চকরিয়ায় এনসিপির পথসভার মঞ্চ বিএনপির দখলে

কক্সবাজার ও চকরিয়া প্রতিনিধি : ‘আগে নারায়ণগঞ্জে বিখ্যাত গডফাদার শামীম ওসমান ছিল। এখন শুনছি কক্সবাজারের নব্য গডফাদার শিলং থেকে এসেছে। ঘের দখল করছে, মানুষের জায়গাজমি দখল করছে। চাঁদাবাজি দখল করছে। আবার নাকি সে সংস্কার বুঝে না। নাম না বললাম। কক্সবাজারের জনতা এ ধরনের সংস্কারবিরোধী, যে পিআর বোঝে না রাজপথে তাঁদের দেখিয়ে দিবে ইনশা আল্লাহ।’ কক্সবাজারের সমাবেশে এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর এমন মন্তব্যে চকরিয়া পৌর শহরের জনতা শপিং সেন্টার চত্বরে করা জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) পথসভা মঞ্চ ভেঙে দিয়েছেন বিএনপি ও ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা। পরে বিএনপির নেতা-কর্মীরা সমাবেশস্থল দখল করে নিয়ে স্লোগান দেন। ট্রাকের ওপর মঞ্চটি করা হয়েছিল। আজ শনিবার বিকেল পৌনে চারটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। পরে সেনাবাহিনী ও পুলিশ গিয়ে তাঁদের ছত্রভঙ্গ করে।

বিকেল পাঁচটার দিকে সেখানে পথসভায় বক্তব্য দেওয়ার কথা ছিল এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামসহ কেন্দ্রীয় নেতাদের।

বিএনপির নেতা-কর্মীরা বলেন, আজ দুপুরে কক্সবাজার শহরে এক সমাবেশে এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদকে নিয়ে আপত্তিকর বক্তব্য দেন। এটি বিএনপির নেতা-কর্মীদের হৃদয়ে আঘাত করেছে। এই বক্তব্যের পর চকরিয়াসহ কক্সবাজার জেলায় বিএনপির নেতা-কর্মীরা রাজপথে নেমে প্রতিবাদ করেন। বিকেল চারটা থেকে চকরিয়ায় মহাসড়কে বিএনপির নেতা-কর্মীদের মিছিল শুরু হয়। তাঁরা সালাহউদ্দিনের পক্ষে স্লোগান দিতে থাকেন।

প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বলেন, দুপুর থেকে এনসিপির পক্ষে মঞ্চ তৈরি করে মাইকিং করা হচ্ছিল। হঠাৎ বিকেল পৌনে চারটার দিকে কিছু লোক লাঠিসোঁটা নিয়ে মঞ্চে হামলা করেন। এনসিপির মাইকিং করা লোকজনকে তাড়িয়ে দেন।

এনসিপির নেতা-কর্মীরা বলেন, আজ বিকেল পৌনে চারটার দিকে ছাত্রদল ও বিএনপির নেতা-কর্মীরা চকরিয়া জনতা শপিং সেন্টার চত্বরে বানানো ট্রাক মঞ্চটি ভেঙে ফেলেন। এ সময় সমাবেশের ব্যানার ছিঁড়ে ফেলেন ও ট্রাকের কাচ ভাঙচুর করেন। তাৎক্ষণিক সেনাবাহিনী সমাবেশস্থলে পৌঁছে হামলাকারীদের ধাওয়া দেয়।

এনসিপির চকরিয়া উপজেলা সংগঠক খাইরুল বাশার বলেন, ছাত্রদল ও বিএনপির নেতা-কর্মীরা লাঠিসোঁটা নিয়ে সমাবেশের মঞ্চ ভাঙচুর করেছেন। ব্যানার ছিঁড়ে ও ট্রাকের কাচ ভাঙচুর করেছেন। পরে বিএনপির নেতা-কর্মীরা সমাবেশস্থল দখল করে নিয়ে স্লোগান দেন।

চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘সংঘর্ষ এড়াতে পুলিশ ও সেনাবাহিনী সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। মঞ্চ ভাঙচুরের বিষয়টি এখনো আমরা জানি না।’

এনসিপির কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম মুখ্য সংগঠক ইমন সৈয়দ প্রথম আলোকে বলেন, ‘চকরিয়ায় আমাদের সমাবেশ ছিল। কিন্তু বিএনপির নেতা-কর্মীরা মঞ্চ ভাঙচুর করেছেন। এ কারণে সেখানে অনুষ্ঠান হয়নি। আমাদের নেতা-কর্মীরা চকরিয়ায় অবস্থান করেননি। আমরা বর্তমানে (বিকেল ৫টা ৫ মিনিটে) লামা-থানচি সড়কের ফাসিয়াখালী এলাকায় অবস্থান করছি। আমাদের কেন্দ্রীয় নেতা-কর্মীরাও সঙ্গে আছেন। এখানে বিএনপির নেতা-কর্মীদের একটা জটলা রয়েছে। আমরা আতঙ্কিত অবস্থায় আছি।’

Share