
বিশেষ প্রতিবেদক : নির্বাচন কমিশনে জাতীয় ন্যায় বিচার পার্টি নামে একটি রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের আবেদন করেছে। তারা নয়াপল্টনের ইসলাম টাওয়ারের সপ্তম তলাকে দলীয় কার্যালয় হিসেবে দেখিয়েছে। ইসলাম টাওয়ারের সপ্তম তলায় গিয়ে কোনো রাজনৈতিক দলের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি। সেখানে ‘আল আমিন ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস’সহ বেশ কয়েকটি ট্রাভেল এজেন্সি ও অন্য চার-পাঁচটি প্রতিষ্ঠানের অফিস রয়েছে।
ইসিতে জমা দেওয়া আবেদনে দলটির চেয়ারম্যান হিসেবে মো. কামরুজ্জামানের নাম উল্লেখ রয়েছে। আবেদনে উল্লেখিত মুঠোফোন নম্বরে কল করা হলে মো. কামরুজ্জামান বলেন, ‘আগে তো সবকিছু সিস্টেম অনুযায়ী করতে হয়। সে জন্য আল আমিন ট্রাভেলসকে আমরা অস্থায়ী কার্যালয় হিসেবে দেখিয়েছি। নিবন্ধনের আবেদন করতে তাড়াতাড়ি এই ঠিকানা দেওয়া হয়েছে। পরবর্তী সময়ে অফিস নেব।’
রাজধানীর পুরানা পল্টনের ৫৪ নম্বর বাড়িটিকে কেন্দ্রীয় কার্যালয় হিসেবে দেখিয়ে নিবন্ধনের আবেদন করেছে বাংলাদেশ তিসারী ইনসাফ দল নামে আরেকটি রাজনৈতিক দল। কিন্তু সেই ঠিকানায় গিয়ে কোনো রাজনৈতিক দলের সাইনবোর্ড দেখা যায়নি। এখানে কোনো রাজনৈতিক দলের অস্তিত্ব সম্পর্কে জানেন না স্থানীয় লোকজনও।
পুরানা পল্টনের ‘আজাদ প্রোডাক্টসের গলি’ বলে পরিচিত ওই গলির ৫৪ নম্বর বাড়িটি মূলত তিনতলা। এর মধ্যে তৃতীয় তলা দীর্ঘ সময় ধরে বন্ধ রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় লোকজন। তাঁরা আরও জানান, দ্বিতীয় তলায় ‘ভোজন রেস্তোরাঁ’ নামে একটি রেস্তোরাঁ থাকলেও গত বছরের ৫ আগস্টের পর থেকে সেটি বন্ধ রয়েছে। আর নিচতলায় ‘মুসলিম হোটেল অ্যান্ড কাবাব ঘর’ নামে একটি খাবারের দোকান রয়েছে।
সরেজমিন ভবনের নিচতলার এক অংশে থাকা হোটেলটি খোলা পাওয়া গেলেও অপর অংশে থাকা লোহার গেট বন্ধ পাওয়া যায়। তবে ভেতরে কিছু মানুষ অবস্থান করছিলেন। বাংলাদেশ তিসারী ইনসাফ দল সম্পর্কে জানতে চাইলে তাঁরা বেশ অবাকই হন। এই ভবনে রাজনৈতিক দলের অস্তিত্ব রয়েছে—এমনটা তাঁরা কখনো শোনেননি বলে জানান। তাঁরা আরও জানান, গত বছরের জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের পর থেকে ভবনের এ অংশ কার্যত বন্ধ রয়েছে। কাজেই রাজনৈতিক দলের কোনো কার্যালয় থাকার প্রশ্নই আসে না।
নির্বাচন কমিশনে (ইসি) জমা দেওয়া আবেদনে দলটির চেয়ারম্যান হিসেবে মো. মিনহাজ প্রধানের নাম উল্লেখ রয়েছে। সেখানে দেওয়া মুঠোফোন নম্বরে কল করা হলে তিনি বলেন, ‘ভবনের ওপরের তলাগুলোতে সংস্কারকাজ চলমান। আমাদের অফিসকক্ষেরও সংস্কার চলছে।’ সেটি কত তলায়, এ প্রশ্নের জবাবে মিনহাজ প্রধান তৃতীয় তলায় বলে উল্লেখ করেন। তৃতীয় তলা দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে বলে স্থানীয় লোকজনের ভাষ্য জানালে তাঁরা নিয়মিত মুসলিম হোটেলে বসেন বলে জানান মিনহাজ প্রধান।
মুসলিম হোটেল অ্যান্ড কাবাব ঘরের কর্মচারীদের দলটির বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে তাঁরা কিছু বলতে পারেননি। তবে হোটেলের ব্যবস্থাপক মো. সোহাগ মিনহাজ প্রধানকে চিনতে পারেন। হোটেলের একটি কোণ দেখিয়ে সোহাগ বলেন, ‘তিনি এখানে আসেন নাশতা খেতে। রাজনীতি বিষয়ে কথাবার্তা বলেন। কিন্তু আমাদের হোটেলে রাজনৈতিক দলের কার্যালয় নেই। হোটেলে কীভাবে রাজনৈতিক দলের কার্যালয় হয়?’
