নিজস্ব ডেস্ক প্রতিবেদক : পৃথিবীর সপ্তম আশ্চর্যের অন্যতম ভারতের আগ্রার তাজমহল। শিল্প-ইতিহাস-সৌন্দর্য্যের টানে বিশ্বের পর্যটকদের পছন্দের শীর্ষে মোঘল সম্রাট শাহজাহানের এই অমর কীর্তি। ইতিহাসের গন্ধে ভরপুর এই স্মৃতিসৌধের গায়ে এবার লাগলো বজ্রপাতের কলঙ্কের দাগ। ঝড়ে ভাঙল রেলিং-সিলিং।
রবিবার (৩১ মে) কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, উত্তর ভারতের বেশিরভাগ অংশে বয়ে যাওয়া মারাত্মক বজ্রপাতে তাজমহল কমপ্লেক্সের মূল ফটক এবং পাঁচটি গম্বুজের সব থেকে উচুটির নিচে একটি রেলিং সহ কিছু অংশ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ঝড়ে মূল কাঠামোর মার্বেল রেলিং এবং লাল বালি পাথরের রেলিং বেশ কিছুটা চটে গেছে। ফলস সিলিংও ভেঙে যায় ঝড়ের তাণ্ডবে।
শুধু এখানেই শেষ নয়, গর্বের তাজের একটি দরজাও ভেঙে গেছে। সঙ্গে প্রাঙ্গণের ১০টি গাছ উপড়ে যায় বলে জানিয়েছেন তাজমহল কমপ্লেক্সের সুপরিটেন্ডেন্ট বসন্ত কুমার স্বর্ণকার।
বিশ্বের সপ্তম আশ্চর্যের অন্যতম তাজমহল, করোনাভাইরাস মহামারির বিস্তার রোধের চেষ্টা ও লড়াইয়ের অংশ হিসাবে মার্চের মাঝামাঝি থেকে ভারতের শীর্ষ পর্যটন আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু তাজমহল দর্শনার্থীদের জন্য বন্ধ রয়েছে।
এজেন্সি ফ্রান্স-প্রেসের প্রকাশিত ছবিতে দেখা গেছে যে, শুক্রবার রাতে ঝড়ের পরে উত্তর প্রদেশ রাজ্যের আগ্রা শহরকে তছনছ করে দিয়েছে। শ্রমিকরা তাজমহলের মূল সমাধিটির রেলিংয়ের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ মূল্যায়ন করছে।
শুক্রবার রাতে ভারতে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টিতে আগ্রায় মৃত্যু হয় কমপক্ষে তিনজনের। এসময় ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পৃথিবীর অন্যতম আশ্চার্য স্থাপনা তাজমহল। ঝড়ে তাজমহলের লাল বেলেপাথর ও মার্বেলের রেলিংসহ কাঠের মূল দরজাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
দেশটির আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার রাতে ঝড়ের গতিবেগ ছিল ১২৪ কিলোমিটার। তার জেরে আগ্রার বিভিন্ন এলাকায় উপড়ে গেছে গাছ। ভেঙে পড়েছে দেওয়াল। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় ২০ টি বাড়ি। বাড়ির ধ্বংসস্তুপের তলায় চাপা পড়ে মৃত্যু হয়েছে ছ’বছরের এক বালিকার। এছাড়াও ফতেহবাদ টাউন একজন এবং দোকিতে একজন মারা গেছে।
তাজমহলে আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার (এএসআই) কনজারভেশন অ্যাসিসট্যান্ট অঙ্কিত নামদেব জানান, ‘বৃষ্টি এবং ঝড়ের কারণে ঐতিহাসিক স্থাপত্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যমুনার দিকে মূল স্তম্ভের পিছনে মার্বেল রেলিংয়ের একাংশ পড়ে গেছে। বেলেপাথরের একটি রেলিং পড়ে গেছে মেঝেতে। তাজমহল চত্বরের প্রায় ১০ টি গাছও উপড়ে গিয়েছে। পরিস্থিতি বিবেচনা করে সারাইয়ের কাজ হবে।’
তবে ঝড়-বৃষ্টির দাপটে এই প্রথম ক্ষতিগ্রস্ত হল না তাজমহল। ২০১৮ সালের ১১ এপ্রিল এবং ২ মে’তেও একইভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল ঐতিহাসিক স্থাপত্যটি।
সূত্র- স্ট্রেইট টাইমস, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।