তিন মাসে রাষ্ট্রীয় ব্যাংকে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ২০ হাজার কোটি টাকা

নয়াবার্তা প্রতিবেদক : রাষ্ট্রীয় মালিকানার ব্যাংকের খেলাপি ঋণ আরও বাড়ল। প্রথম তিন মাসে এসব ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ২০ হাজার ৮৯ কোটি টাকা বেড়ে গত মার্চ শেষে ৮৫ হাজার ৮৭০ কোটি টাকায় ঠেকেছে। যা ওই সময় পর্যন্ত বিতরণ করা ঋণের ২৪ দশমিক ৬০ শতাংশ। গত ডিসেম্বর শেষে ব্যাংকগুলোর ৬৫ হাজার ৭৮১ কোটি টাকা বা ২০ দশমিক ৯৯ শতাংশ ছিল খেলাপি।

খেলাপি ঋণ বৃদ্ধির এ খবর এমন এক সময়ে এলো যখন আইএমএফের শর্ত মেনে তা কমানোর কথা বলেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ২০২৬ সালের মধ্যে এসব ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ১০ শতাংশের নিচে নামানোর লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। তবে কমা তো দূরে থাক, উল্টো আরও বেড়েছে। পুরো ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণের তথ্য পাওয়া যায়নি। বাজেট প্রকাশের দিন বাংলাদেশ ব্যাংক এই তথ্য প্রকাশ করবে বলে জানানো হয়েছে। তবে বেশির ভাগ ব্যাংকের খেলাপি বেড়েছে বলে জানা গেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, রাষ্ট্রীয় মালিকানার ৬ বাণিজ্যিক ব্যাংকের মধ্যে খেলাপি ঋণ সবচেয়ে বেশি বেড়েছে বিভিন্ন ঋণ জালিয়াতির কারণে আলোচিত জনতা ব্যাংকে। মার্চ শেষে ব্যাংকটির খেলাপি ঋণ বেড়ে ৩০ হাজার ৪৯৫ কোটি টাকা হয়েছে যা ব্যাংকটির মোট ঋণের ৩১ শতাংশ। গত ডিসেম্বরেও এটা ছিল ১৭ হাজার ৫০১ কোটি টাকা বা মোট ঋণের ১৯ দশমিক ২০ শতাংশ।

অগ্রণী ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ১৮ হাজার ৯৬ কোটি টাকা থেকে বেড়ে ২০ হাজার ৮৬৪ কোটি টাকা হয়েছে যা মোট ঋণের ২৮ শতাংশ। সোনালী ব্যাংকের খেলাপি ঋণ বেড়ে হয়েছে ১৪ হাজার ৯৮৮ কোটি টাকা যা মোট ঋণের ১৪ দশমিক ৮৪ শতাংশ। গত ডিসেম্বর শেষে ছিল ১৩ হাজার ১৫০ কোটি টাকা।

রাষ্ট্রীয় মালিকানার রূপালী ব্যাংকের খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে ১০ হাজার ৩৫৭ কোটি টাকায় যা মোট ঋণের ২১ শতাংশ। গত ডিসেম্বর শেষে ব্যাংকটির খেলাপি ঋণ ছিল ৭ হাজার ৮৪৭ কোটি টাকা বা ১৭ দশমিক ৮১ শতাংশ। একীভূতকরণের উদ্যোগ নিয়ে পিছিয়ে আসা বেসিক ব্যাংকের খেলাপি ঋণ গত ডিসেম্বরের মতোই ৮ হাজার ২৯২ কোটি টাকা বা ৬৩ শতাংশ রয়েছে। আর বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ৮৭৪ কোটি টাকা বা ৩৪ শতাংশ। গত ডিসেম্বরে ব্যাংকটির খেলাপি ঋণ ছিল ৯৮২ কোটি টাকা যা মোট ঋণের ৪২ দশমিক ৪৬ শতাংশ।

সংশ্লিষ্টরা জানান, ব্যাংক খাতে সুশাসনের ঘাটতি নিয়ে বেশ আগে থেকে আলোচনা হলেও এতদিন তাতে পাত্তা দেয়নি কেন্দ্রীয় ব্যাংক। আস্থাহীনতাসহ বিভিন্ন কারণে কয়েকটি ব্যাংকের চরম সংকটের বিষয়টি সামনে এসেছে। ডলার সংকটের মধ্যে টাকার সংকটের ফলে অনেকটা বাধ্য হয়ে ব্যাংক খাত সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

Share