নিজস্ব বার্তা প্রতিবেদক : দেশে করোনা সংক্রমণে গত ২৪ ঘণ্টায় (শনিবার সকাল ৮টা থেকে আজ রোববার সকাল ৮টা পর্যন্ত) আরও ২৪১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময়ে নতুন করে ১০ হাজার ২৯৯ জনের দেহে করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে।
আজ রোববার বিকালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দেশে করোনা সংক্রমণের সবশেষ পরিস্থিতি জানানো হয়েছে। আগের দিনের তুলনায় দেশে মৃত্যু কমলেও শনাক্ত রোগী বেড়েছে। তবে পরীক্ষার বিপরীতে রোগী শনাক্তের হার আগের দিনের চেয়ে কমেছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় মোট ৪২ হাজার ৩ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষার বিপরীতে রোগী শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ২৪ দশমিক ৫২ শতাংশ। আগের দিন ২৬১ জনের মৃত্যু হয়েছিল। নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছিল ৮ হাজার ১৩৬ জন। পরীক্ষার বিপরীতে রোগী শনাক্তের হার ছিল ২৫ দশমিক ৬৫ শতাংশ।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সব মিলিয়ে দেশে এখন পর্যন্ত করোনা সংক্রমিত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৩ লাখ ৫৩ হাজার ৬৯৫। মোট মৃত্যু হয়েছে ২২ হাজার ৬৫২ জনের। আর করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ১২ লাখ ৫ হাজার ৪৪৭ জন। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ১৬ হাজার ৬২৭ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি ১০৫ জনের মৃত্যু হয়েছে ঢাকা বিভাগে। এরপর চট্টগ্রাম বিভাগে মারা গেছেন ৫৯ জন, খুলনা বিভাগে ৩০ জন। বাকিরা অন্যান্য বিভাগের।
২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম নতুন করোনাভাইরাস সংক্রমণ দেখা দেয়। কয়েক মাসের মধ্যে এই ভাইরাস বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। বাংলাদেশে প্রথম করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয় গত বছরের ৮ মার্চ।
এরপর বিভিন্ন সময়ে সংক্রমণ কমবেশি হলেও দুই মাসের বেশি সময় ধরে দেশে করোনা পরিস্থিতি উদ্বেগজনক অবস্থায় পৌঁছেছে। করোনার ডেলটা ধরনের দাপটে দৈনিক সংক্রমণ ও মৃত্যু কয়েক গুণ বেড়েছে। গত জুলাই মাসে দেশে করোনায় মৃত্যু হয়েছে ৬ হাজার ১৮২ জনের। প্রায় দেড় বছর ধরে চলা এই মহামারিতে এর আগে কোনো মাসে এত মৃত্যু দেখেনি বাংলাদেশ। এর আগে বেশি মৃত্যু হয়েছিল গত এপ্রিলে ২ হাজার ৪০৪ জনের।
সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আনতে গত মাসের প্রথম দুই সপ্তাহ দেশে সর্বাত্মক বিধিনিষেধ পালন করা হয়। এ সময় সব ধরনের অফিসের পাশাপাশি গণপরিবহন চলাচলও বন্ধ রাখা হয়। কিন্তু ২১ জুলাই ঈদুল আজহা উপলক্ষে এই বিধিনিষেধ আট দিনের জন্য শিথিল করা হয়। ঈদের পর ২৩ জুলাই থেকে আবার সর্বাত্মক বিধিনিষেধ চলছে, যা শেষ হবে ১০ আগস্ট। এরপর আবার অফিস, ব্যাংক, রেস্তোরাঁ, দোকানপাট ও গণপরিবহনসহ প্রায় সব কিছু খুলে দেওয়া হচ্ছে।
মহামারি শুরু হওয়ার পর থেকে এতদিন বাস–ট্রেন–লঞ্চে অর্ধেক আসন ফাঁকা রেখে যাত্রী পরিবহন করতে দেওয়া হয়েছিল। তবে এবার আর সেই বিধিনিষেধ থাকছে।
আজ রোববার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের আদেশে বলা হয়েছে, সড়ক, রেল ও নৌপথে আসনসংখ্যার সমপরিমাণ যাত্রী নিয়ে গণপরিবহন বা যানবাহন চলাচল করতে পারবে। তবে সড়ক পথে গণপরিবহন চলাচলের ক্ষেত্রে স্থানীয় প্রশাসন নিজ নিজ এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, সংশ্লিষ্ট দপ্তর বা সংস্থা, মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের সঙ্গে আলোচনা করে প্রতিদিন মোট পরিবহনসংখ্যার অর্ধেক চালু করতে পারবে।
বর্তমানে সারা বিশ্বেই করোনার ডেলটা ধরনের দাপট চলছে। এরইমধ্যে বিশ্বের অন্তত ১৩৫টি দেশ ও অঞ্চলে করোনার অতিসংক্রামক এই ধরন ছড়িয়েছে। এর ফলে বিশ্বজুড়েই করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যু বেড়েছে।