নিজস্ব বার্তা প্রতিবেদক : রাজশাহী-৪ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হকের বিরুদ্ধে গোপনে বিয়ে করে প্রতারণা ও ভ্রুণ হত্যার অভিযোগ করেছেন আয়েশা আক্তার লিজা নামের এক নারী। এসব অভিযোগ তিনি ফেসবুকে লিখে স্ট্যাটাসও দিয়েছেন। তবে এমপি এনামুল হকের দাবি, তিনি লিজার চাঁদাবাজি ও ব্লাকমেইলের শিকার হয়ে বিয়ে করেছেন। পরে দেশের আইন অনুযায়ী তালাক (ডিভোর্স) দিয়েছেন।
আয়েশা আক্তার লিজা অভিযোগ করেন, ২০১২ সালে সাংসদ এনামুল হকের সঙ্গে তার পরিচয় ও প্রেমের সূত্রপাত হয়। ২০১৩ সালের ৩০ এপ্রিল তারা ধর্মীয় বিধিমতে পারিবারিকভাবে বিয়ে করেন। কিন্তু বিয়ের কারণে সামনের নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পেতে সমস্যা হতে পারে- এমন আশঙ্কায় তখন বিয়ে রেজিস্ট্রি করেননি এনামুল হক। এরপর আট বছর তারা সংসার করেন। লিজা বাগমারার এমপি এনামুল হকের বাড়িতে এবং রাজশাহী ও ঢাকার বাড়িতে এনামুল হকের সঙ্গে থেকে সংসার করেছেন। তবে কোনোদিন বাইরের কারো সামনে তাকে স্ত্রী হিসেবে স্বীকৃতি দেননি এমপি এনামুল হক। বিষয়টি জানতেন এনামুল হকের প্রথম স্ত্রী ও পরিবারের সদস্যরাও। এরপর ২০১৫ সালে লিজা গর্ভবতী হলে এনামুল হক তার বাচ্চা নষ্ট করান। তখন এনামুল হক তাকে আশ্বাস দেন, আবারো এমপি হতে পারলে তাকে বাচ্চা ও স্বীকৃতি দেবেন। সেজন্য লিজা অপেক্ষা করছিলেন। কথামতো, ২০১৮ সালের ১১ মে তারা রেজিস্ট্রি করে আবারও বিয়ে করেন। কিন্তু এরপরও এনামুল স্বীকৃতি দেননি, বাচ্চাও দেননি।
লিজা আরও অভিযোগ করেন, ‘বিয়ের নামে সাংসদ এনামুল তার সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। তার জীবন নষ্ট করেছেন। কখনো সবার সামনে স্বীকৃতি দেননি। ভ্রুণ হত্যা করেছেন। এখন এমপি এনামুল হক বলছেন, আমাকে ডিভোর্স দিয়েছেন। একজন এমপি আমাকে গোপনে বিয়ে করবে কেন? গোপনে ডিভোর্স দেবে কেন? আমি এমপি এনামুলের প্রতারণার শিকার। আমি এই প্রতারণার বিচার চাই।’
তাকে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হচ্ছে- দাবি করে লিজা আরও বলেন, এসব বিষয় তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে লিখেছেন। সংবাদকর্মীদের জানিয়েছেন। সংবাদ সম্মেলন করতে চেয়েছিলেন। এরপর থেকেই তাকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়া হচ্ছে। পুলিশ দিয়ে গ্রেপ্তার করানোর হুমকিও দেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘আমি প্রচণ্ড ভয় পাচ্ছি। আমাকে মেরে ফেলতে পারে।’
এসব বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে এনা প্রোপার্টিজের মালিক সাংসদ এনামুল হক বলেন, ‘আমি বিয়ে করেছিলাম, বাংলাদেশের আইনে ডিভোর্স দিয়ে দিয়েছি। দেনমোহর পরিশোধ করেছি। আমার স্ত্রীকে ডিভোর্স দিতে পারবো না? সমস্যা থাকলে সে কোর্টে যাবে।’
সাংসদ এনামুল পাল্টা অভিযোগ করেন, ‘লিজা চাঁদাবাজি করার জন্যই এসব অভিযোগ করছে। আমার ছবি ফেসবুকে দিয়ে ব্লাকমেইল করেছে। চাঁদাবাজি করে রাজশাহীতে ৫ তলা বাড়ি করেছে। চরিত্রহীন একটা মেয়ে। অনেক চাঁদাবাজি করেছে। ব্লাকমেইল করেই বিয়ে করেছে। আর চাঁদাবাজি করতে দেওয়া হবে না। আরো ৫-৬টা বিয়ে করেছিলো শুনতে পাচ্ছি।’
২০১৫ সালে লিজার ভ্রুণ হত্যার বিষয়ে সাংসদ এনামুল হক বলেন, ‘বিয়েই করেছি ২০১৮ সালে। ২০১৫ সালে কোথায় থেকে বাচ্চা এলো? কার বাচ্চা কোথায় থেকে এনে হত্যা করেছে, তার দায় আমার ঘাড়ে চাপাবে নাকি? প্রয়োজন হলে কোর্টে যাবে। গত ২৪ এপ্রিল ডিভোর্স দিয়েছি। লকডাউনের কারণে হয়তো চিঠি পায়নি, পেয়ে যাবে।’