নিজস্ব বার্তা প্রতিবেদক : নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী নারীবাদী নেত্রী হিসেবে পরিচিত সাইয়েদা সুলতানা অ্যানির বিরুদ্ধে গৃহপরিচারিকাকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার (১৬ এপ্রিল) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে মারধর এবং অকথ্য ভাষায় গালিগালাজের ছবি-ভিডিও পোস্ট করেছেন নির্যাতনের শিকার ওই তরুণী।
রাজধানীর উত্তরার একটি বাসায় খোদ নারীবাদী নেত্রীর হাতেই নির্যাতনের এ ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আলোচনার সৃষ্টি করে।
জানা গেছে, নির্যাতনকারী অ্যানি ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক নেত্রী, বুয়েটের সাবেক শিক্ষার্থী এবং বুয়েটের একটি হলের সাবেক ভিপি। তিনি নারীর অধিকার ও নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে রাজপথে বিভিন্ন প্রোগ্রামে এবং টেলিভিশন টকশোতে প্রায়ই বক্তব্য দেন।
নারীবাদী নেত্রী সাইয়েদা সুলতানা অ্যানি বিভিন্ন সময় নারী নির্যাতনের প্রতিবাদ করেছেন, অথচ নিজেই এখন নির্যাতনকারী।নির্যাতনের শিকার তরুণী জানান, উত্তরা ৩ নম্বর সেক্টরের ৭ নম্বর রোডের ৩৩ নম্বর বাসার ষষ্ঠ তলায় অ্যানির বাসায় একটি বাচ্চা দেখাশোনার কাজ নেন তিনি। অথচ কাজ নেওয়ার প্রথমদিনই বাচ্চা দেখাশোনার বাইরেও অন্য কাজও করতে হয়েছে তাকে। ফ্রিজ মুছতে গিয়ে বাসার অন্য এক গৃহকর্মী দাগ ফেলে দেন। এতে অ্যানি ওই তরুণীকে অপবাদ দেন এবং অনেক মারধর করেন। এক পর্যায়ে প্রাণভয়ে চাকরি ছেড়ে বাড়ি থেকে বের হতে চাইলে ওই তরুণীকে আবারও মারধর করেন অ্যানি।
নির্যাতনের শিকার তরুণী ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘এ করোনার মহামারিতে মানুষ এমন হিংস্র কীভাবে হতে পারে? আজ গরীব হয়ে জন্ম নিয়েছি বলে, বড় লোকদের হাতে মার খেয়ে চুপ থাকতে হচ্ছে, কারণ পুলিশ শুধু বড়লোকদের, আমি মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে ছোট একটা জবে ঢুকেছিলাম, এর মধ্যে করোনার জন্য চাকরি শেষ পর্যন্ত করতে পারি নাই, ভাবলাম বসে থেকে কী হবে, এক পরিচিত ভাইয়ের মাধ্যমে এক বড়লোকের বাড়িতে একটা প্রতিবন্ধী মেয়ে দেখাশোনা করার জন্য কাল যাই। সমান্য একটা ভুলের কারণে, যেই ভুলটা আমি করি নাই, ফ্রিজ পরিষ্কার করা নিয়ে একটু দাগ হওয়ার কারণে, কাল থেকে আজ সকাল পর্যন্ত আমাকে আটকে রেখে এমন নির্যাতন করে, আমি বার বার বলছি ম্যাম আমাকে যেতে দেন, উনি পরে আমার একটা ভিডিও ধারণ করে, যেখানে আমাকে জোরপূর্বক বলতে বলে যে আমি উনার বাসা থেকে ইচ্ছাকৃত চলে যাচ্ছি, আমি মারের ভয়ে বলতে বাধ্য হয়েছি, তারপর আমি থানায় যাই, কিন্তু কোনো কাজ হয়নি, পুলিশ আমার সাথে আসছে ঠিক কিন্তু, উনার সাথে ফোনে কথা বলে, আমাকে বলছে আপনি বাসায় যান, আমরা দেখছি ব্যাপারটা। জানি আমি এটার আর কিছু হবে না, তাই আপনাদের সাথে কথাটা শেয়ার করলাম, মানুষ কোন সময় এমন সিদ্ধান্ত নেয় কারো বাসায় কাজ করার সেটা অবশ্যই বুঝতে পারছেন। পরিস্থিতি মানুষকে অসহায় করে ফেলে, যখন মা বাবা মুখের দিকে তাকাই তখন আর কোনো কিছু মাথায় আসে না।’