নিজস্ব বার্তা প্রতিবেদক : মাদক মামলায় ফারিয়া মাহবুব পিয়াসা ও মরিয়ম আক্তার মৌকে আবার বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দিয়েছেন আদালত। পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত আজ শুক্রবার এ আদেশ দেন।
পৃথক তিনটি মাদক মামলায় কথিত মডেল ফারিয়া মাহবুব পিয়াসাকে আট দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দিয়েছেন আদালত। আর মরিয়ম আক্তার মৌকে একটি মাদক মামলায় চার দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দিয়েছেন আদালত।
এর আগে তাঁকে গুলশান, ভাটারা ও খিলক্ষেত থানার পৃথক তিনটি মাদক মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে পুলিশ মোট ২৪ দিন রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করে। অন্যদিকে মোহাম্মদপুর থানায় মাদক মামলায় মৌকে আবার ১০ দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি চেয়েছিল পুলিশ।
গত রোববার রাতে বারিধারার একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে পিয়াসা ও মোহাম্মদপুরের বাসায় অভিযান চালিয়ে মৌকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ। এরপর বসুন্ধরা এলাকা থেকে মাসুদুল ইসলাম ওরফে জিসান এবং শরফুল হাসান ওরফে মিশু হাসানকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। গতকাল বৃহস্পতিবার পৃথক পৃথক তিনটি মামলায় মাসুদুলকে ৭ দিন এবং শরফুল হাসানকে ৯ দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দেন আদালত। র্যাবের পক্ষ থেকে বলা হয়, আসামি শরফুল ও মাসুদুল একটি সংঘবদ্ধ চক্রের সদস্য। এই চক্রের সদস্য ১০ থেকে ১২ জন। তাঁরা রাজধানীর বিভিন্ন অভিজাত এলাকা, বিশেষ করে গুলশান, বারিধারা, বনানীসহ বিভিন্ন এলাকায় পার্টি বা ডিজে পার্টির নামে মাদক সেবনসহ নানাবিধ অনৈতিক কর্মকাণ্ডের ব্যবস্থা করে থাকেন। ওই সব পার্টিতে তাঁরা অংশগ্রহণকারীদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ পেয়ে থাকেন।
আর ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ সাংবাদিকদের বলেন, পিয়াসা ও মৌয়ের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ রয়েছে। পিয়াসা বারিধারার একটি ফ্ল্যাটে থাকেন। আর মৌ থাকেন মোহাম্মদপুরে। তাঁরা দুজন একই চক্রের সদস্য। তাঁদের বিরুদ্ধে উঠতি বয়সের ছেলেদের নিয়ে এসে মাদকদ্রব্যাদি সেবন করিয়ে আপত্তিকর ছবি তোলার অভিযোগ রয়েছে। এরপর ব্ল্যাকমেল করে ভুক্তভোগী ব্যক্তিদের কাছ থেকে টাকা আদায় করতেন এই দুই নারী।
ডিবির একটি সূত্র বলছে, মডেল ফারিয়া মাহবুব পিয়াসা ও মরিয়ম আক্তার মৌকে জিজ্ঞাসাবাদে তাঁদের সঙ্গে কাজ করেন এমন কয়েকজন নারী সদস্যের তালিকা পেয়েছে পুলিশ। অভিযানে জব্দ করা মুঠোফোনের ভিডিও ক্লিপ ও স্থির ছবি দেখে তাঁদের আয়োজিত পার্টিতে অংশ নেওয়া প্রভাবশালী ব্যক্তি, শিল্পপতি-বিত্তবান ব্যবসায়ী ও উচ্চবিত্ত ব্যক্তিদের শনাক্ত করা হয়েছে।
অবশ্য আসামিপক্ষের আইনজীবীরা আদালতে দাবি করেছেন, ষড়যন্ত্র করে মিথ্যা মামলায় এ দুজনকে ফাঁসিয়ে দেওয়া হয়েছে।
২০১৭ সালে বনানীর রেইনট্রি হোটেলে দুই বিশ্ববিদ্যালয়ছাত্রী ধর্ষণের ঘটনার সময় মডেল পিয়াসার নাম উঠে আসে। ওই মামলায় তিনি নিজেকে অভিযুক্ত আসামি শাফাত আহমেদের স্ত্রী হিসেবে দাবি করেছিলেন। ওই মামলার সাক্ষীর তালিকায় পিয়াসার নাম রয়েছে। যদিও আদালতে সাক্ষ্য দিতে যাননি তিনি।