নয়াপল্টনের ডিআইটি এক্সটেনশন রোডের ৫৩ নম্বর বাড়িটিকে কেন্দ্রীয় কার্যালয় দেখিয়ে ইসিতে নিবন্ধনের আবেদন করেছে বাংলাদেশ ইউনাইটেড পার্টি নামে একটি দল। সেই ঠিকানায় গিয়ে পুরো ভবনে কোনো রাজনৈতিক দলের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি।
নিবন্ধনের আবেদনে দলটির দপ্তর সম্পাদক হিসেবে মো. মাসুদ মিয়ার নাম উল্লেখ রয়েছে। এ বিষয়ে একাধিকবার তাঁর সঙ্গে মুঠোফোনে কথা হয়। একেক সময় তিনি একেক কথা বলেছেন। প্রথমে তিনি বলেন, ভবনের ষষ্ঠ তলায় কেন্দ্রীয় কার্যালয় করার কাজ চলছে। এখনো শেষ হয়নি। আরেকবার বলেন, একটি কক্ষ তালাবদ্ধ রয়েছে, সেটিই কেন্দ্রীয় কার্যালয় হবে।
কমিটি গঠনসহ অন্যান্য প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে কি না, জানতে চাইলে মাসুদ মিয়া বলেন, ‘এখনো সব কাজ শেষ হয়নি। দ্রুত শেষ করার চেষ্টা করছি।’
ওই ভবনের ষষ্ঠ তলায় গিয়ে একটি কক্ষে সংস্কারকাজ চলতে দেখা গেছে। সেখানে মো. জিসান নামের একজন মাসুদ মিয়ার আত্মীয় পরিচয় দিয়ে জানান, এখানে ট্রাভেল অ্যান্ড রিক্রুটিং এজেন্সির অফিস হবে। নাম অভি ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল। রাজনৈতিক দল হবে কি না, তা জানেন না।
দক্ষিণ যাত্রাবাড়ীর শহীদ ফারুক সড়কের ১০২/৪ নম্বর বাড়ির পাঁচতলাকে দলের কার্যালয় দেখিয়ে ইসিতে নিবন্ধনের আবেদন করেছে ‘জাস্টিস ফর হিউমিনিটি পার্টি’ নামে একটি দল। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেল ভিন্ন পরিস্থিতি।
মূল সড়ক থেকে সরু গলির ভেতরে ঢুকে ৪-৫টি বাড়ি পেরোলে ১০২/৪ নম্বর বাড়িটি দেখতে পাওয়া যায়। কিন্তু এটি সুউচ্চ নয়; বরং এটি একটি আধা পাকা একতলা বাড়ি। বাড়ির সামনে ঝোলানো হোল্ডিং নম্বর দেখে ঠিকানা নিশ্চিত হওয়া গেছে। দুই কক্ষের এই বাড়িতে একটি পরিবার ভাড়া থাকে। তবে ভবনের সামনে রাজনৈতিক দলের কোনো সাইনবোর্ড নেই।
আবেদনে দলটির চেয়ারম্যান হিসেবে মো. শাহজালালের নাম উল্লেখ রয়েছে। সেখানে উল্লেখিত মুঠোফোন নম্বরে কল করা হলে শামীম নামের একজন রিসিভ করে বলেন, নতুন করে অফিস ভাড়া নেওয়ায় অনেকেই এ ঠিকানা জানেন না, তাঁকে চেনেনও না। তিনি অফিসের সামনে এসে প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা বলবেন বলে ফোন রাখেন।
কিছুক্ষণ পর দলটির সাংগঠনিক সম্পাদক পরিচয়ে দেলোয়ার হোসেন নামের একজন প্রতিবেদকের মুঠোফোনে কল করে জানালেন, তিনি উল্লেখিত ঠিকানায় এসে প্রতিবেদকের সঙ্গে দেখা করবেন। তবে তিনি সেখানে না এসে মূল সড়কে দেখা করতে বলেন। এরপর তিনি প্রতিবেদককে নিয়ে মূল সড়কের ৩১/সি নম্বর বাড়ির পাঁচতলায় যান। সেখানে দুটি ছোট কক্ষে তিনটি অনলাইন ও দৈনিক পত্রিকার অফিসের কার্যক্রম চলে।
