নিজস্ব বার্তা প্রতিবেদক : অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলা কর্তৃক নুসরাত জাহান রাফিকে যৌন হয়রানির ঘটনায় ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার তৎকালীন গভর্নিং বডির চেয়ারম্যান এবং অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট পি কে এনামুল করিমের নিষ্ক্রিয়তা বা অবহেলার সত্যতা পায়নি তদন্ত কমিটি। আদালতের নির্দেশে জনপ্রশাসন সচিবের করা তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
সোমবার বিচারপতি এফআরএম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে এ প্রতিবেদনের ওপর শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।
পি কে এনামুল করিমের নিষ্ক্রিয়তার বিষয়ে তদন্ত করেন চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) হাবিবুর রহমান।
প্রতিবেদনের মতামত অংশে বলা হয়েছে, আকর্ষিক ও পারিপার্শ্বিকতায় ফেনীর জেলা প্রশাসক মো. অহিদুজ্জানের দেওয়া লিখিত বক্তব্যে এডিএম পি কে এনামুল করিমের নিষ্ক্রিয়তা বা অবহেলার কথা বর্ণনা করে কিছু কিছু গণমাধ্যমে যে সংবাদ প্রচার হয়েছে, তার সত্যতা পাওয়া যায়নি।
আরো বলা হয়েছে, নুসরাতের মায়ের করা মামলায় একমাত্র আসামি অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলা জেলে থাকায় মামলার বিষয়ে তার সরাসরি কিছু করার নেই মর্মে এডিএম পিকে এনামুল করিম যে বক্তব্য দিয়েছেন তা আইন সংগত।
আরো পড়ুন: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপে সংঘর্ষ
অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলার বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ করায় ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসায় হাত-পা বেঁধে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করা হয় নুসরাত জাহান রাফিকে। এ ঘটনায় শুরু থেকেই পুলিশের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ উঠে।
এদিকে নুসরাতের ঘটনায় সদর দপ্তরের এক ডিআইজিকে প্রধান করে তদন্ত কমিটি গঠন করেছিল পুলিশ সদর দপ্তর। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে ফেনীর এসপি, সোনাগাজী থানার সাবেক ওসি, দুই এসআইয়ের দায়িত্বে অবহেলা ও গাফিলতির বিষয় উঠে আসে। এ ছাড়া এডিএম পি কে এনামুল করিমের বিরুদ্ধে দায়িত্বে অবহেলা ও গাফিলতির তথ্যও উঠে আসে। নুসরাতের মা তার বক্তব্যে এনামুল করিমের বিরুদ্ধে দুর্ব্যবহার ও অসহযোগিতার অভিযোগ আনেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ৪ এপ্রিল নুসরাত ও তার মা অধ্যক্ষ সিরাজের বিচার চাইতে মাদ্রাসার গভর্নিং বডির সভাপতি এনামুল করিমের অফিসে যান। সে সময় তিনি ঘটনাটি চেপে যেতে বলেন নুসরাতকে। এনামুল বলেছিলেন, ‘এখন কেন এসেছেন। আপনারা তো মামলা করে ফেলেছেন। মামলা করার আগে এলে দেখতাম, কী করা যায়।’
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, এর আগেও মাদ্রাসার অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি ও অর্থ তছরুপের অভিযোগ ওঠে। এসব বিষয়ে পি কে এনামুল করিমকে জানানো হলে তিনি ব্যবস্থা নেননি। মাদ্রাসার গভর্নিং বডির প্রধান হিসেবে এনামুল করিম শুরুতেই ব্যবস্থা নিলে নুসরাতের এ পরিণতি হতো না।