নয়াবার্তা প্রতিবেদক : ফুলপরী খাতুনকে পাশবিক ও অমানবিক নির্যাতন করা হয়েছে বলে এ ঘটনার বিচারিক তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। আরও বলা হয়, এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। হল প্রভোস্ট ও হাউস টিউটর দায়িত্ব পালনে চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন। একই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর তার দায়িত্ব পালনে চরম অবহেলা ও উদাসীনতা দেখিয়েছেন।
আজ মঙ্গলবার বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চে এ প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পর আগামীকাল বুধবার আদেশের জন্য দিন ধার্য করা হয়েছে।
আদালত থেকে বের হয়ে রিটকারী আইনজীবী গাজী মো. মোহসীন সাংবাদিকদের বলেন, তদন্ত কমিটিতে ছয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। লিখিত বক্তব্য এবং অডিও ক্লিপসহ তদন্ত প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে। এতে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহসভাপতি সানজিদা চৌধুরী অন্তরা, লিমা, ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের শিক্ষার্থী তাবাসসুম ইসলাম, আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ইসরাত জাহান মীম, চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থী হালিমা আক্তার ঊর্মি ও ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের মুয়াবিয়া জাহানের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। লিমার নাম বিচারিক তদন্তে এসেছে, আর বাকিরা দুই তদন্তেই রয়েছেন।
বিচারিক তদন্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলের প্রভোস্ট এবং হাউস টিউটরদের চরম ব্যর্থতা ও অবহেলার অভিযোগ উঠে এসেছে। কারণ তারা হলেন তাদের হলের অভিভাবক। তারা তাদের দায়িত্ব পালনে চরম ব্যর্থতা দেখিয়েছেন। অন্তরা এবং অভিযুক্তরা এ ভুক্তভোগীর কাছ থেকে মুচলেকা আদায় করেন। প্রভোস্টের সামনেই তারা এটি করেন। প্রভোস্ট অভিযুক্তদের সাহায্য করেন। এটি বিচারিক তদন্তের রিপোর্টে উঠে এসেছে। আর বিচারিক তদন্তে আরেকটি যে বিষয় উঠে এসেছে তা হলো—বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর চরম উদাসীনতা দেখিয়েছেন, অবহেলা করেছেন। তিনি অভিযোগ পাওয়ার পরও কোনো ব্যবস্থা নেননি। আজ রিপোর্ট দেখে আদালত আগামীকাল আদেশের দিন ধার্য করেছেন।
গত ১৬ ফেব্রুয়ারি কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) এক ছাত্রীকে রাতভর মারধর ও শারীরিক নির্যাতন করে ভিডিও ধারণের ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। তার আগের দিন ১৫ ফেব্রুয়ারি ওই ছাত্রীকে (ইবি) রাতভর মারধর ও শারীরিক নির্যাতন করে ভিডিও ধারণের ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করা হয়। রিটে জড়িতদের হাইকোর্টে তলব করার নির্দেশনা চাওয়া হয়।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী গাজী মো. মোহসীন জনস্বার্থে রিট আবেদনটি করেন। স্বরাষ্ট্র সচিব, শিক্ষা সচিব, ইবির ভিসি, রেজিস্ট্রার, প্রক্টরসহ সংশ্লিষ্টদের রিটে বিবাদী করা হয়েছে।