নিজেকে একটি পত্রিকার বিভাগীয় প্রতিনিধি পরিচয় দিয়ে দেলোয়ার হোসেন বলেন, সমাজসেবা করেন, এমন ব্যক্তিদের নিয়ে তাঁরা দল গঠন করেছেন। ক্ষমতায় যাওয়াই তাঁদের লক্ষ্য। ক্ষমতায় যেতে পারলে তাঁরা সমাজসেবার নজির স্থাপন করতে চান।
ভিন্ন পরিচয় ব্যবহার কেন, জানতে চাইলে দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘এটা আমাদের অস্থায়ী কার্যালয়। মূলত তাড়াহুড়া করতে গিয়ে আবেদনে ভুল হয়েছে। পরে সংশোধন করে ৩১/সি নম্বর বাড়িটিকে কার্যালয় হিসেবে উল্লেখ করব।’
আগে ১০২/৪ বাড়িতেই তাঁদের কার্যালয় ছিল বলে দাবি করেন দেলোয়ার হোসেন। তবে বাড়িটি নিজেদের বলে দাবি করেন সেখানে বসবাসকারী মো. রাব্বি। তিনি বলেন, ‘এই বাড়ির মালিক ইস্কান্দার শেখ, তিনি আমার বাবা। আমরা এ বাড়িতেই থাকি। এখানে কোনো রাজনৈতিক দলের অফিস কখনো ছিল না। যাঁরা এমনটি বলছেন, তাঁরা ভুয়া পরিচয় ব্যবহার করেছেন।’
পুরানা পল্টনের শাওন টাওয়ারের দশম তলাকে কেন্দ্রীয় কার্যালয় দেখিয়ে নিবন্ধনের আবেদন করেছে বাংলাদেশ আজাদী পার্টি। কিন্তু ওই ভবনের দশম তলায় পাঁচ-ছয়টি প্রতিষ্ঠানের কার্যালয়ের দেখা মিললেও রাজনৈতিক দলের কোনো অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি।
ইসিতে করা আবেদনে দলটির চেয়ারম্যান হিসেবে নাম রয়েছে আবুল কালাম আজাদের। ফোন করা হলে তিনি বলেন, ‘ধরে নেন, আমাদের অফিস এখানে আছে। এর বেশি কিছু লেখার দরকার নেই। আমরা নতুন দল হিসেবে এখানে অস্থায়ী কার্যালয় দিয়েছি।’ কিন্তু কোন কক্ষটি অস্থায়ী কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার করছেন, জানতে চাইলে তিনি আমতা আমতা করেন।
৮৫/১/এ, পুরানা পল্টন লেন—এ ঠিকানাকে কেন্দ্রীয় কার্যালয় দেখিয়ে ইসিতে নিবন্ধনের আবেদন করেছে বাংলাদেশ নাগরিক পার্টি। কিন্তু পুরো ভবন খুঁজে কোনো রাজনৈতিক দল পাওয়া যায়নি। আবেদনে উল্লেখিত দলটির চেয়ারম্যান মো. আমজাদ হোসেন সজলের মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।
ভবনটির তত্ত্বাবধায়ক আলমগীর হোসেন জানান, ভবনটিতে ‘পিপলস পার্টি’ নামে একটি রাজনৈতিক দলের কার্যালয় ছিল। কিন্তু গত বছরের রমজানের পর ভবনটির মালিক তাদের বের করে দেন। এরপর নতুন করে কোনো রাজনৈতিক দল এখানে অফিস ভাড়া নেয়নি।
ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি নামে একটি দল ১১৬/১, নয়াপল্টন, বক্স কালভার্ট রোড ঠিকানাকে তাদের কেন্দ্রীয় কার্যালয় দেখিয়ে নিবন্ধনের আবেদন করেছে। কিন্তু সরেজমিন সেখানে মদিনা ইঞ্জিনিয়ারিং নামে একটি দোকানের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে।
মুঠোফোনে কল করা হলে দলটির চেয়ারম্যান মো. আবু তাহের বলেন, ‘আমাদের আগের অফিসের ঠিকানা ছিল ১১৬/১। আমাদের নতুন অফিস সিদ্ধেশ্বরীতে। নির্বাচন কমিশনে আবেদনের সময় নতুন ঠিকানা মার্ক করে দিয়েছিলাম। কিন্তু কমিশন ঠিকানা ভুল দিয়ে থাকতে পারে।’ ১১৬/১ ঠিকানায় কোনো অফিসের অস্তিত্ব নেই জানালে তিনি বলেন, তাহলে ১১৬/২ হতে পারে। অবশ্য ওই ভবনে ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টির একটি সাইনবোর্ড দেখা গেছে।
পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডের প্রীতম জামান টাওয়ারে বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল ও রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্মের অবস্থান। ভবনটির ১৫ তলার ওপরে ছাদের এক কর্নারে দুটি দলের কার্যালয়। সেগুলো হলো ন্যাশনাল লেবার পার্টি ও জনতার অধিকার পার্টি। এর মধ্যে লেবার পার্টির কক্ষটি তুলনামূলক বড় হলেও অধিকার পার্টির কক্ষটি অপেক্ষাকৃত ছোট। এটিকেই আবার কেন্দ্রীয় কার্যালয় হিসেবে দেখিয়েছে ‘দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলন’ নামে আরেকটি দল।
দলটির চেয়ারম্যান হিসেবে কে এম রকিবুল ইসলাম রিপনের নাম উল্লেখ রয়েছে। মুঠোফোনে তিনি বলেন, ‘আমরা অধিকার পার্টির ওখানে একসঙ্গে আছি। আগে রুমের দরজায় দলের নামসংবলিত স্টিকার ছিল। মনে হয় সেটা পড়ে গেছে। আমরা আবার স্টিকার লাগাব।’
কক্ষ ব্যবহারের বিষয়ে জানতে চাইলে জনতার অধিকার পার্টির চেয়ারম্যান মো. তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘রিপন তার রাজনৈতিক সব কর্মসূচি আমার এখানে করে। এতে আমার কোনো আপত্তি নেই। এটাকে ইতিবাচকভাবে দেখতে পারেন।’
পুরানা পল্টনের আজাদ প্রোডাক্টসের গলির নূরজাহান শরীফ প্লাজায় বাংলাদেশ বেকার মুক্তি পরিষদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়। আনুমানিক ১২ ফুট লম্বা ও ৬ ফুট প্রশস্ত ছোট একটি কক্ষে পাঁচটি চেয়ার, একটি বুকশেলফ ও তিন সিটের একটি সোফা দিয়ে সাজানো হয়েছে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়। এই কক্ষের আশপাশে তিন-চারটি ট্রাভেল এজেন্সির অফিস।
