নিজস্ব ডেস্ক প্রতিবেদক : সম্পর্কের অবনতির কারণে বছর খানেকের বেশি সময় ধরেই আলাদা থাকছিলেন এক দম্পতি। মাস কয়েক আগে বিবাহবিচ্ছেদ চেয়ে জয়নগর থানায় অভিযোগও করেছিলেন স্ত্রী। প্রায় ভাঙতে বসা দাম্পত্যকে জোড়া লাগিয়ে যেন অসম্ভবকেই সম্ভব করে তুলল জয়নগর থানার পুলিশ।শুধু তাই নয়, স্থানীয় মন্দিরে নিয়ে গিয়ে কার্যত দ্বিতীয় বার বিয়ে দেওয়া হলো দম্পতিকে। হাসি মুখে নতুনভাবে সব কিছু শুরু করার শপথ নিলেন দম্পতিও।
এগারো বছর আগে প্রেম করে বিয়ে করেছিলেন ভারতের জয়নগরের কাঁসারিপাড়ার বাসিন্দা প্রদীপ দাস ও শাহজাদাপুরের বাসিন্দা শম্পা দাস। তাদের ঘরে আট বছরের একটি পুত্রসন্তানও রয়েছে। সব কিছু ঠিকই চলছিল। কিন্তু দেড় বছর আগে প্রদীপের বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্ক আছে বলে অভিযোগ তোলেন স্ত্রী শম্পা। আর সেই থেকেই সংসারে নেমে আসে অশান্তি। স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কে অবনতি হওয়ার কারণে গত পনেরো মাস পরস্পরের থেকে আলাদা থাকতে শুরু করেন শম্পা ও প্রদীপ। স্বামীর থেকে বিবাহবিচ্ছেদ চেয়ে মাস তিনেক আগে জয়নগর থানার দ্বারস্থ হন ওই গৃহবধূ।
শম্পার মুখ থেকে সমস্ত কথা শুনে প্রদীপকেও ডেকে পাঠায় জয়নগর থানার পুলিশ। জয়নগর থানার এএসআই দীপঙ্কর দাস দু’জনকেই আলাদা আলাদাভাবে কাউন্সেলিং করতে শুরু করেন। একমাত্র সন্তানের মুখের দিকে চেয়ে দু’জনকেই একসঙ্গে নতুন করে পথ চলার পরামর্শ দেন ওই পুলিশ অফিসার। গত তিন মাস ধরে ভাঙা সংসারকে জোড়া লাগানোর জন্য বারে বারে ওই দম্পতি এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন জয়নগর থানার পুলিশকর্মীরা। শেষ পর্যন্ত সফল হয় পুলিশকর্মীদের চেষ্টা।
সমস্ত মান, অভিমান ভুলে ফের হাতে হাত রেখে একসঙ্গে পথ চলার অঙ্গীকার করেন ওই দম্পতি। শুক্রবার রাতে জয়নগর থানার পুলিশকর্মীদের উদ্যোগে থানা লাগোয়া কালীমন্দিরে ওই দম্পতিকে নিয়ে গিয়ে আরও এক বার বিয়ের ব্যবস্থা করেন পুলিশকর্মীরা। বর-কনের সাজে দু’জনকে সাজিয়ে মা কালীর সামনে আরও এক বার ওই দম্পতিকে সাংসারিক জীবনযাপনের অঙ্গীকারবদ্ধ করেন পুলিশ কর্মীরা। জয়নগর থানার পুলিশের এই উদ্যোগে খুশি ওই দম্পতি এবং তাঁদের পরিবারের সদস্যরাও। তবে স্বামী-স্ত্রী দু’জনের মুখেই থানার এএসআই দীপঙ্করবাবুর প্রশংসা।
স্বামী প্রদীপ দাস বলেন, ‘পুরোটাই জয়নগর থানার কৃতিত্ব, বিশেষত দীপঙ্করবাবু আমার পাশে থেকেছেন সব সময়ে। একটা দূরত্ব তৈরি হয়েছিল, তা মিটে গিয়েছে। আশা করছি, এবার আমরা আগের মতোই একসঙ্গে থাকতে পারব।’
তার স্ত্রী শম্পা দেবী বলেন, ‘আমাদের ছেলের উপরে এর সব থেকে বেশি প্রভাব পড়ছিল। ছেলের মুখের দিকে তাকিয়েই আমি সব ভুলে গিয়েছি। দীপঙ্করবাবুকেই বিশেষ করে ধন্যবাদ জানাতে চাই। থানার উদ্যোগে যে এ রকম কিছু হতে পারে, তা ভাবতেই পারিনি।’