নয়াবার্তা প্রতিবেদক : নামের মিল থাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলা ও হত্যা মামলায় এক ফটো সাংবাদিককে আটক করে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)। প্রায় পাঁচ ঘণ্টা আটক রাখার পর তাকে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। ওই ফটো সাংবাদিকের নাম মেহেদী হাসান সাগর। তিনি ইংরেজি দৈনিক ঢাকা ট্রিবিউনের ফটো সাংবাদিক।
বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৬টার দিকে রাজধানীর কাকরাইল থেকে তাকে আটক করে ডিবি। পরে রাত পৌনে ১১টার দিকে তাকে মুচলেকা নিয়ে ডিবি কার্যালয় থেকে সহকর্মীদের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়।
দিনগত রাত পৌনে ২টার দিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন ডিবির লালবাগ জোনের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) মামুন। তিনি বলেন, মেহেদীকে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
এর আগে সন্ধ্যায় গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে মেহেদী হাসান সাগরকে গ্রেপ্তারের কথা জানান ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান। তখন তিনি বিজ্ঞপ্তিতে জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলা ও হত্যার অভিযোগে শাহবাগ থানার একটি মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শাহবাগ থানার ওই মামলার ১৩৪ নম্বর আসামির নাম মেহেদী হাসান সাগর। তিনি নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ মুজিবুর রহমান হল শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক।
আবার আটক ফটো সাংবাদিক মেহেদী হাসান সাগরও একই ছাত্র সংগঠনের একই কমিটির তথ্য ও গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক। দুইজনই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পালি ও বুদ্ধিস্ট স্টাডিজ বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী।
বার্তাসংস্থা ইউএনবির ফটো সাংবাদিক রাকিবুল হাসান বলেন, ঢাকা ট্রিবিউনের ফটো সাংবাদিক মেহেদী হাসান সাগরসহ আমরা কয়েকজন ফটো সাংবাদিক কাকরাইলের ফুট ওভারব্রিজের ওপর সাফজয়ী নারী ফুটবল দলের বাসযাত্রার ছবি তোলার জন্য অপেক্ষা করছিলাম। বিকেল ৫টা ৪০ মিনিটের দিকে মেহেদী নিচে নামেন। তখন তাকে অপরিচিত একজনের সঙ্গে কথা বলতে দেখা যায়।
তিনি বলেন, কিছুক্ষণ পর অপরিচিত একটি নম্বর থেকে মেহেদী কল দিয়ে আমাদের জানান, তাকে ডিবি তুলে নিয়ে গেছে। পরে আমরা ডিবি কার্যালয়ে যাই। রাত ১০টা ৪০ মিনিটের দিকে মেহেদীকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এরপর আমরা তাকে বাসায় পৌঁছে দিই।
দৈনিক মানবজমিনের ফটো সাংবাদিক জীবন আহমেদ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লেখেন, ‘যে ছেলেটি জুলাইয়ে ক্যামেরা হাতে ছোটাছুটি করত, আজ সেই ছেলেটি হত্যা মামলার আসামি!’
পরে মেহেদীকে ছেড়ে দেওয়ার পর জীবন আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, এভাবে একজনকে তুলে নিয়ে যাওয়া, তাও আবার জুলাই আন্দোলনে ছাত্র হত্যা মতো স্পর্শকাতর মামলায়- তা মেনে নেওয়া যায় না। একই নামে তো অনেক মানুষ আছে। মেহেদী সাংবাদিক বলে ছাড়া পেয়েছেন। অন্যরা তো ছাড়া নাও পেতে পারেন। যাচাই-বাছাই ছাড়া জুলাই আন্দোলনে ছাত্র হত্যা মামলায় কাউকে আটক করলে মানুষ এ নিয়ে প্রশ্ন তুলবে। এসব মামলাও হালকা হয়ে যাবে।