহির্ভূত হত্যা ঘটিয়েছে, সেগুলোরও বিচার হওয়া উচিত।’