নিজস্ব ডেস্ক প্রতিবেদক : তালেবানের অন্যতম শীর্ষ নেতা আবদুল গনি বারাদার (মোল্লা বারাদার) গুলিতে নিহত হওয়ার নাকচ করে দিয়েছে সংগঠনটি। একই সঙ্গে তাঁর একটি অডিও বার্তাও প্রকাশ করেছে তালেবান।
আফগানিস্তানে তালেবানের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পর তাদের অভ্যন্তরীণ বিভক্তির খবর ছড়িয়ে পড়ে। তাদের অন্যতম শীর্ষ নেতা মোল্লা বারাদার প্রতিপক্ষের সঙ্গে গোলাগুলিতে নিহত হয়েছেন। গত সপ্তাহে তালেবান সরকারের উপপ্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত হন মোল্লা বারাদার।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়, তালেবানের মুখপাত্র সুহাইল শাহিন বলেন, মোল্লা বারাদার তাঁর নিহত বা আহত হওয়ার খবর প্রত্যাখ্যান করে অডিও বার্তা দিয়েছেন। এক টুইট বার্তায় শাহিন বলেন, ‘তিনি (মোল্লা বারাদার) বলেছেন, এ খবর মিথ্যা এবং সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।’
এ ঘটনার পর তালেবানের পক্ষ থেকে একটি ভিডিও ফুটেজও প্রকাশ করা হয়। ভিডিওতে আফগানিস্তানের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর কান্দাহারে এক বৈঠকে বারাদারকে দেখানো হয়েছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে এই ভিডিও ফুটেজের সত্যতা যাচাই করতে পারেনি রয়টার্স।
রয়টার্সের খবরে বলা হয়, কয়েক দিন ধরেই গুজব ছড়াচ্ছিল যে বারাদারের সমর্থকদের সঙ্গে হাক্কানি নেটওয়ার্কের প্রধান সিরাজুদ্দিন হাক্কানির সমর্থকদের সংঘর্ষ হয়েছে। হাক্কানি নেটওয়ার্ক হলো তালেবানের সামরিক শাখা। পাকিস্তান সীমান্তসংলগ্ন আফগানিস্তানের বেশ কিছু এলাকায় হাক্কানি নেটওয়ার্কের ঘাঁটি। আফগানিস্তানে তালেবান নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত হওয়ার আগে দেশটির বিভিন্ন এলাকায় ভয়াবহ কিছু আত্মঘাতী হামলা চালায় সংগঠনটি।
হাক্কানির মতো সামরিক কমান্ডারের সঙ্গে বারাদারের মতো রাজনৈতিক দপ্তরভিত্তিক নেতাদের সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দ্বিতার জল্পনাকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন ধরনের গুজব ছড়িয়ে পড়ে। বারাদারের নেতৃত্বে কূটনৈতিক প্রচেষ্টায় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমঝোতায় পৌঁছায় তালেবান।
তবে নিজেদের মধ্যে অভ্যন্তরীণ বিভক্তি নিয়ে এসব জল্পনা বরাবর অস্বীকার করে আসছে তালেবান।
একসময় এই বারাদারকেই তালেবান সরকারের সম্ভাব্য প্রধান বলে মনে করা হতো। বেশ কিছুদিন ধরেই তাঁকে প্রকাশ্যে দেখা যাচ্ছে না। এমনকি গত রোববার কাবুলে কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুল রহমান আল থানির সঙ্গে তালেবানের মন্ত্রী পর্যায়ের প্রতিনিধিদের বৈঠকেও বারাদার উপস্থিত ছিলেন না।
গত ১৫ আগস্ট কাবুল নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার পর থেকে তালেবানের শীর্ষ নেতা হাইবাতুল্লাহ আখুন্দজাদাকেও এখন পর্যন্ত প্রকাশ্যে দেখা যায়নি। তবে গত সপ্তাহে নতুন সরকার গঠিত হওয়ার পর একটি বিবৃতি দিয়েছিলেন তিনি।
তালেবানের প্রতিষ্ঠাতা মোল্লা ওমরের মৃত্যুর দুই বছর পর এটি প্রকাশ করে তালেবান। মূলত এই কারণেই তালেবানের শীর্ষ নেতার মৃত্যুর বিষয়ে জল্পনা তৈরি হয়।