মুঠোফোনে কল করার পর ছুটে এলেন দলটির সভাপতি মো. আতিকুর রহমান রাজা। তিনি বলেন, ‘২০১১ সালে সামাজিক সংগঠন হিসেবে শুরু করে গত বছরের ৫ আগস্টের পর রাজনৈতিক দল গঠন করি।’ এর কারণ হিসেবে তিনি বড় রাজনৈতিক দলগুলোর নিজেদের নেতা–কর্মীর বাইরে সাধারণ বেকারদের গুরুত্ব না দেওয়ার বিষয়টি তুলে ধরেন। চার মাস আগে এই কক্ষ ভাড়া নিয়েছেন বলে জানান তিনি।
আতিকুর রহমান বলেন, ‘আমরা বেকারদের জন্য কাজ করতে চাই। ছোট পরিসরে শুরু করেছি, সে জন্য কক্ষও ছোট। আপাতত বড় করার লক্ষ্য নেই।’
নয়াপল্টনের ইস্টার্ন ট্রেড সেন্টারে বাংলাদেশ ডেমোক্রেটিক মুভমেন্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়। ভবনটির ১৩তম তলায় সিঁড়ির সামনেই দলের নামফলক। পাশেই খুঁটিতে বাঁধা জাতীয় পতাকা উড়ছে। কিন্ত স্বাভাবিক রাজনৈতিক দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের মতো চিত্র দেখা যায়নি। কেমন একটা নীরব নীরব ভাব। কার্যালয়ও তালাবদ্ধ।
পার্শ্ববর্তী অফিসকক্ষগুলোতে দলটির বিষয়ে জানতে চাইলে অনেকে বিস্ময় প্রকাশ করেন। তাঁরা দলটির সভাপতি মো. আলমগীর হোসেনকে আইনজীবী হিসেবেই চেনেন। কিন্তু তাঁর রাজনৈতিক দল আছে, এটি জানেন না।
মো. আলমগীর হোসেন মুঠোফোনে বলেন, ‘এখানে আমার অফিস ছিল। পরে সুপ্রিম কোর্টে অফিস নেওয়ার পর এখানে দলের রাজনৈতিক কার্যালয় করেছি। ২০১৮ সালের নির্বাচনের পর এই দল গঠন করেছি।’ কেন্দ্রীয় কমিটি গঠনসহ নির্বাচন কমিশনের সব শর্ত পূরণ করেই তিনি আবেদন করেছেন বলে দাবি করেন।
৮৫/১, পল্টন লাইন, কালভার্ট রোড ঠিকানা দিয়ে ইসিতে নিবন্ধনের আবেদন করেছে বাংলাদেশ জনজোট পার্টি। সেখানে গিয়ে দেখা যায়, ছোট একটি কক্ষে ছয়টি প্লাস্টিকের চেয়ার, ফোমের চারটি ছোট চেয়ার, দুটি বড় চেয়ার, একটি প্লাস্টিকের টুল ও একটি প্লাস্টিকের সেলফ দিয়ে কেন্দ্রীয় কার্যালয় সাজানো হয়েছে। কক্ষের ভেতরে একটি বড় ব্যানারে দলের নাম এবং অন্য কিছু ছোট ছোট ব্যানারে দলের দাবি, ইশতেহার তুলে ধরা হয়েছে।
দলটির চেয়ারম্যান মুজাম্মেল মিয়াজী বলেন, ‘২০২৪ সালের ১৪ মার্চ আমরা দল গঠন করেছি। আর গত বছরের ৫ আগস্টের পর দলের কার্যক্রম বেড়েছে। আমরা কেন্দ্রীয়, জেলা ও উপজেলার কমিটি গঠন করছি।’ তবে ইসির সব শর্ত মেনে নিবন্ধনের আবেদন করতে পারেননি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ইসি সময় দিলে এসব শর্ত পূরণের চেষ্টা করবেন।
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে নতুন রাজনৈতিক দল হিসেবে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) নিবন্ধিত হওয়ার জন্য আবেদন জমা দিয়েছে ১৪৭টি দল। দুই দফায় নিবন্ধনের আবেদন জমা দেওয়া দলগুলোর নামের তালিকা গতকাল সোমবার প্রকাশ করেছে ইসি।