নিজস্ব বার্তা প্রতিবেদক : চলতি বছরের ১২ লাখ এইচএসসি পরীক্ষার্থী বুধবার তাদের বিষয়ে সরকারের সিদ্ধান্ত জানতে পারবেন।করোনাভাইরাসের কারণে এ বছরের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা গত পহেলা এপ্রিল শুরু হওয়ার কথা থাকলেও তা পিছিয়ে গেছে।
আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব কমিটি থেকে জানা গেছে, আগামী নভেম্বর মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে এই পরীক্ষা নেওয়া যায় কি না তা নিয়েই নীতি নির্ধারকদের মধ্যে আলোচনা চলছে। তবে মঙ্গলবার পর্যন্ত কোনো দিনক্ষণ চূড়ান্ত হয়নি।
গত ৩০ সেপ্টেম্বর সাংবাদিকদের শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি জানিয়েছিলেন, ৫ বা ৬ অক্টোবরের মধ্যে এবছরের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার পরিপূর্ণ পরিকল্পনাসহ সুনির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা করা হবে। তবে মন্ত্রণালয় সোমবার পর্যন্ত তাদের কাজ শেষ করতে পারেনি।
ডা. দীপু মনি জানিয়েছেন, এ পরীক্ষার প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে শিক্ষার্থীদের চার সপ্তাহ সময় দেয়া হবে। তবে অপশনও থাকবে। যারা যৌক্তিক কোনো কারণে পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে না, বিকল্প উপায়ে তাদের মূল্যায়ন কিভাবে করা যায়-সেটা নিয়েও পরিকল্পনা থাকবে। দ্রুত সময়, মিনিমাম কতগুলো বিষয়ের পরীক্ষার নেওয়া যায়, সেটা ভাবা হচ্ছে। আর যাতে কোন পরীক্ষার্থী ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেটিকেও বিবেচানায় রাখা হয়েছে।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, পরীক্ষা আয়োজনে প্রশ্ন, উত্তরপত্র তৈরিসহ সব প্রস্তুতি আমাদের রয়েছে। এখন শুধু পরীক্ষা শেষ করা বাকি রয়েছে। পরীক্ষা দিতে গিয়ে যাতে কারও ক্ষতি না হয়, সে বিষয়টি আমরা গুরুত্ব দেব। বিশেষ কারণে কোনো শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিতে না পারলে আমরা দ্রুত সময়ের মধ্যে তার পরীক্ষা নেব।
মন্ত্রী বলেন, এই পরীক্ষার সাথে অনেকে জড়িত। পরীক্ষার্থী ছাড়াও অভিভাবক, হল পরিদর্শক, আইন শৃঙ্খলা বাহিনী সব মিলিয়ে ২৫ থেকে ৩০ লাখ লোকের সম্পৃক্ততা। যাদের অধিকাংশ গণপরিবহন ব্যবহার করবে। এ বিষয়টিও সরকারের বিবেচনায় রয়েছে।
পরীক্ষা অনিশ্চিত থাকায় প্রায় ১২ লাখ এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার্থী চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে। তাদের প্রস্তুতিতে চরম বিঘ্ন ঘটেছে। করোনা পরিস্থিতির কারণে পরীক্ষা শুরুর মাত্র ৯ দিন তা স্থগিত করে দেওয়া হয়। গত ১ এপ্রিল বাংলা (অবশ্যিক) প্রথম পত্র দিয়ে এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা ছিল। ঘোষিত সময়সূচি অনুসারে ৪ মে পর্যন্ত তত্ত্বীয় পরীক্ষা এরপর ৫ মে ব্যবহারিক পরীক্ষা শুরু হয়ে ১৩ মে পর্যন্ত চলার কথা ছিল। পরীক্ষা স্থগিত ঘোষণা করার পর এখন সব কিছুই অনিশ্চিত হয়ে গেছে।
পরীক্ষা স্থগিত করার আগে এ পরীক্ষার কেন্দ্রসচিবদের মতবিনিময়, প্রবেশপত্র বিতরণ ও উত্তরপত্র বিতরণও স্থগিত করা হয়। পরীক্ষা নেওয়ার উত্তরপত্রসহ অন্যান্য সরঞ্জাম বিতরণ কার্যক্রম স্থগিত করে ২৩ মার্চ নোটিশ জারি করে সবগুলো শিক্ষা বোর্ড। পরীক্ষা নেওয়ার অত্যবশকীয় এসব সরঞ্জাম ২২ থেকে ২৪ মার্চ পর্যন্ত বিতরণের কথা ছিল।তার আগে এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের প্রবেশপত্র বিতরণ কার্যক্রম আগামী ২৮ মার্চ পর্যন্ত স্থগিত করা হয়।
কলেজের অধ্যক্ষরা বলছেন, এইচএসসি পরীক্ষার সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সম্পর্ক রয়েছে। তাই সব ধরনের স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করে পরীক্ষা নেওয়া যেতে পারে। পরীক্ষার্থীদের কেন্দ্রে ঢুকতে এবং বের হওয়ার সময় সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে হবে। কেন্দ্রের সংখ্যা কয়েক গুণ বাড়াতে হবে।
শিক্ষাবোর্ড সূত্র জানায়, ‘জেড’ আকৃতিতে শিক্ষার্থীদের বসিয়ে পরীক্ষা নিলে কতগুলো শ্রেণিকক্ষ প্রয়োজন হতে পারে সে ব্যাপারে কাজ করছে শিক্ষা বোর্ডগুলো। এতে একটি কক্ষে প্রথম বেঞ্চে দু’জন শিক্ষার্থী বসলে দ্বিতীয় বেঞ্চে বসবে একজন। এ জন্য প্রতিটি কেন্দ্রের অধীনে আবার একাধিক উপকেন্দ্রও নির্ধারণ করা হচ্ছে। অর্থাৎ শিক্ষা বোর্ডগুলোও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে পরীক্ষা গ্রহণের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে।