নিজস্ব বার্তা প্রতিবেদক : পশ্চিমমধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত ‘আম্পান’ আরও শক্তিশালী হয়ে সুপার সাইক্লোনে রূপ নিয়েছে। মঙ্গলবার মধ্যরাতে থেকে বুধবার বিকেল কিংবা সন্ধ্যার মধ্যে বাংলাদেশের উপকূলে আঘাত হানতে পারে এটি।
আগে ঝড়ের কোন নামকরণ করা হত না। পরে দেখা যায় যে, ঝড়ের বিশেষ নামকরণ করলে তা সতর্কতামূলক ব্যবস্থাকে কার্যকরী করতে সহায়ক হয়। কারণ, ঝড়টিকে সহজেই চিহ্নিত করা যায়। এজন্য ঝড়ের সংক্ষিপ্ত, বিশেষ নাম এক্ষেত্রে সহায়ক হয়।
বর্তমানে ক্রান্তীয় সাইক্লোন ও হ্যারিকেনের নামকরণের জন্য রয়েছে একটি যথাযথ ব্যবস্থা ও নির্দিষ্ট কিছু সংস্থা। এখনকার এই ঝড়টির মতো ট্রপিক্যাল সাইক্লোনের ক্ষেত্রে এই অঞ্চলের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত আঞ্চলিক সংস্থা তাদের বার্ষিক বা দ্বিবার্ষিক বৈঠকে এই নামগুলি চূড়ান্ত করে।
পাঁচটি ট্রপিক্যাল সাইক্লোন রিজিওনাল সংস্থা রয়েছে। এগুলি হল-ইএসসিএপি/ ডব্লুএমও টাইফুন কমিটি, ডব্লুএমও/ইএসসিএপি প্যানেল বা ট্রপিক্যাল সাইক্লোনস, আরএ ওয়ান ট্রপিক্যাল সাইক্লোন কমিটি, আরএ ফোর হ্যারিকেন কমিটি ও আরএ ফাইভ ট্রপিক্যাল সাইক্লোন কমিটি।
জানা যায়, ২০০৪ সালে ওয়ার্ল্ড মিটিওরোলজিকাল অর্গানাইজেশন (ডব্লিউএমও) এবং ইউনাইটেড নেশনস ইকোনমিক এন্ড সোশ্যাল কমিশন ফর এশিয়া এন্ড প্যাসিফিক (এসক্যাপ)- এর অধীনস্থ আটটি দেশ- ভারত, শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ, মালদ্বীপ, মিয়ানমার, ওমান, পাকিস্তান, এবং থাইল্যান্ড সিদ্ধান্ত নেয় যে এই অঞ্চলের সাইক্লোনের নামকরণ করবে তারা। প্রতিটি দেশ তাদের নামের তালিকা পাঠানোর পর তা চূড়ান্ত করে একটি ডব্লিউএমও এবং এসক্যাপ প্যানেল, যার পোশাকি নাম প্যানেল অন ট্রপিক্যাল সাইক্লোনস (পিটিসি)।
২০০৪ সালে বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার সভায় আরব সাগর এবং বঙ্গোপসাগরের সাইক্লোনের নামকরণ নিয়ে যে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয় সে সময়ই আম্পান নাম তালিকায় যুক্ত হয়। মূলত ওই সময় থেকেই এ অঞ্চলের ঝড়গুলোর নির্দিষ্ট নাম দেয়া শুরু হয়। তার আগে বিভিন্ন দেশ নিজেদের মতো করে আলাদা নামে ঝড়গুলোকে আখ্যায়িত করতো।
গত মাসে ১৬৯টি নামের একটি তালিকা প্রকাশ করে আইএমডি। ১৩টি দেশ থেকে ১৩টি করে নাম চূড়ান্ত করা হয়। নতুন তালিকায় দেওয়া হয় পূর্ববর্তী তালিকার একটিমাত্র নাম–আম্পান। কারণ নতুন তালিকা প্রকাশের সময় পর্যন্ত অব্যবহৃত ছিল সেটি।
দেশের আবহাওয়া অধিদফতর ঘূর্ণিঝড়ের নাম দেয়া চূড়ান্তভাবে শুরু করে ২০০৭ সালে। ওই বছরের নভেম্বরে আঘাত হানা প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড়ের নাম রাখা হয় ‘সিডর’।
সিডরের পর একে একে তাণ্ডব চালানো ঝড়গুলোর নামকরণ করা হয়- আইলা, মহাসেন, রোয়ানু, মোরা, নার্গিস, ফণী ও বুলবুল ইত্যাদি। সেই ধারাবাহিকতায় এবার আসলো আম্পান।
এবারের নামটি দিয়েছে থাইল্যান্ড। থাই ভাষায় ‘আম্পান’ অর্থ স্বাধীন চিত্ত, শক্তি, দৃঢ়তা।