‘না বুঝে কোনো কাজ করতে চাচ্ছি না’

নয়াবার্তা প্রতিবেদক : আজমেরী হক বাঁধন। গতবছর কান উৎসব ছিল বাংলাদেশিদের জন্য বাঁধনময়। তার ছবি ‘রেহানা মরিয়ম নূর’ নিয়ে এখনও আলোচনায় তিনি। পাচ্ছেন একাধিক সম্মাননা। সর্বশেষ নিউইয়র্কের মোমা-তে নিজের ছবির প্রদর্শনী হলো। কথা বললেন সাম্প্রতিক নানা অনুসঙ্গে।

বর্তমান কাজের ব্যস্ততা নিয়ে জানতে চাই—
আপাতত নতুন কোনো কাজের খবর নেই। তবে সামনের মাসে স্পেনে অনুষ্ঠিব্য একটি চলচ্চিত্র উৎসবে যোগ দেবো। সেখানে ‘রেহানা মরিয়ম নূর’ প্রদর্শিত হবে। এছাড়া মেরিল প্রথম আলো পুরস্কারে দুটি ক্যাটাগরিতে নমিনেশন পেয়েছি। যেটার আপডেট হয়তো শিগগিরই পাওয়া যাবে।

‘রেহানা মরিয়ম নূর’-এর এত সাফল্যের পরও আপনার নতুন সিনেমার ঘোষণা পাচ্ছি না কেন?

নতুন কাজের অফার পাচ্ছি না, বিষয়টি তেমন না। আমি আসলে না বুঝে কোনো কাজ করতে চাই না। তবে খারাপ লাগে এটা ভেবে যে, কার সঙ্গে কাজ করব বা আমাকে নিয়ে কাজ করার মতো কে আছে! বর্তমানে হাতে কোনো কাজ না থাকলেও কাজ করার জন্য মরিয়া হয়ে যাচ্ছি বিষয়টি তেমনও না। কারণ আমি জানি দেশের প্রেক্ষাপটে নারী প্রধান গল্প বা আমাকে টানে এমন গল্প পাওয়া আকাশের চাঁদ পাওয়ার মতো। যদিও আমি আশাবাদী শিগগিরই হয়তো মনে রাখার মতো কাজে যুক্ত হতে পারব।

কান উৎসবের গত আসরে আপনার অংশগ্রহণ ছিল দেশের চলচ্চিত্রের জন্য অত্যন্ত গৌরবের। অনেকেই ভেবেছিলেন অ্যাডভাইজার বা দর্শক হিসেবে এবারের আসরে আপনার দেখা মিলবে। কিন্তু এবারের আসরে আপনার কেন যাওয়া হয়নি?

প্রতিবছরই কান উৎসবে দেশের কেউ না কেউ যাচ্ছেন। এর আগে তৌকীর ভাই, অমিতাভ ভাই, জয়া আপু, বিপাসা আপু’সহ অনেকেই কান উৎসবে গেছেন। এবার শুভ, তিশা, অনন্ত জলিল, বর্ষাও গেছেন। অনেক সিনেমার ট্রেলার সেখানে দেখানো হয়েছে। তবে আমাদের আগে বুঝতে হবে, এমনিতে ট্রেলার প্রকাশ করতে যাওয়া এবং অফিসিয়াল সিলেকশন হয়ে যাওয়ার মাঝে বিরাট পার্থক্য রয়েছে। সেই জায়গা থেকে বলবো, এবার আমার তো ট্রেলার প্রকাশ করার মতো কোনো সিনেমা নেই। তাছাড়া আমি নির্মাতা বা প্রযোজকও নই।

নিশ্চয় এবারের উৎসবটিরও নিয়মিত খোঁজখবর রাখছেন। ‘মুজিব’সহ ৩টি সিনেমার ট্রেলারও উৎসবে প্রকাশিত হয়েছে। এবারের আসরের সার্বিক বিষয় নিয়ে আপনি কী মন্তব্য করবেন?

এ রকম ট্রেলার লঞ্চ আগেও হয়েছে। তবে এতে বিশ্বের অনেকেই বাংলাদেশি সিনেমা সম্পর্কে জানতে পারছেন। এছাড়া বাংলাদেশের চলচ্চিত্র সমালোচক বিধান রিবেরু এ বছর ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব ফিল্ম ক্রিটিকসের (ফিপরেস্কি) বিচারক হিসেবে রয়েছেন। এটা সত্যি অনেক গর্বের বিষয় আমাদের জন্য।

সম্প্রতি একটি হিন্দি সিনেমার কাজ শেষ করেছেন। সিনেমা কবে পর্দায় আসবে?

এরইমধ্যে সিনেমাটি কাজ খুব ভালোভাবেই শেষ করেছি। সিনেমাটি চলতি বছরই মুক্তির কথা রয়েছে।

বিশাল ভরদ্বাজের মতো নির্মাতার সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?

ভীষণ ভালো লেগেছে যে, ওনার মতো একজন নির্মাতার সঙ্গে কাজ করতে পেরেছি। কলকাতার প্রোডাকশনের সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা তেমন ভালো না হলেও বোম্বের অভিজ্ঞতা খুবই ভালো। যা সারাজীবন মনে থাকবে।

দুই দেশের ইন্ডাস্ট্রিতেই কাজ করছেন। সেই আলোকে দু-দেশের ইন্ডাস্ট্রিকে কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?

আমার কাছে মনে হয়, আমাদের দেশে অনেকে মেধাবী ছেলেমেয়ে রয়েছে। যদিও নানা কারণে মেয়েরা একটু পিছিয়ে আছে। তবে আমি যাদের সঙ্গে কাজ করেছি তারাও অনেক ভালো কাজ করেছেন। নির্মাতা সাদ-এর সঙ্গে তো এখানে তুলনা করার মতো কেউ নেই। এমনকি কলকাতাতেও নেই। আর বোম্বের কাজে বাজেট বেশি থেকে শুরু করে মেধার মূল্যায়ন বেশি হয়। সেখানে চাইলেই একটা কিছু করা যায় না। যেটা এখানে সহজেই করা যায়।

ইদানিং গল্পনির্ভর কাজ বেশি হচ্ছে। এতে হিরো-হিরোইন নির্ভরতা কমবে মনে করছেন কি-না?

হিরো-হিরোইন নির্ভরতা আমার কাছে গ্রহণযোগ্য না। এই চর্চা বেশি হলে অন্যদের বিকশিত হওয়া বা কাজের সুযোগ কমে যায়। তবে এখন রিয়েলিস্টিক কাজ বেশি হচ্ছে। গল্পই মূল হিরো রূপে পর্দায় আসছে। এটা সবার জন্যই ইতিবাচক।

ওটিটি মাধ্যমটি নিয়ে বাঁধনের পরিকল্পনা বা প্রত্যাশার জায়গা কোথায়?
আমি যেকোনো নতুন মাধ্যমকেই ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখতে পছন্দ করি। নতুন মাধ্যম বা জিনিসই পরিবর্তন নিয়ে আসে। তাছাড়া ওটিটি আসায় কাজের পরিধি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে অনেককিছু দেখানোর সুযোগও তৈরি হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত মাধ্যমটি নিয়ে আমার কোনো পরিকল্পনা নেই। আমাকে নিয়ে তো নির্মাতারা পরিকল্পনা করবেন!

Share