নিজস্ব ডেস্ক প্রতিবেদক : ক্রিকেট দুনিয়ায় অনেক অর্জন থাকলেও অতীতে কোনো পর্যায়েই আইসিসির কোনো টুর্নামেন্টে ফাইনালে পা রাখতে পারেনি বাংলাদেশ। দক্ষিণ আফ্রিকায় চলমান আইসিসি অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে বাংলাদেশের ক্রিকেটকে সেই ‘অনাবিষ্কৃত’ মঞ্চের সন্ধান এনে দিয়েছে আকবর আলীর দল। সেখানে রোমাঞ্চ আছে, আছে গৌরব অর্জনের এবং ইতিহাস গড়ার হাতছানি। যুব ক্রিকেটে আজ বিশ্ব-শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনের লড়াইয়ে শামিল হচ্ছে বাংলাদেশ যুব দল।
দক্ষিণ আফ্রিকার পচেফস্ট্রুমের সেনওয়েস পার্কে আজ যুব বিশ্বকাপের ফাইনালে চেনা প্রতিপক্ষ ভারতের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় দুপুর ২টায়।
প্রতিপক্ষ ভারত-জুজু হোক কিংবা ফাইনালের চাপ, সব একপাশে ঠেলে চূড়ান্ত লড়াইয়ে আর দশটা ম্যাচের মতোই খেলতে চান বাংলাদেশ অধিনায়ক আকবর। বিশ্বকাপে প্রথম ট্রফি জেতার স্বপ্নে বিভোর বাংলাদেশের যুবারা। দলের সঙ্গে আছেন বিসিবির কর্মকর্তারা। গেম ডেভেলপমেন্ট বিভাগের চেয়ারম্যান খালেদ মাহমুদ সুজনও রয়েছেন যুবাদের সঙ্গে। ফাইনালের আগে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের পৌঁছে যাওয়ার কথা দক্ষিণ আফ্রিকায়।
যুব ক্রিকেটে শেষ দুই বছরে তিনবার ভারতের বিপক্ষে নকআউটে পা হড়কেছে বাংলাদেশের। তাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের স্নায়ুর লড়াইটা শুরু হয়েছিল ২০১৮ যুব বিশ্বকাপে। সেবার কোয়ার্টার ফাইনালে ভারতের দেওয়া ১৭২ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দুই রানে হেরেছিল দল। গত বছর ইংল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজেও ভারত-বাধা কাটাতে পারেনি বাংলাদেশ।
গত সেপ্টেম্বরে এশিয়া কাপের ফাইনালে ভারতকে ১০৬ রানে রুখে দিয়ে শিরোপার জোর স্বপ্নই জেগে উঠেছিল বাংলাদেশ শিবিরে। তবে লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ১০১ রানে গুটিয়ে গেলে আবারও হতাশাই সঙ্গী হয় বাংলাদেশের।
তবে আজ স্বপ্নভঙ্গের সেসব বেদনাকে পেছনে ফেলার দারুণ সুযোগ বাংলাদেশের সামনে। ভারতকে বাংলাদেশ অধিনায়ক আকবর দেখতে চাইলেন সাধারণ প্রতিপক্ষ হিসেবেই। জানালেন, কৌশলগুলোর বাস্তবায়ন ঘটাতে পারলে শিরোপা জেতা খুব সম্ভব।
গতকাল ফাইনাল-পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘দল হিসেবে ভারত দুর্দান্ত। তাদের ব্যাটিং-বোলিং দুটোই সমীহ জাগানিয়া। তাদের নিয়ে আমরা যে কৌশল সাজিয়েছি সেটা মাঠে বাস্তবায়ন যদি করতে পারি তবে ফলাফলটা আমাদের পক্ষেই আসবে।’
প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের ফাইনালে এলেও একে সাধারণ ম্যাচ মেনেই মাঠে নামতে চান আকবর। বাংলাদেশ অধিনায়কের ভাষ্য, ‘এটা ফাইনাল ম্যাচ। এখানে বিশ্বকাপ জিততেই হবে এমন চিন্তা মাথায় আসতে দিলে চাপ চলে আসতে পারে ক্রিকেটারদের ওপর। আমরা চেষ্টা করছি দল পুরো টুর্নামেন্টে যেভাবে নির্ভার খেলেছে, ফাইনালেও সেটা বজায় থাকুক।’
ব্যাটিং-বোলিং দুই বিভাগেই একাধিক পারফরমারের নৈপুণ্য শিরোপা থেকে মাত্র একধাপ দূরে নিয়ে এসেছে বাংলাদেশকে। মাহমুদুল হাসান জয় সেমিফাইনালে দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি পেয়েছেন, ফরমে ফেরার ইঙ্গিত দিচ্ছেন অভিজ্ঞ তৌহিদ হূদয়ও। টপঅর্ডারে তানজিদ হাসান, পারভেজ হোসেনরাও নিয়মিত ভালো সূচনা এনে দিচ্ছেন। বোলিংয়ে ছন্দে আছেন পেসার শরীফুল ইসলাম আর স্পিনার রাকিবুল হাসানরা। সবার সেরাটা আজ মাঠে উজাড় করে দেওয়ার অপেক্ষা কেবল।