নিজস্ব ডেস্ক প্রতিবেদক : করোনা মহামারি মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্র সরকারের নেওয়া পদক্ষেপের তীব্র সমালোচনা করেছেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। তিনি এই পরিস্থিতিকে বলেছেন, ‘চরম বিশৃঙ্খল বিপর্যয়’।
গত শুক্রবার রাতে ‘ওবামা অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন’ নামের এক সংগঠনের সদস্যদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন ওবামা। হোয়াইট হাউসে ওবামার সহকর্মীদের সংগঠন এটি।
সাবেক সহকর্মীদের উদ্দেশে ওবামা বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে বলেন, ‘সবচেয়ে ভালো সরকার হলেও খারাপ অবস্থা হতে পারত। কিন্তু যখন এমন মনোভাব থাকে যে সবকিছু শুধু আমার জন্যই হোক, অন্যরা গোল্লায় যাক, তখন এক চরম বিশৃঙ্খল বিপর্যয়ের সৃষ্টি হয়। এমন মনোভাব নিয়েই আমাদের সরকার চলছে।’
যুক্তরাষ্ট্রে এখন পর্যন্ত ১২ লাখ মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। মারা গেছেন ৭৭ হাজার, যা বিশ্বের অন্য সব দেশের চেয়ে বেশি।
অনেক অঙ্গরাজ্যে মার্চে লকডাউন জারি করা হয়। তবে এখন নিষেধাজ্ঞা সরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে আলোচনা হচ্ছে, যাতে লোকজন কাজে ফিরে যেতে পারেন। তবে স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা সতর্ক করেছেন, এতে ভাইরাস আরও ছড়িয়ে পড়তে পারে।
ওবামা আগামী প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নিয়েও এদিন কথা বলেন। সাবেক ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘আগামী নির্বাচন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, আমরা শুধু এক ব্যক্তি বা একটি দলের বিরুদ্ধে লড়তে যাচ্ছি না। এ লড়াই কতগুলো দীর্ঘস্থায়ী প্রবণতার বিরুদ্ধে। সেসব প্রবণতা হলো স্বার্থপরতা, বিভাজন ও অন্যদের শত্রু হিসেবে দেখা।’
এ সময় ওবামা দেশটির বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইকেল ফ্লিনের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা বাতিলের সিদ্ধান্তেরও তীব্র সমালোচনা করেন।
গত বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ ফ্লিনের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা বাতিল করেন। মার্কিন নির্বাচনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপ নিয়ে ওই মামলা করা হয়।
মহামারি নিয়ে ট্রাম্পের অবস্থান দোদুল্যমান। ফেব্রুয়ারিতে তিনি বলেন, মহামারি তেমন কোনো হুমকি নয়, শিগগিরই এটি হারিয়ে যাবে। তবে মার্চের মাঝামাঝি এসে এর তীব্রতা তিনি স্বীকার করেন। এপ্রিলে তিনি পরামর্শ দেন, দেহে সিরিঞ্জ দিয়ে জীবাণুনাশক ঢুকিয়ে করোনাভাইরাস দূর করা যায় কি না, তা নিয়ে গবেষণা করার। অবশ্য বিশেষজ্ঞরা তাৎক্ষণিকভাবে তা প্রত্যাখ্যান করেন।
গত সপ্তাহে ট্রাম্প ঘোষণা করেন, তাঁর সরকার করোনাভাইরাস মোকাবিলায় গঠিত টাস্কফোর্স বন্ধ করে দেবে। পরে আবার বলেন, এই টাস্কফোর্স অর্থনৈতিক কার্যক্রম খুলে দেওয়ার বিষয়ে কাজ করবে।