নিজস্ব বার্তা প্রতিবেদক : বিদেশে অর্থ পাচারের ঘটনা তদন্ত করে গত পাঁচ অর্থবছরে ১ হাজার ২৪টি ঘটনার প্রমাণ পেয়েছে বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। এর মধ্যে অর্ধেক ঘটনায় দেশের বাইরে অর্থ পাচারের প্রমাণ মিলেছে। অর্থ পাচারসংক্রান্ত আইনে দেশের মধ্যেও অর্থ পাচারের ঘটনা ঘটে।
দেশে ও দেশের বাইরে অর্থ পাচারের ঘটনা তদন্তে দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা বিএফআইইউ। সংস্থাটি যেসব ঘটনার প্রমাণ পেয়েছে, তার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন সরকারের বিভিন্ন সংস্থার কাছে পাঠিয়েছে। যেসব সংস্থার কাছে এসব প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), বাংলাদেশ পুলিশ, পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি), কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তবে তথ্যপ্রমাণ থাকার পরও এসব ঘটনায় কোনো সংস্থা খুব বেশি ব্যবস্থা নেয়নি।
অর্থ পাচারের ঘটনা মাঠপর্যায়ে সরাসরি তদন্তে যুক্ত বিএফআইইউর দুজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, এ-সংক্রান্ত প্রতিবেদনে সব তথ্যপ্রমাণসহ অর্থ পাচারের বিবরণ দেওয়া হয়েছে। পাচারকারী দেশের বাইরে কোথায় ফ্ল্যাট, বাড়ি কিনেছেন বা বিনিয়োগ করেছেন, তার বিবরণও সেখানে আছে।
ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বিমা প্রতিষ্ঠান, মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠানগুলো নিয়মিত ভিত্তিতে সন্দেহজনক বিভিন্ন লেনদেনের তথ্য বিএফআইইউকে দিয়ে থাকে।
বিএফআইইউর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ৫৮টি, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ১২১টি, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ৬৭৭টি, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৫২টি ও ২০১৯-২০ অর্থবছরে ১১৬টি অর্থ পাচারের প্রতিবেদন চূড়ান্ত করা হয়। এর বাইরে উল্লিখিত পাঁচ অর্থবছরে সরকারের বিভিন্ন সংস্থার চাহিদার ভিত্তিতে ২ হাজার ২৯০টি ঘটনার তথ্য সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্টদের সরবরাহ করে বিএফআইইউ।
বিএফআইইউর প্রধান আবু হেনা মোহা. রাজী হাসান বলেন, ‘আমরা সরকারের বিভিন্ন সংস্থার কাছে প্রতিবেদন পাঠিয়ে দিই। তারা আরও তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়। এখন অনেকগুলো ঘটনার মামলা চলছে। আদালতের চূড়ান্ত নিষ্পত্তির আগে তো কেউ শাস্তির আওতায় আসবে না। দেশের বাইরে থেকে অর্থ ফেরত আনা জটিল প্রক্রিয়া। ওই দেশের সমর্থন প্রয়োজন হয়।’