নয়াবার্তা ডেস্ক : ভারতের এক আমলা দম্পতি কুকুর নিয়ে সন্ধ্যাবেলায় হাঁটবেন বলে পুরো স্টেডিয়াম আগেভাগে বন্ধ করে দিতেন। বের করে দেওয়া হতো ক্রীড়াবিদদের। দিল্লির ওই ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দেয়। অবশেষে ওই দম্পতিকে ‘শাস্তিমূলক ব্যবস্থা’ হিসেবে বদলি করা হয়েছে দুই জায়গায়। স্বামীকে করা হয়েছে চীন সীমান্তবর্তী লাদাখে আর স্ত্রীকে করা হয়েছে অরুণাচল প্রদেশে। এই দুই স্থানের দূরত্ব প্রায় তিন হাজার কিলোমিটার।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের বরাত দিয়ে শনিবার এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ইনডিপেনডেন্ট। সেখানে বলা হয়েছে, কমনওয়েলথ গেমসের সময় দিল্লিতে তৈরি হয়েছিল ত্যাগরাজ স্টেডিয়াম। সেখানে ক্রীড়াবিদেরা নিয়মিত অনুশীলন করেন। কিন্তু উচ্চপদস্থ আমলা দম্পতি সঞ্জীব খিরওয়ার ও রিঙ্কু দুগ্গার কুকুর নিয়ে হাঁটার সময় সন্ধ্যাবেলা। এ জন্য দিল্লির রাজস্ব বিভাগের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি হিসেবে কর্মরত থাকা সঞ্জীবের সন্ধ্যাবেলায় স্টেডিয়াম থেকে সব ক্রীড়াবিদকে বের করে দেওয়ার বিষয়ে প্রথম প্রতিবেদন করে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস। প্রতিবেদনটি প্রকাশের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা–সমালোচনার সৃষ্টি হওয়ায় স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে ওই আমলা দম্পতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
ওই প্রতিবেদন প্রকাশের পর কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দিল্লির মুখ্য সচিবের কাছে প্রতিবেদন চেয়েছে। আর সঞ্জীবকে লাদাখে বদলি করা হয়েছে। তাঁর স্ত্রীও আইএএসের (ইন্ডিয়ান অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস) কর্মকর্তা। তাঁকে বদলি করা হয়েছে অরুণাচলে।
দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল গত বৃহস্পতিবার একটি নতুন আদেশ জারি করেন। সেখানে বলা হয়, এখন থেকে দিল্লির সব ক্রীড়া স্থাপনা রাত ১০টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। পরদিন শুক্রবার ওই আমলা দম্পতিকে বদলির নির্দেশ দেয় কেন্দ্রীয় সরকার।
ভারতের একটি মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, ত্যাগরাজ স্টেডিয়ামে অনিয়মের বিষয়ে দিল্লির মুখ্য সচিবের কাছে প্রতিবেদন চেয়েছেন তাঁরা। আমলা দম্পতি সঞ্জীব ও রিঙ্কুকে বদলি করা হয়েছে। প্রতিবেদন পাওয়ার পর সেখানে কোনো অনিয়ম পাওয়া গেলে তাঁদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) দিল্লি শাখার প্রধান আদেশ গুপ্তা বলেন, ওই আমলা দম্পতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে দিল্লির উপরাজ্যপাল বিনয় কুমারের কাছে চিঠি লেখা হয়েছে। আর বিরোধী দল কংগ্রেসের এমপি মনিশ তিওয়ারি ওই কর্মকর্তাদের বরখাস্ত করতে কেন্দ্রীয় এক মন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।