নিজস্ব জেলা প্রতিবেদক : খুলনার দাকোপের আকাশে এখনো কালোমেঘের ঘনঘটা। প্রায় সারা রাত প্রবল বেগে চলতে থাকা ঝড় শেষ রাতে কমে আসলেও আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে হালকা ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যাচ্ছে। সকাল ১০টার দিক থেকে বিভিন্ন এলাকায় হালকা বৃষ্টি হচ্ছে। আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নেওয়া মানুষ সবাই ঘরে ফিরেছে। সংকেত বহন করা সব কটি পতাকাও নামিয়ে ফেলা হয়েছে।
গতকাল সারা দিন ও রাত দাকোপসহ উপকূলের মানুষ ঘূর্ণিঝড় আম্পান নিয়ে ভীষণ দুশ্চিন্তায় প্রহর কাটিয়েছে। সিডর ও আইলায় ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়ায় ওই অঞ্চলের মানুষ আবারও একটা বড় ক্ষতির আশঙ্কা করছিল। তবে শেষ পর্যন্ত ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আগের ঘূর্ণিঝড়গুলোর তুলনায় কম হয়েছে বলে ধারণা করছে স্থানীয় বাসিন্দারা। উপজেলা প্রশাসন থেকে এখনো ক্ষয়ক্ষতির নিশ্চিত তথ্য পাওয়া যায়নি।
আজ সকাল থেকে ১১টা পর্যন্ত দাকোপের বানীশান্তা ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা এবং আশ্রয়কেন্দ্র ঘুরে দেখা গেছে, আশ্রয়কেন্দ্রে এখন কোনো মানুষ নেই। এলাকায় কিছু গাছপালা পড়ে গেছে। ঘরবাড়ির ক্ষতি তেমন হয়নি। বুধবার এলাকার সেসব খাল অনেকটা শুকনো ছিল সেগুলো এখন পানিতে ভরে গেছে। বিলেও ভালোরকম বৃষ্টির পানি জমেছে। বিভিন্ন বাড়ির আঙিনায় থাকা আমের গাছ থেকে প্রচুর পরিমাণে আম পড়ে গেছে।
সকাল নয়টার দিকে কথা হয় পশ্চিম খেজুরিয়া গ্রামের কবিতা মণ্ডলের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘রাতে পরিবারের সবাই আশ্রয়কেন্দ্রে ছিলাম। সেখানে রাতে খিচুড়ি খাবার দিয়েছিল। সারা রাত চিন্তায় ছিলাম বাড়িতে কি হচ্ছে। খুব ভোরে বাড়ি ফিরি। তবে কোনো ক্ষতি হয়নি।’
পূর্ব খেজুরিয়া গ্রামের কিরণ বিশ্বাস বলেন, ‘এবারের মতো বাঁইচে গেলাম। এখনো হয়তো এট্টু -আট্টু বৃষ্টি হবে। যত বড় ঝড় ছেলে যদি ঠিক পালি আঘাত কুরত, কি সব্বনাশ হুতো তার ঠিক নি। বাড়ি এট্টা গাছ পুড়েছে। অন্য খেতি খুব হইনি।’
দাকোপের দক্ষিণ বানীশান্তা গ্রামের বাসিন্দা ও স্বাস্থ্যকর্মী সমীর মণ্ডল বলেন, এলাকায় তেমন বড় কোনো ক্ষতি হয়নি। পশুর নদীর পাড়ের কিছু মানুষ একটু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রায়ই বাড়িতে আম পড়ে গেছে। নদীতে আজও জোয়ারের পানি বেশি হচ্ছে। মানুষের মধ্যে আম্পান নিয়ে আর ভয় নেই।