পুলিশ ও সোর্সের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠা গৃহবধূকে ধর্ষণের প্রমাণ মিলেছে

নিজস্ব জেলা প্রতিবেদক : যশোরে গণধর্ষণের অভিযোগ তুলে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে আসা সেই নারীকে ধর্ষণের প্রমাণ মিলেছে। ডাক্তারি পরীক্ষার পর বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। মঙ্গলবার ওই গৃহবধূর আলামত সংগ্রহ করে তা পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়। সেখান থেকে পাওয়া রিপোর্টে ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে যশোর জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. আরিফ আহমেদ বিষিয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ধর্ষণে কে বা কারা জড়িত তা চিহ্নিত করতে ডিএনএ টেস্টের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

এদিকে গণধর্ষণকালে শার্শার গোড়পাড়া পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই খায়রুল পরিচয়দানকারীকে পুলিশ আটক করতে পারেনি। অভিযোগ রয়েছে তার নেতৃত্বে গণধর্ষণ করা হয়েছে ওই গৃহবধূর। কিন্তু ভিকটিমের সামনে এসআই খায়রুলকে জেলা পুলিশ সুপার হাজির করলে তিনি চিনতে পারেনি বলে পুলিশের দাবি। তাহলে খায়রুল নামের অন্য এসআই নাকি অন্য কেউ পুলিশের নাম ব্যবহার করে ধর্ষণের ঘটনা ঘটিয়েছে, সেটি খতিয়ে দেখতে মাঠে নেমেছে যশোর জেলা পুলিশ।

এ ঘটনায় তিন আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাদের আদালতে সোপর্দ করে ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে। আদালত ৮ সেপ্টেম্বর রিমান্ড শুনানির দিন ধার্য করেছে। আটকৃকতরা হলেন- শার্শা উপজেলার চটকাপোতা গ্রামের কামরুজ্জামান ওরফে কামরুল, লক্ষ্মণপুর গ্রামের আবদুল লতিফ ও আবদুল কাদের। তবে প্রধান অভিযুক্ত উপ-পরিদর্শক (এসআই) খায়রুল পরিচয়দানকারীকে এ মামলায় আসামি করা হয়নি। কিন্তু শার্শা উপজেলার গোড়পাড়া ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই খায়রুলকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। আর একজনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে ওই মামলায়। এছাড়া গণধর্ষণের ঘটনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত ২ সেপ্টেম্বর রাতে শার্শার লক্ষণপুর এলাকায় ওই গৃহবধূর বাড়িতে গিয়ে তার কাছে গোড়পাড়া ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই খায়রুল ও তার সোর্স ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন বলে অভিযোগ ওঠে। ওই টাকা দিলে তার স্বামীর বিরুদ্ধে ৫৪ ধারায় মামলা দেখিয়ে জামিনে সহায়তা করবেন বলে জানান। ফেনসিডিল মামলায় জেলহাজতে থাকা তার স্বামীকে কীভাবে ৫৪ ধারা দেবেন এ নিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। একপর্যায়ে খায়রুল ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। এরপর এসআই খাইরুল ও সোর্স কামরুল ওই নারীকে ধর্ষণ করেন। ৩ সেপ্টেম্বর সকালে ওই নারী নিজেই যশোর জেনারেল হাসপাতালে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য এলে বিষয়টি জানাজানি হয়ে যায়।

ডা. আরিফ আহমেদ বলেন, গত ৩ সেপ্টেম্বর ওই গৃহবধূর আলামত সংগ্রহ করে তা পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়। সেখান থেকে পাওয়া রিপোর্টে ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে। কিন্তু কে বা কারা ধর্ষণে জড়িত তা ডিএনএ টেস্ট ছাড়া বলা যাবে না। সিআইডির মাধ্যমে ডিএনএ টেস্ট করাতে হয়। ডিএনএ টেস্ট রিপোর্ট পাওয়া গেলেই জানা যাবে এক নাকি একাধিক ব্যক্তি ধর্ষণে জড়িত।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সিআইডির পক্ষ থেকে আমাদের বলা হয়েছে, আলামত প্রস্তুত রাখতে।

Share