ট্রেনে ধাক্কা লেগে আহত মায়া হরিণ, ট্রেন থামিয়ে জবাই


মৌলভীবাজার প্রতিনিধি : মৌলভীবাজারের লাউয়াছড়া বনে ট্রেনের ধাক্কায় আহত হয় একটি মায়া হরিণ; পরে ট্রেন থামিয়ে হরিণটি জবাই করে কয়েকজন লোক। খবর পেয়ে শ্রীমঙ্গল স্টেশনে ট্রেনের একটি বগি থেকে বস্তাবন্দি হরিণটি উদ্ধার করে পুলিশ।

গত বুধবার সকালে সিলেট থেকে ঢাকাগামী ‘কালনী’ এক্সপ্রেস ট্রেনটি কমলগঞ্জের লাউয়াছড়া বনাঞ্চল অতিক্রম করার সময় এ ঘটনা ঘটে।

শ্রীমঙ্গল সহকারী বন সংরক্ষক শ্যামল কুমার মিত্র বলেন, সংবাদ পেয়ে তারা শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে থানা থেকে হরিণটি বন বিভাগে নিয়ে আসেন। পরে শ্রীমঙ্গল প্রাণিসম্পদ হাসপাতালে নিয়ে ময়নাতদন্ত শেষে রাতে লাউয়াছড়া বনে মাটিচাপা দেওয়া হয়।

এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাতে শ্রীমঙ্গল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন লাউয়াছড়া ফরেস্টার আনিসুজ্জামান। তিনি জানান, ট্রেনের ইঞ্জিনে ধাক্কা লেগে হরিণটি রেললাইনের পাশে পড়ে থাকে। এ সময় ট্রেন থামিয়ে একদল অজ্ঞাত লোক হরিণটি জবাই করে ট্রেনে তোলে। তবে বনে স্টপেজ না থাকার পরও সেখানে কেন ট্রেনটি থামালো হলো তা কেউ বলতে পারছে না।

কালনী এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রী আতিকুর রহমান শিবলু বলেন, লাউয়াছড়া বনাঞ্চল এলাকায় হঠাৎ করে ট্রেন থামিয়ে দেওয়া হয়। পরে দেখা যায় একটি হরিণ জবাই করে কয়েকজন ট্রেনে নিয়ে আসছে। হরিণটি দেখার জন্য ট্রেনের কিছু যাত্রীও নেমে পড়েন।

কালবেলা পত্রিকা অনলাইনের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক তালেব হোসেন বলেন, ট্রেনটি শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে স্টেশনে পোঁছালে ইঞ্জিন বগিতে বস্তা দেখে রেল পুলিশের সন্দেহ হয়। পরে বস্তাটি খুলে সেখান থেকে গলাকাটা মায়া হরিণ উদ্ধার করে থানায় নেওয়া হয়। যারা হরিণটি জবাই করেছে তাদের শনাক্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

শ্রীমঙ্গল উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা কর্ণ চন্দ্র মল্লিক বলেন, ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হয়েছে।

মৌলভীবাজার বণ্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, হরিণটি ট্রেনে ধাক্কা লেগেছিল; কিন্তু মরেনি। ওই অবস্থায় বন বিভাগের কাছে হস্তান্তর করলে হরিণটিকে হয়তো বাঁচানো যেত।

তিনি আরও বলেন, ‘শুক্রবার বন থেকে হরিণ জবাই করে ধরে আনার ছবি পেয়েছি। পাশাপাশি যারা জবাই করেছে তাদের নামও সংগ্রহ করেছি। পুরোপুরি যাচাই করে তা প্রকাশ করব।’

শ্রীমঙ্গল বন্যপ্রাণী সেবা ফাউন্ডেশনের পরিচালক সজল দেব বলেন, ওই সময় ট্রেন কেন বনে থামল। ট্রেনের চালককে জিজ্ঞেস করলেই প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসবে।

শ্রীমঙ্গলের সহকারী স্টেশন মাস্টার সাখওয়াত হোসেন বলেন, লাউয়াছড়া বনের মধ্যে ট্রেন দাঁড়ানোর স্টেশন নেই। কালনী এক্সেপ্রেস সেখানে দাঁড়িয়েছে কিনা তিনি জানেন না।

Share