আনোয়ারা পারভীন : পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্তিলাভ করে স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের ৫২তম দিনকে সামনে রেখে আগামী ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ সংসদের নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশনকে দিক নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। কারণ বর্তমান ক্ষমতাশীন দল পঞ্চম মেয়াদে সরকার গঠনের লক্ষ্যে ঐতিহাসিক দিনকে সামনে রেখে ঐতিহাসিক বিজয়ের গৌরব অর্জন করতে চায়। আর তাই এই লক্ষ্য বাস্তবায়নে নির্বাচন কমিশনও সরকারের দিক নির্দেশনা অনুযায়ী ৭ জানুয়ারি রোববার দ্বাদশ সংসদের নির্বাচন অনুষ্ঠানের সম্ভাব্য তারিখ চুড়ান্ত করেছে। নির্বাচন কমিশনের একটি দায়িত্বশীল সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে।
নির্বাচন কমিশন সূত্র জানিয়েছে, দশম ও একাদশ সংসদ নির্বাচনের দৃশ্যপটের পুণরাবৃত্তি যাতে কোনক্রমেই আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে না ঘটে সে বিষয়ে সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে নির্বাচন কমিশনকে দিক নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। নির্বাচন কমিশনও সেই দিক নির্দেশনানুযায়ী সর্বশেষ জাতীয় সংসদের ৫ ঠাকুরগাঁও-৩, জাতীয় সংসদের ৩৯ বগুড়া-৪, জাতীয় সংসদের ৪১ বগুড়া-৬, জাতীয় সংসদের ৪৪ চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২, জাতীয় সংসদের ৪৫ চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ এবং জাতীয় সংসদের ২৪৪ ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ নির্বাচনি এলাকার শূন্য আসনের উপ নির্বাচন সম্পন্ন করেছে।
সূত্র জানায়, ২০১৪ ও ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে দেশ বিদেশে যেসব প্রশ্ন রয়েছে বর্তমান নির্বাচন কমিশন যেন সেসব প্রশ্ন মাথায় রেখে সুষ্ঠ নির্বাচন সম্পন্ন করে, সরকারের পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশনকে এমনই বার্তা দেয়া হয়েছে। কারণ প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচনের মাধ্যমে বর্তমান সরকার পঞ্চম মেয়াদে ক্ষমতারোহণ করতে চায় না। একটি সুষ্ঠ নির্বাচনের মাধ্যমে বর্তমান ক্ষমতাসীন দল তাদের মিত্রদের নিয়ে ঐতিহাসিক বিজয় অর্জন করতে চায়। বর্তমান ক্ষমতাসীন দল ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদে প্রথমবার, ২০০৯-২০১৩ মেয়াদে দ্বিতীয়বার, ২০১৪-২০১৮ মেয়াদে তৃতীয়বার এবং ২০১৮-২০২৩ মেয়াদে চতুর্থবারের মত সরকার গঠন করে। প্রতিবারই বর্তমান ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট নিরঙ্কুশ বিজয় অর্জনের পর জোট নেত্রী শেখ হাসিনাই প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন।
উল্লেখ্য, সংবিধানের ৭২ (৩) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, সংসদের মেয়াদ প্রথম বৈঠকের দিন থেকে পাঁচ বছর। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর। ২০১৯ সালের ৩০ জানুয়ারি বর্তমান সংসদের প্রথম বৈঠক বসেছিলো। অর্থাৎ ২০২৪ সালের ২৯ জানুয়ারি বর্তমান সংসদের মেয়াদ শেষ হবে। আর সংবিধানের ১২৩ (৩) ক অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, ২৯ নভেম্বর থেকে ২৯ জানুয়ারির মধ্যে সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তবে সংবিধানের ১২৩ (৩) খ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে অন্য কোনো কারণে সংসদ ভেঙে গেলে পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের সুযোগ রয়েছে।
নির্বাচন কমিশন সূত্র জানায়, আগের ১১টি সংসদ নির্বাচনের মতো এবারও ৩০০ আসনে এক দিনেই ভোট গ্রহণ হবে। নির্বাচনকালীন নিরাপত্তায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি পরিস্থিতি অনুযায়ী সেনাবাহিনী মাঠে থাকবে কিনা, সে বিষয়ে নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত নেবে।