বরিশাল প্রতিবেদক : কীর্তনখোলা নদীতে ঝাপ দিয়ে সাঁতরে পার হয়ে আত্মরক্ষার চেষ্টা করেও লাভ হয়নি। ‘ধর্ষিত’ তরুনীর চেষ্টায় অবশেষে ধরা পড়লেন অভিযুক্ত ধর্ষক। পেশায় তিনি একজন পুলিশ সদস্য। তাকে ধরে নিয়ে গিয়ে থানায় মামলা দিয়েছেন অন্তঃস্বত্ত্বা সেই তরুণী।
গতকাল বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট) দুপুরে কীর্তনখোলা লাগোয়া বধ্যভূমি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যের নাম কাওছার আহম্মেদ (২৩)। তাঁর বাড়ি বরগুনা জেলার আমড়াঝুড়ি গ্রামে। বরিশাল বিভাগীয় পুলিশ হাসপাতালে কনস্টেবল হিসেবে কর্মরত আছেন তিনি।
মামলায় তরুণীর অভিযোগ, পুলিশ সদস্য কাওছার আহম্মেদ গত জানুয়ারি মাসে স্ত্রী ও এক সন্তান নিয়ে বরিশালে আসেন। নগরীর ১৩ নম্বর ওয়ার্ড দক্ষিণ আলেকান্দা বুকভিলা গলিতে তাঁর (বাদী) পিতার বাসার দোতলায় ভাড়া উঠেন। এই সূত্র ধরে ওই তরুণীর সাথে তাঁর পরিচয়।
এরপর কাওছার আহম্মেদ তাঁর এক ব্যাচমেট পুলিশ সদস্যের সাথে বিয়ে দিয়ে দেওয়ার কথা বলে তরুনীর সঙ্গে সখ্যতা বাড়ায়। তবে পর্যায়ক্রমে দুজনের মধ্যে প্রেমের সর্ম্পক গড়ে উঠে। এক পর্যায়ে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে কাওছার নিজেই ওই তরুণীকে ধর্ষণ করেন। এতে সেই তরুনী ২০ সপ্তাহের অন্তঃস্বত্ত্বা হয়ে পড়েন। দুইমাস আগে তরুণীর অন্যত্র বিয়ে ঠিক হওয়ার পরে জানতে পারে সে অন্তঃস্বত্ত্বা। বিষয়টি কাওছারকে জানালে সে বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানায়। এরপর বৃহস্পতিবার কাওছার কীর্তনখোলার তীরে বধ্যভূমি এলাকায় অবস্থান করছেন এমন খবর পেয়ে সেখানে গিয়ে তাকে আটক করেন তরুণী।
এ প্রসঙ্গে ওই এলাকার কয়েকজন ব্যবসায়ী জানায়, দুপুরের দিকে গেঞ্জি পরিহিত (কাওছার) যুবককে দুই নারী ও একজন পুলিশ সদস্য (সাদা পোশাকে) এসে ধরে ফেলে। তখন আটক ব্যক্তি নিজেকে পুলিশ সদস্য পরিচয় দেন। এ নিয়ে জটলা হয়। শেষে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ানের এক সদস্য যুবকের হাতে পড়ানো হ্যান্ডকাপ খুলে দিতে বলে। হ্যান্ডকাপ খুলে দিলে দুই নারী ওই যুবককে ধরে রাখে। তবে তাদের হাত ফসকে দৌড়ে গিয়ে নদীতে ঝাপ দেয় যুবক। ট্রলারযোগে সেখান থেকে উদ্ধার করে কোতয়ালী থানা পুলিশের গাড়িতে তুলে দেওয়া হয় তাকে।
এ ব্যাপারে কোতয়ালী থানার ওসি আজিমুল করিম জানান, ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতার পুলিশ সদস্য কাওছার আহম্মেদকে আইনি প্রক্রিয়ায় আদালতে সোপর্দ করা হবে। এছাড়া মামলার বাদীকে মেডিকেল পরীক্ষার জন্য শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) পাঠানো হয়েছে।