পরের দুই নারীকে বিয়ে না করে সহবস্থানের চুক্তি করেছিলেন মামুনুল

নিজস্ব বার্তা প্রতিবেদক : দেশজুড়ে নানা আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দেওয়া মামুনুল হককে নিয়ে এবার বিস্ফোরক তথ্য এসেছে পুলিশের হাতে। গোয়েন্দাদের জিজ্ঞাসাবাদে মামুনুল হক বলেছেন, তিনি পরের দুইজনকে বিয়ে করেননি। তবে দুই জন স্বাক্ষীর উপস্থিতিতে তাদের সঙ্গে পৃথকভাবে মামুনুলের চুক্তি হয়েছিল। এই চুক্তির কপিও উদ্ধার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ।

চুক্তিতে বলা হয়েছে, মামুনুল হক তাদের বিয়ে করবেন না। স্ত্রীর মর্যাদাও দেবেন না। তবে তাদের ভরণপোষণ দেবেন। এই শর্তে যে, তিনি স্ত্রীর মতো করে তাদের সঙ্গে মিশবেন। যেখানে যেতে বলবেন, সেখানে যেতে হবে এবং তার সঙ্গে রাত্রিযাপন করতে হবে।

গোয়েন্দা পুলিশের ওই কর্মকর্তা বলেন, মামুনুল হকের কাছে তারা জানতে চেয়েছিলেন, বিয়ে না করে কারো সঙ্গে চুক্তি করে থাকা যায় কি-না? জবাবে মামুনুল হক তাদের বলেছেন, এই শরীয়ত সম্মত। তিনি স্ত্রীর মর্যাদা না দিলেও তাদের ভরণপোষণ দিচ্ছেন। তার বিনিময়ে তারা তাকে সঙ্গ দিচ্ছেন। এটা ইসলামের বিধিবিধানের মধ্যেই তিনি করেছেন বলে দাবি করেছেন। তবে এই পরিস্থিতিতে সোনারগাঁওয়ের রিসোর্টে যাওয়া তার ঠিক হয়নি। আর গেলেও আগে থেকে প্রস্তুতি নিয়ে নেতাকর্মীদের জানিয়ে যাওয়া উচিৎ ছিল।

সরকারের পতনের বিষয়ে তাদের পরিকল্পনার বিষয়ে জানতে চাইলে গোয়েন্দাদের এই হেফাজত নেতা বলেন, ইসলামি রাষ্ট্র কায়েম করতে হবে এই সরকারের পতন ঘটাতেই হতো। আর এই সরকার পড়ে গেলে হেফাজতের অনুগ্রহ ছাড়া কেউ রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসতে পারবে না। এই কারণে তিনি রাজধানীর যে কোন কর্মসূচীতে সহিংসতার উস্কানি দিতেন। তার মতে, হেফাজতের আমীর জুনায়েদ বাবুনগরীর চেয়েও বেশি ‘উগ্রপন্থী’ তিনি। অন্য নেতাদের দিয়ে বিপ্লব হবে না। এই কারণে তিনি নিজেই দায়িত্ব নিয়ে নানা আন্দোলন সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়েছেন।

এদিকে ঢাকা মহানগর হাকিম দেবদাস চন্দ্র অধিকারীর আদালতে গতকাল হাজির করা হয় মামুনুল হককে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদপুর থানার এসআই সাজেদুল হক আসামিকে সাত দিন রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেন। এসময় প্রথমে রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আবু আসামিকে সাত দিন রিমান্ড মঞ্জুরের প্রার্থনা করেন। পরে আসামির পক্ষে জয়নুল আবেদীন মেজবা রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। পরে বিচারক মামুনুল হকের কাছে জানতে চান তার কিছু বলার আছে কি না।

তখন মামুনুল হক আদালতে বলেন, স্যার, আমাকে গ্রেফতার করে গতকাল যেখানে রাখা হয়েছিল সেটি থাকার মতো জায়গা না। ওই রকম জায়গায় ইবাদত করা যায় না। অন্যান্য রমজানে আমি নিয়মিত কোরআন খতম করি। রিমান্ডে পাঠালে সুষ্ঠু পরিবেশ থাকবে না এবং আমার ইবাদত করা কঠিন হয়ে যাবে। গ্রেফতারের পর আমাকে অনেক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। আমাকে রিমান্ড দিয়েন না। এ মামলার বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। শুনানি শেষে মামুনুলের ইবাদতে যেন বিঘ্ন না হয় সেদিকে খেয়াল রাখার নির্দেশ দিয়ে আদালত ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

Share