নয়াবার্তা প্রতিবেদক : উত্তরের মানুষের দুঃখ মোচনে তিস্তা মহাপরিকল্পনা দ্রুত বাস্তবায়ন করা হবে। রংপুরের মহাসমাবেশে এমন আশ্বাস দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা।
বুধবার (২ আগস্ট) বিকাল ৪টার দিকে রংপুরের জিলা স্কুল মাঠে জনসভায় তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে তিনি মঞ্চে উপস্থিত হন। এ সময় স্লোগানে স্লোগানে নেতা-কর্মীরা তাকে বরণ করে করে নেন। জনসভাস্থলে গিয়ে শুরুতেই শেখ হাসিনা প্রায় ১ হাজার ২৪০ কোটি টাকার ২৭টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন এবং পাঁচটি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারে আসলে, নৌকা মার্কায় ভোট দিলে দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন হয়। সেটা আমরা প্রমাণ করেছি।
শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারে যখনই এসেছে এই রংপুরে কখনো মঙ্গা হয়নি। রংপুরে কখনো খাদ্যের অভাব দেখা দেয়নি। দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়নি। আওয়ামী লীগ সরকারে আসলে, নৌকা মার্কায় ভোট পেলে দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন হয় সেটা আমরা প্রমাণ করেছি।
তিনি বলেন, ৯৬’ সালে যখন ক্ষমতায় এসেছিলাম, তখনো মঙ্গা ছিল না। কিন্তু ২০০১ সালে যখন খালেদা জিয়া ক্ষমতায় আসে, দুই হাতে টাকা-পয়সা লুট করে। সে ও তার ছেলেরা মিলে, এ দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলে। আবার দেশে মঙ্গা শুরু হয়। ২০০৮-এর নির্বাচনের পর আমরা সরকার গঠন করি। তারপর থেকে আমি যে পদক্ষেপ নিয়েছি, এ দেশের মানুষের কোনো কষ্ট হয়নি।
জনসভায় প্রধানমন্ত্রীকে নৌকা উপহার দিচ্ছেন রংপুর আওয়ামীগের নেতারা। ছবি: ফোকাস বাংলা
রংপুরে বন্ধ হওয়া সুগার মিল যেন পুনরায় চালু হয় সে ব্যবস্থা করা হবে বলে আশ্বাস দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের সব বিভাগীয় অঞ্চলে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি করা হবে। তারই ধারাবাহিকতায় রংপুর মেডিকেলকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর করা হবে।
প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেন, মানুষ এখন শান্তিতে ভোট দিতে পারে।
রংপুরে মঞ্চে উঠে হাত নেড়ে নেতাকর্মীদের শুভেচ্ছা জানান শেখ হাসিনা। ছবি: ফোকাস বাংলা
রংপুর জিলা স্কুল মাঠে আওয়ামী লীগের বিভাগীয় জনসভার আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে। বুধবার (২ আগস্ট) বেলা ১২টায় জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনার মধ্য দিয়ে শুরু হয় প্রধানমন্ত্রীর জনসভার কার্যক্রম। জাতীয় সঙ্গীত শেষে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত ও গীতাপাঠ করা হয়।
শহরের ৩টি প্রবেশপথ দিয়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ভোর থেকেই ছোট-বড় মিছিল নিয়ে জনসভাস্থলে আসতে শুরু করেন।
আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা বাসে-ট্রাকে এবং পায়ে হেঁটে জনসভাস্থলে এসেছেন। এছাড়া ৮টি ট্রেন ভাড়া করে জয়পুরহাট, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, নাটোর, পাবনা ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে নেতাকর্মীদের রাজশাহী আসার ব্যবস্থা করা হয়।
এদিকে রংপুরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগমন ও জনসভা উপলক্ষ্যে ছোট ছোট মিছিলে মুখরিত হয়ে উঠেছে নগরীর সড়কগুলো। স্লোগানে মুখর রংপুরের অলিগলিতে মানুষের ঢল নেমেছে। সমাবেশ বিকেলে হলেও সকাল ১০টা থেকে কানায় কানায় পূর্ণ হয়েছে রংপুর জিলা স্কুলের আশপাশ এলাকা।
গত রাত থেকেই রংপুর মহানগরীতে গণমানুষের ঢল নামতে শুরু করে ‘শেখ হাসিনার আগমন শুভেচ্ছা-স্বাগতম’ স্লোগানে। সকাল ৮টা থেকে সভাস্থল রংপুর জিলা স্কুল মাঠে দূর-দুরান্ত থেকে রঙিন টি-শার্ট ও ক্যাপ পরিহিত নেতা-কর্মীরা ঢাকঢোল পিটিয়ে আসতে শুরু করেন।
রংপুরের মহাসমাবেশে বক্তব্য দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: ফোকাস বাংলা
লালমনিরহাট, গাইবান্ধা, নীলফামারী, কুড়িগ্রাম, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, দিনাজপুর ও রংপুরের বিভিন্ন উপজেলা ও ইউনিয়ন থেকে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী ও সমর্থকরা সমাবেশস্থলে আসছেন দলে দলে। বাস, ট্রেন, মাইক্রোবাস, পিকআপভ্যান, অটোরিকশা ও সিএনজিতে করে আসছেন। বাহারি সাজসজ্জা আর বাদ্যযন্ত্রের তালে তালে স্লোগানে নেচে গেয়ে উল্লাস করছেন।