নয়াবার্তা ডেস্ক : নিকাব (মাথা ঢেকে রাখার বিশেষ পোশাক) না পরার জন্য একজন ইরানী নারীকে ৭৪টি বেত্রাঘাত করা হয়েছে। ৩৩ বছর বয়সী ওই নারীর নাম রোয়া হেশমতি। দেশটির পোশাকবিধি অনুযায়ী, মাথা ঢেকে না রাখার জন্য তাঁকে জরিমানাও করা হয়েছে। ইরানের বিচার বিভাগ এ তথ্য জানিয়েছে। খবর-দ্য টেলিগ্রাফ।
ইরানের বিচার বিভাগের মিজান অনলাইন ওয়েবসাইট বলা হয়েছে, তার ৭৪টি বেত্রাঘাতের শাস্তি আইন ও শরিয়া অনুযায়ী করা হয়েছে। ‘জননৈতিকতা লঙ্ঘন’ এর অপরাধে এ শাস্তি দেওয়া হয়েছে।
হেশমতি একজন কুর্দি বংশোদ্ভূত বলে জানিয়েছে কুর্দিকেন্দ্রিক নরওয়েভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন হেনগাও।
হেশমতির আইনজীবী মাজিয়ার তাতাই বলেন, মাথায় স্কার্ফ (নিকাব) না থাকার একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করার জন্য এপ্রিল মাসে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। জনসমক্ষে মুসলিম বোরখা না পরার অভিযোগও আনা হয়েছে হেশমতির বিরুদ্ধে।
প্রসঙ্গত, ১৯৭৯ সালের ইসলামি বিপ্লবের পর ইরানে সব নারীর গলদেশ ও মাথা ঢেকে রাখা আইনে বাধ্যতামূলক করা হয়। পোশাকবিধি নজরদারিও করে থাকে দেশটির কর্তৃপক্ষ। এটি নারীদের কাছে তেমন জনপ্রিয়তা পায়নি। ইরানের নারীরা সাধারণত মাথায় ঢিলেঢালাভাবে স্কার্ফ পরে থাকেন। সেখানকার নৈতিকতা পুলিশকে শক্তিশালী করার পর হিজাব ছাড়া নারীদের চলাচলে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে।
২০২২ সালের শেষ দিকে হিজাববিরোধী আন্দোলনে উত্তাল হয়ে উঠে ইরান। হিজাব না পরার অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়ার পর মাশা আমিনি নামের ২২ বছর বয়সী এক তরুণী পুলিশি হেফাজতে মারা যাওয়ার পর দেশটিতে হিজাববিরোধী বিক্ষোভ তুঙ্গে উঠে। বিক্ষোভে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহিংসতায় অর্ধশতাধিক মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে কট্টর রক্ষণশীল এই দেশটিতে।
২০২২ সালের সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে হাদিস নাসাফি নামে ২০ বছরের এক তরুণীকে গুলি করে হত্যা করা হয়। খোলা চুল পেছনে বেঁধে বিক্ষোভে যোগ দেওয়ার ভিডিও ভাইরাল হয়েছিল হাদিকের। হাদিসের ডাকনাম ‘পনিটেইল গার্ল’। অন্য অনেক ইরানি নারী যারা সাহসের সঙ্গে প্রতিবাদ করার জন্য চুল খুলে পুলিশ অফিসারদের মুখোমুখি হয়েছিলেন তাদেরই একজন ছিলেন হাদিস।