খুন ঠেকাতে এসে খুন হলেন দম্পতি

নিজস্ব জেলা প্রতিবেদক : নরসিংদীর শিবপুরে পারিবারিক কলহের জেরে স্ত্রীকে কুপিয়ে খুন করেছেন এক ব্যক্তি। এ সময় এই খুন ঠেকাতে এসে খুন হয়েছেন আর এক দম্পতি।

রোববার ভোরে উপজেলার পুটিয়া ইউনিয়নের কুমরাদী গ্রামের এ ঘটনায় অভিযুক্ত বাদল মিয়াকে আটক করে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশ সোপর্দ করেছেন স্থানীয়রা।

নিহতরা হলেন- বাদলের স্ত্রী নাজমা বেগম (৪৮), বাড়িওয়ালা তাইজুল ইসলাম (৬২) ও তার স্ত্রী মনোয়ারা বেগম (৫৬)। হামলায় আহত হয়েছেন নিহত নাজমার ছেলে সোহাগ (১৫) ও বাড়িওয়ালার মেয়ে কুলসুম (২৬)।

স্থানীয়রা জানান, আটক বাদল মিয়া কুমরাদী এলাকায় কাঠমিস্ত্রীর কাজ করেন। নাজমা তার দ্বিতীয় স্ত্রী। নাজমার আগের সংসারের চার সন্তানকে নিয়ে কুমরাদী গ্রামে তাইজুল ইসলামের বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। বাদলের বাড়ি কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার জাঙ্গালিয়া গ্রামে।
আহত সোহাগ ও কুলসুম ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, রোববার ভোরে বাদল ও তার স্ত্রী নাজমা বেগমের মধ্যে পারিবারিক কলহের জেরে কথা-কাটাকাটি ও হাতাহাতি হয়। একপর্যায়ে ধারালো ছুরি দিয়ে নাজমাকে কুপিয়ে জখম করে বাদল। এ সময় তার ছেলে সোহাগ এগিয়ে গিয়ে বাড়িওয়ালা তাইজুল ও তার স্ত্রী মনোয়ারা বেগমকে খবর দেন।

পুলিশ জানায়, এরপর বাড়িওয়ালা, তার স্ত্রী মনোয়ারা এবং মেয়ে কুলসুম কী হয়েছে জানতে ঘটনাস্থলে যান। কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে বাদল মিয়া উত্তেজিত হয়ে সোহাগ, তাইজুল, মনোয়ারা ও কুলসুমকে ছুরি দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে। এতে তারা গুরুতর আহত হন। তাদের চিৎকারে আশেপাশের লোকজন ছুটে আসেন।

পরে তাদেরকে উদ্ধার করে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নেওয়া হলো কর্তব্যরত চিকিৎসক নাজমা বেগম ও মনোয়ারা বেগমকে মৃত ঘোষণা করেন। গুরুতর আহত অবস্থায় তাইজুল ইসলাম, সোহাগ ও কুলসুমকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হলে পথে তাইজুল ইসলাম মারা যান।

নিহত নাজমা বেগম ঘাতক বাদলের দ্বিতীয় স্ত্রী ও শিবপুর উপজেলার কুমড়াদী গ্রামের মান্না মিয়ার মেয়ে।

নরসিংদী সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘দুইজন নারীকে আমাদের হাসপাতালে মৃত অবস্থায় নিয়ে আসা হয়। অন্যদের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদেরকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। তাদের পেটে, মুখে, গালে ও হাতে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। প্রাথমিকভাবে বলা যায়, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তাদের মৃত্যু হয়েছে।’

শিবপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোল্লা আজিজুর রহমান বলেন, স্ত্রীর সঙ্গে কথা-কাটাকাটি থেকেই ঘটনার সূত্রপাত। বাদল একাই পাঁচজনকে কুপিয়েছেন। অভিযুক্ত ব্যক্তিকে ঘটনাস্থল থেকে আটক করা হয়েছে। এব্যাপারে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

Share