নিজস্ব জেলা প্রতিবেদক : খুলনার কিশোরী লামিয়ার (১৪) গুলিবিদ্ধ পায়ে অস্ত্রোপচার সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। সে বর্তমানে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অস্ত্রোপচার পরবর্তী পর্যবেক্ষণে আছে।
হাসপাতালের অর্থোপেডিক বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মেহেদী নেওয়াজ বলেন, লামিয়ার অস্ত্রোপচারটি বেশ জটিল ছিল। গুলিটি তার হাড়ের ভেতরে চলে যায়। এটি বের করতে দেড় ঘণ্টার অস্ত্রোপচার চলে।
শুক্রবার লামিয়া গুলিবিদ্ধ হয়। শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে গুলিবিদ্ধ লামিয়াকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
লামিয়ার মামা তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘শুক্রবার গুলি লাগার পর থেকেই ব্যথার যন্ত্রণায় ছটফট করছিল লামিয়া। গুলি লাগার জায়গায় রক্ত পড়া বন্ধ হলেও যন্ত্রণায় সে ঘুমাতে পারছিল না। ডাক্তাররা বলেছিলেন অপারেশন করায় জটিলতা আছে, এ জন্য দেরি হবে। পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে আজ সকাল নয়টার দিকে তাকে অপারেশন থিয়েটারে নেওয়া হয়।’
এদিকে গুলির ঘটনায় গত শনিবার খুলনা সদর থানায় চারজনকে আসামি করে মামলা করেন ঠিকাদার ইউসুফ আলী। তাঁর ছোড়া গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে লামিয়ার পায়ে লাগে। রোববার ঠিকাদারের করা চাঁদাবাজির মামলার ঘটনায় পুলিশ চার তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে। এই চারজন হলেন যশোরের কেশবপুরের হদ গ্রামের মোহাম্মদ আবু সাঈদ (২২), বাগেরহাটের রামপালের বারুইপাড়া গ্রামের মো. ইসমাইল মল্লিক (২৭), খুলনার কয়রার গোগড়া গ্রামের মো. মেহেদী হাসান (২১) ও খুলনার দৌলতপুরের পাবলা এলাকার মো. সাইফুল ইসলাম (২৩)। তবে তরুণদের স্বজনের অভিযোগ, ঠিকাদারের মেয়ের সঙ্গে প্রেমের জের ধরে গুলির ঘটনা ঘটে।
খুলনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশরাফুল আলম এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ‘ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের প্রত্যেককে পাঁচ দিন করে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করা হয়েছে। আমরা ঘটনাটির আরও তদন্ত করব।’
ঠিকাদার ইউসুফ আলীর করা মামলার এজাহারে বলা হয়, ঠিকাদারির একটি কাজ নিয়ে ওই চারজন তাঁর বাড়িতে এসে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা না দিলে প্রাণনাশের হুমকি দেন। তখন তিনি তাঁদের চাঁদার টাকা দেবেন বলে ঘরের ভেতর গিয়ে পিস্তল আনেন। পিস্তল দেখে ওই চারজন দৌড় দেন। তখন ঠিকাদার দুটি ফাঁকা গুলি ছোড়েন। সেই গুলির একটি লামিয়ার পায়ে লাগে।
তবে ঠিকাদার ঘটনাটি ভিন্ন খাতে নিতে মামলায় মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন গ্রেপ্তার চার তরুণের স্বজনেরা। সাইফুলের মামা মো. সোহেল অভিযোগ করেন, ঠিকাদার ইউসুফ আলীর মেয়ের সঙ্গে গ্রেপ্তার একজনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। ওই ছেলে গত কয়েক দিন ধরে ফোন দিয়ে মেয়ের নম্বরটি বন্ধ পান। তিনি জানতে পারেন, মেয়েটিকে অন্যত্র বিয়ে দিয়ে দিচ্ছেন ঠিকাদার। এ অবস্থায় তিন বন্ধুকে নিয়ে তিনি ঠিকাদারের বাড়িতে যান। এ সময় উত্তেজিত হয়ে ঠিকাদার ইউসুফ আলী প্রথমে তাদের গালিগালাজ করেন এবং পরে পিস্তল দিয়ে তাড়া দেন।