নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসে সব ধরনের দলীয় ছাত্র-শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের রাজনীতি নিষিদ্ধ এবং অবিলম্বে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) নির্বাচনের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী। তাঁরা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, ক্যাম্পাসে রাজনীতি করতে এলে শেখ হাসিনার মতোই দেশ ছেড়ে পালাতে হবে।
এই শিক্ষার্থীরা আজ শুক্রবার দুপুরে মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের বিভিন্ন এলাকা প্রদক্ষিণ করেন। পরে তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র–সংলগ্ন (টিএসসি) রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে সমাবেশ করেন।
সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী বিজয় একাত্তর হলের ছাত্র নাফিউর রহমান বলেন, ‘ক্যাম্পাসে যদি কেউ দলীয় রাজনীতি করতে আসে, হলগুলো যদি আর কেউ দখল করতে আসতে চায়, তাদের হাসিনার মতোই পালাতে হবে। কেউ ক্যাম্পাস দখলের ষড়যন্ত্র করলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এটি প্রতিহত করবে। হল কিংবা ক্যাম্পাসের দলীয়করণ, দলীয় দাসত্ব শিক্ষার্থীরা আর মেনে নেবে না।’
নিরাপদ ক্যাম্পাসের একটি রূপরেখা দিয়ে নাফিউর বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ও হলগুলো যাতে আর কেউ দখল করতে না পারে, সে জন্য ক্যাম্পাসে দলীয় শিক্ষক-ছাত্র, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে। ক্যাম্পাসের ভেতর দলীয় ব্যানারে বা কোনো দলের পক্ষে-বিপক্ষে মিছিল-মিটিং, সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করতে হবে। তবে ছাত্রদের নিজেদের দাবিসংশ্লিষ্ট কোনো বিষয় বা আন্তর্জাতিক কোনো মানবাধিকারের ইস্যুতে ছাত্ররা ঐক্যবদ্ধ সমাবেশ করতে পারবেন। এ ছাড়া অনতিবিলম্বে ডাকসু নির্বাচন দিতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক শিক্ষার্থী শামসুন্নাহার হলের সানজিদা চৌধুরী বলেন, ‘ক্যাম্পাসে আর কোনো দাসত্ব মানব না। এখানে মুক্তচিন্তার ও গবেষণার সুযোগ সৃষ্টি না করা হলে আমরা রাজপথেই থাকব। তাই যাঁরা দলীয় অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন, তাঁদের সতর্ক করছি। দলীয় রাজনীতির লাফালাফি বন্ধ করুন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে আর কোনো রাজনৈতিক অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে দেওয়া হবে না। প্রয়োজনে মরে যাব, তবু দলীয় অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে দেব না।’ গত ২৯ আগস্ট ক্যাম্পাসে সব ধরনের রাজনীতি বন্ধের দাবিতে উপাচার্যের কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের ছাত্র হৃদয় আহমেদ বলেন, স্বৈরাচার পতনের এক দফা দাবির আগে ৯ দফা দাবির মধ্যে একটি দফা ছিল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসসহ বাংলাদেশের যত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় আছে, সব ক্যাম্পাস থেকে দলীয় রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে, বিভিন্নভাবে লেজুড়বৃত্তি ও দখলদারির রাজনীতির কথা বলে ধানাইপানাই করা হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা আর কখনো কারও পুঁজি হবে না।
সমাবেশ থেকে জানানো হয়, ক্যাম্পাসে সব ধরনের রাজনীতি বন্ধের দাবিতে শিক্ষার্থীদের ধারাবাহিক কর্মসূচির পরবর্তী কর্মসূচি আগামীকাল বেলা তিনটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে সংবাদ সম্মেলন করে জানানো হবে।