বেনাপোল কাস্টম হাউজের সাবেক কমিশনারসহ ৩২ কর্মকর্তাকে দুর্নীতির অভিযোগ থেকে দায়মুক্তি

নয়াবার্তা প্রতিবেদক : বেনাপোল কাস্টম হাউজের সাবেক কমিশনার মোহাম্মদ বেলাল হোসাইন চৌধুরী ও আজিজুর রহমানসহ ৩২ কাস্টমস কর্মকর্তারকে দুর্নীতির অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অভিযোগ থেকে অব্যাহতিপ্রাপ্তরা সবাই যশোরের বেনাপোল কাস্টম হাউজে বিভিন্ন মেয়াদে কর্মরত ছিলেন। ২০২১ সালের ৭ নভেম্বর তাদের বিরুদ্ধে মামলা করে বেনাপোলের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট মেসার্স সাগর এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী আকবর আলী।

যশোরের সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতের নির্দেশনায় ২০২২ সালের ১০ মার্চ তদন্ত শুরু করে দুদক। দীর্ঘ প্রায় এক বছরের তদন্ত শেষে ২০২৩ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি সব আসামিকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দিয়ে আদালতে প্রতিবেদন দখিল করে যশোরের দুদক অফিস। যা পরবর্তী সময়ে ওই বছরেই কমিশনের অনুমোদন দেয় এবং সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে শুনানি শেষে আসামিদের মামলার অভিযোগের দায় থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

সম্প্রতি ‍দুদক থেকে দেওয়া মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে এক চিঠির সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। চিঠিতে দুদক সচিব খোরশেদা ইয়াসমীন মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করেছেন।

অব্যাহতিপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- বেনাপোল কাস্টমসের সাবেক কমিশনার বেলাল হুসাইন চৌধুরী, সাবেক কমিশনার আজিজুর রহমান, অতিরিক্ত কমিশনার ড. নেয়ামুল ইসলাম, উপকমিশনার এসএম শামীমুর রহমান, বিল্লাল হোসেন, পারভেজ রেজা চৌধুরী, অনুপম চাকমা, সহকারী কমিশনার উত্তম চাকমা, দিপারাণী হালদার, মুর্শিদা খাতুন, এইচএম আহসানুল কবীর, রাজস্ব কর্মকর্তা স্বপন কুমার দাস, সাখাওয়াত হোসেন, এসএম আজিজুর রহমান ও এসএম বদিউজ্জামান, সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা (কার্গো শাখা) শামিম হুসাইন, কামাল হোসেন, নূরে আলম, নুর মোহাম্মদ, আনিসুর রহমান, মৃণাল কান্তি সরকার, জিএম আশরাফুল আলম, বিকাশ চন্দ্র মণ্ডল, মুহাম্মদ সাজেদুর রহমান ও এসএম মেসবাহ উদ্দিন, বেনাপোল বন্দরের তৎকালীন উপপরিচালক (ট্রাফিক) আবদুল জলিল, মামুন কবীর তরফদার, সাবেক সহকারী পরিচালক আতিকুর ইসলাম, লাকি বেগম, উপসহকারী পরিচালক (যান্ত্রিক) শিমরান হোসেন, ওয়্যার হাউসের সুপারিনটেনডেন্ড আবু রাসেল ও কম্পিউটার অপারেটর রনি কুমার বসাক।

ওই মামলার অভিযোগে বলা হয়েছিল— ঢাকার মিরপুরের সোহেল এন্টারপ্রাইজ ২০১৯ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর ১৩৮ প্যাকেট গার্মেন্টসহ অন্যান্য পণ্য আমদানি করে। আমদানি পণ্য ভারতীয় কাস্টম ৩ হাজার ২৭৯ দশমিক ৪০ কেজি ঘোষণা দিয়ে এ দেশে পাঠায়। এরপর সেটি বেনাপোল বন্দরের এক নম্বর শেডে রাখা হয়। আসামি সহকারী কমিশনার দিপা রাণী হালদারের নেতৃত্বে একটি টিম শেডে রাখা পণ্য পরীক্ষা করেন। সেখানে অতিরিক্ত কোনো পণ্য পাওয়া যায়নি। ওই বছরের ২৬ সেপ্টেম্বর কাস্টম কর্মকর্তা কোনো কিছু না জানিয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়। নোটিশের জবাব দেওয়ার পরও ৩ হাজার ৬৭২ কেজি পণ্য দেখিয়ে একটি প্রতিবেদন দিয়ে শুল্কায়নের প্রস্তাব করেন। এ ঘটনায় তৎকালীন কমিশনার বেলাল হুসাইন আমদানিকারককে মোট ৪ লাখ টাকা জরিমানা করেন। এরপর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট ও আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান চলতি বছরের ৫ আগস্ট পণ্য খালাসের আবেদন করেও পণ্য নিতে পারেনি।

একই সঙ্গে মেসার্স সাগর এন্টারপ্রাইজের সিঅ্যান্ডএফ লাইসেন্স বাতিল করেছেন। এর আগে আসামি নেয়ামুল ইসলাম পণ্য খালাসের কথা বলে ৩ লাখ টাকা গ্রহণ করেছেন। একই সঙ্গে লাইসেন্স অবমুক্ত করার জন্য ২ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন। আসামিরা দুর্নীতির মাধ্যমে লাভবান হতে পণ্য খালাসে বাধা ও লাইসেন্স বাতিল করে বাদীর আর্থিকভাবে ক্ষতি করেছেন।

Share