নিজস্ব বার্তা প্রতিবেদক : দেশের টেকসই উন্নয়নের জন্য নারীর অবৈতনিক গৃহস্থালি কাজের মূল্যায়ন ও মর্যাদা বৃদ্ধি করা এখন সময়ের দাবী। এ ক্ষেত্রে অন্তরায় গৃহস্থালি কাজের প্রতি সমাজের নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গী। দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে- এমন অভিমত ব্যক্ত করেন বিশেষজ্ঞরা।
শনিবার রাজধানীর সমাজসেবা অধিদপ্তরে ‘অবৈতনিক গৃহস্থালি কাজের মর্যাদা উন্নীতকরণ ও অংশীদারিত্ব বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি’ এক হাইব্রিড পদ্ধতিতে (জুম প্লাটফরম ও সরাসরি অংশগ্রহণ) অনুষ্ঠানে বক্তরা এসব কথা বলেন।
আয়োজিত সেমিনারে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়য় ও সমাজসেবা অধিদপ্তরের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের পাশাপাশি জনপ্রতিনিধি, বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ও ইলেক্ট্রোনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার প্রতিনিধিগণ অংশগ্রহণ করে।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শরমিন্দ নীলোর্মী ডালিয়া। তিনি তার প্রবন্ধ অবৈতনিক গৃহস্থালি কাজের আর্থিক মূল্য ও মর্যদা বৃদ্ধিতে করণীয় সম্পর্কে আলোকপাত করেন।
বাংলাদেশ জাতিসংঘ ঘোষিত সহাস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্য (এমডিজি) অর্জনে সাফল্য অর্জন করেছে। যা বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৬ সাল থেকে শুরু হওয়া টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট ও লক্ষ্যমাত্রাসমূহ অর্জনে বর্তমান সরকার বদ্ধপরিকর।
এগুলো বাস্তবায়নে ইতোমধ্যে মন্ত্রণালয় ও বিভাগভিত্তিক দায়িত্ব বন্টনের পথনকশা (ম্যাপিং) প্রণয়ন করা হয়েছে। দায়িত্ব বন্টন পথনকশা (ম্যাপিং) অনুযায়ী অভীষ্ট ৫ এর বিপরীতে লক্ষ্যমাত্রা ৫.৪.বাস্তবায়নকারী লীড মন্ত্রণালয় হিসেবে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়কে দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে।
লক্ষ্যমাত্রায় উল্লেখ রয়েছে, সরকারি সেবা অবকাঠামো ও সামাজিক সুরক্ষা নীতিমালার মাধ্যমে অবৈতনিক পরিচর্যাকার্য ও গৃহস্থালি কাজের মর্যাদা ও স্বীকৃতিদান এবং খানা ও পারিবারিক পরিমন্ডলে জাতীয়ভাবে যুক্তিযুক্ত অংশীদারিত্বমূলক দায়িত্বপালনকে উৎসাহিত করার কথা বলা হয়েছে।
বাংলাদেশে নারীর মজুরিবিহীন গৃহস্থালী কাজের মূল্যায়ন ও মর্যাদা এখনো স্বীকৃত নয়। তবে বর্তমানে সারা বিশ্বে মজুরিবিহীন গৃহস্থালী কাজের মূল্যায়ন শুরু হয়েছে। এক্ষেত্রে এগিয়ে রয়েছে ভারত, মেক্সিকো, আর্জেন্টিনা, নেপালসহ বেশকিছু দেশ। আর বাংলাদেশে নারী ও পুরুষ উভয়ই মজুরিবিহীন কাজে নিয়োজিত থাকলেও এ কাজ সবচেয়ে বেশি করছেন নারীরা।
সমাজসেবা অধিদপ্তর এসডিজি অনুযায়ী অবৈতনিক গৃহস্থালী কাজের মর্যাদা উন্নীতকরণ ও পারিবারিক কার্যক্রমে নারী-পুরুষের অংশীদারিত্বমূলক দায়িত্ব বন্টন বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ করছে। এর অংশ হিসেবে আজ এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সমাজসেবা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শেখ রফিকুল ইসলাম বলেন, আমাদের এ অঞ্চলে নারীর কাজের মর্যাদা অতীতেও ছিল না, এখনো পুরোপুরি প্রতিষ্ঠা পায়নি। তবে ধীরে হলেও অবস্থার পরিবর্তন হচ্ছে। এ জন্য সবার আগে প্রয়োজন নারীর প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনে কাজ করা।
কর্মশালায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন সমাজসেবা অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ) সৈয়দ মো. নুরুল বাসির। সঞ্চালনায় ছিলেন সমাজসেবা অধিদপ্তরের গবেষণা কর্মকর্তা মোহাম্মদ আছাদুজ্জামান।