নিজস্ব বার্তা প্রতিবেদক : পুড়িয়ে হত্যাচেষ্টায় দগ্ধ ফেনীর মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে চিকিৎসা জন্য সিঙ্গাপুর নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সোমবার বিকেলে ঢামেক বার্ন ইউনিটে নুসরাতকে দেখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সহকারী সচিব ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া এ তথ্য জানান।
ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া সাংবাদিকদের জানান, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আমি এখানে (ঢামেক বার্ন ইউনিট) এসেছি। প্রধানমন্ত্রী ওই ছাত্রীর চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। এই ঘটনায় যারা জড়িত রয়েছে তাদের বিচার হবেই।
জানা গেছে, সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে নুসরাত জাহানের সর্বশেষ স্বাস্থ্যের অবস্থার কাগজপত্র পাঠানো হয়েছে।
সোমবার বিকেলে বিপ্লব বড়ুয়া তাকে লাইফ সাপোর্টে দেখার পর বার্ন ইউনিটের সমন্বয়ক সামন্ত লাল সেনকে সঙ্গে নিয়ে সাংবাদিকদের সামনে কথা বলেন।
সামান্ত লাল সেন বলেন, ওই শিক্ষার্থীকে যাতে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয় সে বিষয়ে কথা বলতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একটু আগে আমাকে ফোন দিয়েছিলেন। তিনি তার স্বাস্থ্যের খোঁজখবর নেন। প্রধানমন্ত্রী আমাকে বলেছেন, তাকে যদি সিঙ্গাপুরে পাঠানোর মতো হয়, তাহলে যেন দ্রুত পাঠানো হয়। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ পাওয়ার পর আমি সিঙ্গাপুরে তার চিকিৎসার কাগজপত্র পাঠিয়েছি। তারা রেসপন্স করলে আমরা দ্রুত পাঠিয়ে দেব।
উল্লেখ্য, নুসরাতকে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যাচেষ্টায় ফেনীর সোনাগাজী থানায় অজ্ঞাত পরিচয় চারজনকে আসামি করে মামলা করেন ওই ছাত্রীর ভাই।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, অজ্ঞাতপরিচয় চার আসামি ও তাদের সঙ্গীরা হত্যার উদ্দেশ্যে ওই ছাত্রীর গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দিয়েছে।
এদিকে, মাদ্রাসাছাত্রীকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় এ পর্যন্ত সাতজনকে আটক করেছে পুলিশ। তারা হলেন- মোস্তফা কামাল, নুরুল আমিন, আশরাফ, সাইফুল, আরিফ, জসীম ও আলাউদ্দিন। তারা এখন পুলিশ হেফাজতে আছে। তাদের এ মামলায় গ্রেফতার দেখানো হতে পারে।
আগুনে দগ্ধ ওই শিক্ষার্থী জীবন শঙ্কায় রয়েছেন। তার অবস্থা আগের চেয়ে অবনতি ঘটায় সোমবার দুপুরে তাকে ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটের লাইফসাপোর্টে ভর্তি করা হয়।
এদিকে, পরিবার ও স্থানীয় সূত্র জানায়, ২৭ মার্চ সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা সিরাজউদ্দৌলার বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগে মামলা করেন ওই ছাত্রীর মা।
মামলার এজাহার থেকে আরো জানা যায়, ২৭ মার্চ সকাল ১০টার দিকে অধ্যক্ষ তার অফিসের পিয়ন নূরুল আমিনের মাধ্যমে ছাত্রীকে ডেকে নেন। পরীক্ষার আধা ঘণ্টা আগে প্রশ্নপত্র দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ওই ছাত্রীর শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেন অধ্যক্ষ। পরে পরিবারের দায়ের করা মামলায় গ্রেফতার হন অধ্যক্ষ। সেই মামলা তুলে না নেয়ায় অধ্যক্ষের লোকজন ওই ছাত্রীর গায়ে আগুন দিয়েছে।