নিজস্ব বার্তা প্রতিবেদক : বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে দুবাইয়ের হোটেল ও ড্যান্সবারে নারী পাচারের অভিযোগে জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত নৃত্যশিল্পী ও কোরিওগ্রাফার ইভান শাহরিয়ার সোহাগকে কারাগারে বন্দী রাখার আদেশ দিয়েছে আদালত।
শনিবার (১২ সেপ্টেম্বর) তাকে ঢাকা মহানগর হাকিম বেগম ইয়াসমিন আরার আদালতে নৃত্যশিল্পী ইভানকে কারাগারে বন্দী রাখার আবেদন জানায় মামলার তদন্ত সংস্থা সিআইডি।
লালবাগ থানার মানবপাচার আইনে দায়ের করা মামলার (মামলা নং-২) তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত যেনো ইভানকে কারাগারে বন্দী রাখা হয় এজন্য আদালতে আরজি জানানো হয়। মামলাটি দায়ের হয় গত ২ জুলাই।
এর আগে বৃহস্পতিবার (১০ সেপ্টেম্বর) রাতে রাজধানীর নিকেতনের একটি বাসা থেকে ইভানকে গ্রেপ্তার করে সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইম ইউনিট। পরেরদিন শুক্রবার (১১ সেপ্টেম্বর) রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেন সিআইডির অ্যাডিশনাল ডিআইজি শেখ রেজাউল হায়দার।
তিনি বলেন, দুবাইয়ে ড্যান্সবারের আড়ালে নারী পাচারের অভিযোগে সম্প্রতি আজম খানসহ ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এদের মধ্যে ৪ জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছেন। এর মধ্যে ২ জনের জবানবন্দিতে উঠে আসে কোরিওগ্রাফার ইভান শাহরিয়ার সোহাগের নাম। সেই তথ্যের ভিত্তিতে সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইম ইউনিট তাকে গ্রেপ্তার করে।
অভিযানে অংশ নেয়া ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) কামরুজ্জামান জানান, গ্রেপ্তার চক্রটি দুবাইয়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের জন্য বাংলাদেশ থেকে নৃত্যশিল্পী নিয়ে যেতেন। পরে এদের মধ্য থেকে দুই একজন করে রেখে আসতেন। এই চক্রের সঙ্গে জড়িত কোরিওগ্রাফার ইভান শাহরিয়ার সোহাগ। এ বিষয়ে সংগৃহীত তথ্য-উপাত্তে এবং পূর্বে গ্রেপ্তার আসামিদের জবানবন্দিতে কোরিওগ্রাফার ইভান শাহরিয়ার সোহাগের জড়িত থাকার তথ্য মিলেছে।
উল্লেখ্য, গত মাসে দুবাই পুলিশের তথ্যের ভিত্তিতে আজম খানসহ নারী পাচারকারী চক্রের ৫ সদস্যকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি। পরে নৃত্যশিল্পী ইভানকে নিয়ে এই মামলা গ্রেপ্তারের সংখ্যা দাঁড়ায় ৬ জনে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, এই চক্রটি মূলত নৃত্যকেন্দ্রিক। কয়েকজন নৃত্য সংগঠক ও শিল্পী এই চক্রের সঙ্গে জড়িত। তারা দেশের বিভিন্ন নাচের ক্লাব বা সংগঠন থেকে মেয়েদের সংগ্রহ করে কাজ দেয়ার নামে দুবাই পাঠান। পরে দুবাইয়ের হোটেল ও ড্যান্সবারে তাদের যৌনকর্মে বাধ্য করতেন।
চক্রটির বাংলাদেশের মূলহোতা আজমসহ তার দুই সহযোগী ময়না ও মো. আলামিন হোসেন ওরফে ডায়মন্ডকে গ্রোপ্তারের পর সিআইডি জানায়, প্রথমে হোটেলে চাকরি দেয়ার কথা বলে ২০-২২ বছর বয়সী তরুণীদের প্রলুব্ধ করা হতো। বিশ্বস্ততা অর্জনের জন্য বেতন হিসেবে ২০-৩০ হাজার টাকা নগদ পরিশোধ করা হতো। শুধু তাই নয়, দুবাইয়ে যাওয়া-আসা বাবদ সব খরচও দিত দালাল চক্র। কিন্তু দুবাই যাওয়ার পর তাদের হোটেলে জিম্মি করা হয়, জোরপূর্বক দেহব্যবসাসহ ড্যান্সক্লাবে নাচতে বাধ্য করা হয়।