নিজস্ব বার্তা প্রতিবেদক : লন্ডনে সপরিবারে পলাতক থাকা বিতর্কিত সাবেক সেনা কর্মকর্তা কর্নেল (অব.) শহীদ উদ্দিন খানের কর্নেল পদবি বাতিল করা হয়েছে। একইসঙ্গে তাকে বরখাস্তের পরিবর্তে স্বাভাবিক অবসর গ্রহণের যে আদেশ ২০০৯ সালে দেওয়া হয়েছিল, তাও বাতিল করা হয়েছে।
আয়কর ফাঁকি দেওয়ার জেরে আদালত কর্তৃক দণ্ডিত হওয়ায় পর গত ৩ মে রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপসচিব ওয়াহিদা সুলতানা স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এই বাতিলাদেশ দেওয়া হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ‘ইতিপূর্বে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে ১৪ ডিসেম্বর ২০০৯ তারিখে জারিকৃত প্রজ্ঞাপনের ছকের ৩৫ নম্বর ক্রমিকের বিএ-২৪২৮ কর্নেল মো. শহীদ উদ্দিন খাঁন, পিএসসি (অব.) এর বরখাস্তের পরিবর্তে স্বাভাবিক অবসর সংক্রান্ত আদেশ এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে ২৩ মার্চ ২০১০ তারিখে জারিকৃত প্রজ্ঞাপনের ছকের ঘ-এর ৩৫ নম্বর ক্রমিকে বর্ণিত কর্মকর্তার কর্নেল পদে ভূতাপেক্ষ পদোন্নতিসহ অকালীন অবসর সংক্রান্ত আদেশ বাতিল করা হলো।’
শহীদ উদ্দিন খানের বিরুদ্ধে প্রবাসে পলাতক থাকা অবস্থায় রাষ্ট্রবিরোধী বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকারও অভিযোগ রয়েছে। গত বছরের ২০ ডিসেম্বর আয়কর ফাঁকির মামলায় শহীদ উদ্দিন খানকে ৯ বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত। ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১০-এর বিচারক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম এ রায় দেন।
তিন অর্থবছরে ১৭ কোটি ছয় লাখ ৪০ হাজার ১০৭ টাকা আয়কর ফাঁকি দেওয়ার অভিযোগে শহীদ উদ্দিন খানের বিরুদ্ধে ২০১৯ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর ঢাকার আদালতে মামলা করেন সহকারী কর কমিশনার শেখ আলী হাসান। এই মামলায় ঢাকার বিশেষ জজ আদালত ২০১০ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর শহীদ উদ্দিন খানের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন।
এতে বলা হয়, অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল শহীদ উদ্দিন খান ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ৭৪ লাখ ১৩ হাজার ৯৮৬ টাকার আয়ের তথ্য গোপন করে আয়কর ফাঁকির অপরাধ করেছেন। আর ২০১৬-১৭ অর্থবছরে শহীদ উদ্দিন খানের বিরুদ্ধে ৯ কোটি ২৫ লাখ ১২ হাজার ৬০০ টাকা আয়ের তথ্য গোপন করে আয়কর ফাঁকি দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়। আর ২০১৭-১৮ অর্থবছরে শহীদ উদ্দিন খানের বিরুদ্ধে সাত কোটি সাত লাখ ১৪ হাজার ২২১ টাকা আয়ের তথ্য গোপন করার অভিযোগ আনা হয়। রাষ্ট্রপক্ষ থেকে এই মামলায় ১১ জন সাক্ষীকে আদালতে হাজির করা হয়।
মামলার বাদী সহকারী কর কমিশনার শেখ আলী হাসান বলেন, আসামি শহীদ উদ্দিন খান একজন অবসরপ্রাপ্ত সামরিক কর্মকর্তা হওয়া সত্ত্বেও তার প্রকৃত আয়-ব্যয় এবং সম্পদের তথ্য গোপন করেছেন। তিনি আয়কর রিটার্ন দাখিলে মিথ্যা তথ্য দিয়ে প্রকৃত আয় ও সম্পদের তথ্য গোপন করেছেন। আর ২০১৮-১৯ অর্থবছরে তিনি আয়কর রিটার্ন দাখিল করেননি।