করোনায় মৃত্যু, শনাক্ত, সবই বেড়েছে

নিজস্ব বার্তা প্রতিবেদক : দেশে আগের ২৪ ঘণ্টার তুলনায় করোনা সংক্রমণ শনাক্ত রোগীর সংখ্যা, শনাক্তের হার ও মৃত্যু সবই বেড়েছে। বুধবার সকাল ৮টা থেকে আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ২ হাজার ৫৭৬ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে। এ সময় মৃত্যু হয়েছে ৪০ জনের। আজ বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

আগের ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ছিল ২ হাজার ৫৩৭ জন। টানা ৪১ দিন পর এদিন শনাক্ত রোগী আড়াই হাজার ছাড়ায়। ওই সময় করোনায় মৃত্যু হয় ৩৬ জনের।

নতুন শনাক্তদের নিয়ে দেশে এ পর্যন্ত করোনাভাইরাস শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে মোট ৮ লাখ ২০ হাজার ৩৯৫। মোট মৃত্যু হয়েছে ১২ হাজার ৯৮৯ জনের। সুস্থ হয়েছেন ৭ লাখ ৫৯ হাজার ৬৩০ জন।

শেষ ২৪ ঘণ্টায় ১৯ হাজার ৪৪৭ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ১৩ দশমিক ২৫ শতাংশ। আগের দিন এই হার ছিল ১২ দশমিক ৩৩ শতাংশ।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মানদণ্ড অনুযায়ী, কোনো দেশে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে কি না, তা বোঝার একটি নির্দেশক হলো রোগী শনাক্তের হার। কোনো দেশে টানা দুই সপ্তাহের বেশি সময় পরীক্ষার বিপরীতে রোগী শনাক্তের হার ৫ শতাংশের নিচে থাকলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে বলে ধরা যায়।

গত ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে চট্টগ্রাম বিভাগে, ১২ জনের। এরপর ঢাকা ও রাজশাহী বিভাগে ৮ জন করে, খুলনা বিভাগে ৬ জন, রংপুরে ৪ জন ও সিলেটে ২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় সবচেয়ে বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছে রাজশাহী বিভাগে ৮১৫ জন। এরপর খুলনা বিভাগে ৫৭৮, ঢাকা বিভাগে ৫১৩, চট্টগ্রাম বিভাগে ৩৩৭, রংপুর বিভাগে ১৩০, ময়মনসিংহ বিভাগে ১১৯, সিলেট বিভাগে ৯২ এবং বরিশাল বিভাগে ৪৯ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে।

ঢাকা বিভাগের মধ্যে সবচেয়ে বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছে ঢাকায়, ঢাকা মহানগরসহ মিলিয়ে এখানে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ২৮৮ জন।

২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম নতুন করোনাভাইরাস সংক্রমণ দেখা দেয়। পরে তা সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। দেশে প্রথম করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয় গত বছরের ৮ মার্চ। তারপর ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে সংক্রমণ। গত বছরের শেষ দিকে এসে সংক্রমণ কমতে থাকে।

এ বছরের মার্চ থেকে করোনা সংক্রমণ আবার বেড়ে যায়। মার্চের প্রথমার্ধেই দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা হাজারের ওপরে চলে যায়। বাড়তে থাকে মৃত্যুর সংখ্যাও। গত ২৬ মার্চের বুলেটিনে আগের ২৪ ঘণ্টায় ৩৪ জনের মৃত্যু খবর দেওয়া হয়, সেখানে ১৯ এপ্রিলের বুলেটিনে আগের ২৪ ঘণ্টায় ১১২ জনের মৃত্যুর কথা জানানো হয়। দেশে করোনা সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর ওই দিনই সবচেয়ে বেশিসংখ্যক মানুষের মৃত্যু হয়।

করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যু বাড়তে থাকায় ৫ এপ্রিল থেকে মানুষের চলাচলে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়, যা এখনো বহাল। এ বিধিনিষেধে মাঝে পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসে।

তবে গত মাসের মাঝামাঝিতে পবিত্র ঈদুল ফিতরকে কেন্দ্র করে ‘লকডাউন’ ঢিলেঢালা হয়ে পড়ে । ঈদকেন্দ্রিক কেনাকাটা ও যাতায়াতে বিপুল লোকসমাগম দেখে জনস্বাস্থ্যবিদেরা এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আশঙ্কা করেছিল, ঈদের পর সংক্রমণ আবার বেড়ে যাবে। এদিকে ভারত সীমান্তবর্তী ১৫টি জেলায় রোগী দ্রুত বাড়ছে। কিছুদিন ধরে সারা দেশেও করোনা সংক্রমণ আবার বাড়তে শুরু করেছে।

Share